মধুমাসের ভিতরেই প্রকৃতিতে এলো বর্ষাকাল। এখনো মধুমাসের নানান ফলের সমাহার বাজার জুড়ে। এর ভিতরে যোগ হয়েছে টকমিষ্টি লটকন। ছোট গোলাকার এই ফলটি বর্ষা মৌসুমে আষাঢ়ের মাঝামাঝি থেকে শ্রাবনের শেষ পর্যন্ত ফল বাজারে তুলনামূলক বেশি বিক্রি হতে দেখা যায়। প্রতিদিনই নতুন নতুন ফলের পসরা সাজিয়ে বসছে নগরীর বাজারগুলোতে। আর এসব ফলে আকৃষ্ট করছে ক্রেতাদের। ব্যস্ত সময় পার করছেন সিজনাল ফল ব্যবসায়ীরাও। তবে নতুন অবস্থায় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এসব মৌসুমী ফলগুলো।
বর্ষার শুরুতেই বাজারে দেখা যাচ্ছে মৌসুমী ফল লটকন। বর্ষা এলেই মনে পড়ে লটকনের কথা। টকমিষ্টি এই ফলটি মানুষের কাছে খুব প্রিয়। বর্ষার মৌসুমে শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হতে দেখা যায় এ ফলটি। তেমনি শ্যামলী মোড় ফল মাকের্ট এলাকায় লটকন বিক্রি করছে বিক্রেতা গোলাম মোস্তফা। মানুষের চাহিদারও কমতি নেই এ ফলটির। শুধু শ্যামলী মোড় নয় বর্ষার এ সিজনে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ভ্যানে করে বিক্রি করতে দেখা যায় এ জনপ্রিয় ফলটি।
ফল ব্যবসায়ী মো. সাইফুল বলেন, ফলটি বর্ষা মৌসুমের আজই বাজারে আসছে তাই দাম একটু বেশি। কেজি হিসেবে বিক্রি করছি। আমরা নিউ মার্কেট স্টেশন রোড থেকে কেজি ১৩০ টাকায় কিনে আনছি। আর বিক্রি করছি ১৫০ টাকায়। এটি পাহাড়ি ফল। আমাদের এখানে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান থেকে আসে। শহরে ফলটির বেশ চাহিদাও রয়েছে। আমি প্রতি সিজনেই ফলের ব্যবসা পরিবর্তন করি। যখন যে ফলের সিজন সেই ফলই বিক্রি করি। এতো দিন লিচু, আম বিক্রি করেছি এখন এরসাথে নতুন করে যোগ হলো লটকন।
এক সময় লটকন অপ্রচলিত ফল হিসেবে থাকলেও বর্তমানে মানুষের কাছে এর চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ শুরু হয়েছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জেলায় এফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে। চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে এর প্রচুর চাষ হচ্ছে। দেশের নরসিংদী জেলাতে সবচেয়ে বেশি এ ফলের চাষ হয়। এ ছাড়াও বর্তমানে সিলেট, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও গাজীপুর জেলাতেও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে লটকনের চাষ হচ্ছে। সম্প্রতি বিদেশেও ফলটি রফতানি করা হচ্ছে।
টকমিষ্টি লটকন
ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘ বি’ রয়েছে। এছাড়া এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’ এবং আমিষ, লৌহ, খনিজ পদার্থ। লটকন খেলে সহজেই বমি বমি ভাব দূর হয়। মুখের রুচি বাড়িয়ে দেয়। এটি মানসিক চাপ কমিয়ে আনতে সাহায্য করে।