জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি যেন দেশের ইজারা নিয়েছে। তিনি বলেন, দুটি দলের আদর্শগত অমিল রয়েছে কিন্তু চরিত্রগত কোন অমিল নেই। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকলে এক ধরনের কথা বলে আর ক্ষমতার বাইরে গিয়ে অন্যরকম কথা বলে। বিরোধী দলে থাকলে নির্বাচনের সময় তত্বাবধায়ক সরকার চায় আর ক্ষমতায় গেলে বলে তত্বাবধায়ক সরকার প্রয়োজন নেই। ক্ষমতায় থাকলে দেশের দুর্নীতি, বিচার বর্হিভূত হত্যা আর গুম বিষয়ক আন্তর্জাতিক রিপোর্ট সম্পর্কে বলেন সবই ভূয়া আর বিরোধী দলে থাকলে বলে সব রিপোর্টই সঠিক। আবার ক্ষমতায় গিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি টেন্ডারবাজী, দলবাজী আর সাধারণ মানুষের সাথে বৈষম্য সৃষ্টি করে। ক্ষমতায় গিয়ে তারা রাজত্ব তৈরী করে, সাধারণ মানুষের প্রতি তাদের কোন খেয়াল থাকেনা। কোন ইস্যু পেলেই নাচে-গানে আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি করে কিন্তু সাধারণ মানুষের অবস্থা তারা বুঝতে চায়না।
আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে গাজীপুর মহানগর জাতীয় পার্টিতে মেজর (অবঃ) আলহাজ্জ মোঃ শাহ আলম জমাদার ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলম সরকার এর নেতৃত্বে কয়েকশো নেতা-কর্মী জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এর হাতে ফুল দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। এ সময় যোগ দেয়া নেতা-কর্মীদের স্বাগত জানিয়ে বক্তৃতা করেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, আগামী দিনে যদি রাজনীতি না টিকে তা হবে দুঃখজনক। রাজনীতি না টিকলে হয়তো রাজনৈতিক দল থাকবে, দলের নেতাও থাকবে কিন্তু গণমানুষের ভাগ্যের উন্নয়ণ হবে না। তিনি বলেন, দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি খুঁজছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জনগনের হাত থেকে দেশের মালিকানা লুট করেছে। তিনি বলেন, জণগন হচ্ছে দেশের প্রকৃত মালিক তারা যাদের নির্বাচিত করবেন তারাই কেয়ারটেকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু দেশের মানুষের মালিকানা নেই, তারা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারছে না। বৃটিশ আমলে দেশের টাকা লুট হয়ে লন্ডনে যেতো। পাকিস্তান আমলে দেশের টাকা লুট হয়ে ইসলামাবাদ যেতো। এখন দেশের টাকা লুট হয়ে বিভিন্ন দেশে যায়। শুধু মাত্র সুইস ব্যাংকে গেলো এক বছরে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। দুটি দল দেশের মানুষের সাথে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। এখন সরকারী দল না করলে চাকরি মেলে না, সরকারি দল না করলে ব্যবসা করা যায় না। এর ফলে একটি শ্রেনী ধনী থেকে আরো ধনী হচ্ছে আর সাধারণ মানুষ গরীব থেকে আরো গরীব হচ্ছে।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুটি দলই জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে মিথ্যে অপপ্রচার চালিয়েছে। দুটি দল দেশকে দুর্নীতিতে বিশ^ চ্যাম্পিয়ণ করেছে অথচ তারা বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নাকি দুর্নীতিবাজ। আবার জাতীয় পার্টির দেশ পরিচালনার সময় হয়তো রাজনৈতিক আটটি খুনের ঘটনা নেই অথচ এখন এক দিনের অসংখ্য খুনের ঘটনা ঘটে। যারা খুন ও গুমের সাথে জড়িত তারাই জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছে। তিনি বলেন, দেশের মানুষ এখন বুঝতে পেরেছে জাতীয় পার্টিই দেশের মানুষকে সুশাসন দিতে পারবে। আর এ কারনেই প্রতিদিন জাতীয় পার্টির পতাকাতলে যোগ দিচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। আমরা সাধারণ মানুষকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে রাজনীতি করছি। আমরা দেশের মানুষকে প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ উপহার দেবো।
আজ শনিবার বনানী কার্যালয়ের মিলনায়তনে মেজর অব. আলহাজ্ব মোঃ শাহ আলম জমাদার ও আলম সরকার-এর নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী গাজীপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও মাননীয় চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা এমএম নিয়াজ উদ্দিনের-এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোশাররফ হোসেন (কাউন্সিলর) এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, মোঃ শফিকুল ইসলাম সেন্টু, ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর আলম পাঠান। গাজীপুর নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোঃ হারুন অর রশীদ, আলফাজ উদ্দিন, জহির সরকার, হানিফ মাস্টার, আব্দুস সামাদ মিয়া, ইসরাফিল মিয়া, বারী মাস্টার, সেলিম পাঠান, সাইফুল আলম সরকার, ওমর ফারুক, বাহারুল ইসলাম ইউনুস, সাইফুল ইসলাম খান, মোঃ মাসুদ ভূঁইয়া, জসীম উদ্দিন, নাসির উদ্দিন তালুকদার, মাওলানা মোঃ রফিকুল ইসলাম, মাওলানা মোঃ জয়নুল আবেদীন ফয়েজি, জসীম উদ্দিন, নাসির উদ্দিন তালুকদার, মনির হোসেন, মোঃ মাসুদ রানা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টির দফতর সম্পাদক-২ এম এ রাজ্জাক খান, যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম, গাজীপুর নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মোঃ শওকত আলম, হাসান আলী, ওয়াজ উদ্দিন, আমিরুল ইসলাম, সেকেন্দার মিয়া, মোক্তার হোসেন, বাবুল মিয়া, রফিকুল ইসলাম, আলী আকবর, মুজিবুর রহমান, নাসির উদ্দিন, আব্দুল হালিম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।