ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

আলোকিত হলো পুরো পদ্মা সেতু : একযোগে ৪১৫ বাতির ঝিলিক

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: বুধবার, জুন ১৫, ২০২২

আলোকিত হলো পুরো পদ্মা সেতু : একযোগে ৪১৫ বাতির ঝিলিক
আলোকিত হলো পুরো পদ্মা সেতু। রাতের পদ্মায়  আলোর ঝলকানি। প্রথমবার  একযোগে সেতুর সব স্ট্রিট লাইটই আলো ছড়াচ্ছে।  তাই উদ্বলিত পদ্মা পারের মানুষ।

মাওয়া থেকে জাজিরা পর্যন্ত বিশাল পদ্মার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত জুড়ে হঠাৎ আলোর ঝলকানিতে আলোকিত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। উদ্বোধনের আগেই সেতু আলোকিত হওয়ায় উচ্ছ্বসিত পদ্মা পারের মানুষ।

এর আগে সোমবার মাওয়া প্রান্ত থেকে পদ্মা সেতুর ২০৫টি বাতি একযোগে আলোকিত করে। আর মঙ্গলবার সন্ধ্যা শুরুর আগেই জাজিরা প্রান্তের সাব স্টেশনের আওতায় থাকা ২১০ বাতিসহ সব বাতি জ্বলে উঠে। 

তবে চোখ ধাঁধানো পদ্মা সেতুর আর্কিটেকচারাল লাইট স্থাপন  হবে উদ্বোধনের পর। পদ্মা সেতু যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার পাশাপাশি পদ্মা পারের মানুষের মাঝে ছড়াবে আলোর দুত্যি। সড়কপথের লাইটিং রাতের বেলায় সেতুকে দিনের মতো আলোকিত রাখবে। 

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ল্যা¤পপোস্টে বাতিগুলো সেট করার পর ধাপে ধাপে পরীক্ষা করা হয়। পুরো সেতুতে আটটি সার্কিট প্যানেল রয়েছে। এর মধ্যে মূল সার্কিট চারটি ও সাব সার্কিট চারটি। প্রথম দিন ২৪ টি বাতি জালানো হয়। এর পর ধাপে ধাপে পরীক্ষা চলে।  গত ৪ জুন থেকে সেতুর ৪১৫ বাতির সফল পরীক্ষা সপন্ন হয় শুক্রবার। ল্যাম্পপোস্ট এবং বাতিগুলো ঘন্টায় ২০০ কিলোমিটার বেগের বাতাস সহ্য করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে। দিনের বেলায় মেঘলা আকাশ বা ঘনকুয়াশায় আলো স্বল্পতায় অটো জলবে বাতিগুলো। 

প্রথম দফায় ১১ জুন পর্যন্ত সব বাতি পরীক্ষামূলক জ্বালানো হয় জেনারেটরের মাধ্যমে। এই প্রথম জালানো হলো বিদ্যুতে। একযোগে সব বাতি সফলভাবে জালানোর পরই চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষা সম্পন্ন হবে। ১৭৫ ওয়ার্ডের বাতিগুলো ২০ বছর পর্যন্ত উজ্জ্বল আলো দেয়ার কথা রয়েছে।

৭৫ ওয়াটের প্রতিটি এলইডি  লাইটের একটি থেকে আরেকটির দূরত্ব সাড়ে ৩৭ মিটার। সহ্য করতে পারবে ঘন্টায় ২শ' কিলোমিটার বাতাসের গতি। মূল সেতুতে ৩শ ২৮টি এবং দুই প্রান্তের সংযোগ সেতুতে ৮৭টি লাইট রয়েছে।

২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুর ভায়াডাক্টে প্রথম ল্যাপপোস্ট বসানোর কাজ শুরু হয়। মূল সেতুতে ৩২৮, জাজিরা প্রান্তের ভায়াডাক্টে ৪৬, মাওয়া প্রান্তের ভায়াডাক্টের ল্যা¤পপোস্ট ৪১ বাতি স্থাপন করা হয়েছে। 

২৪ মে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৪২ নম্বর খুঁটির কাছে সেতুর সাবস্টেশনে  ও মাওয়া প্রান্তের এক নম্বর খুঁটির কাছে  বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হয়। শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতি থেকে জাজিরা প্রান্তে ৮০ কিলোওয়াট ও মুন্সীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিতি  মাওয়া প্রান্তে ৮০ কিলোওয়াট বিদ্যুতের অস্থায়ীসাব স্টেশন। তবে স্থায়ী সাব স্টেশনের কাজ এগিয়ে চলেছে। 

২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন। ২৬ জুন সকাল ৬ টা থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে স্বপ্নের দুয়ার উন্মোচিত হতে চলেছে। 

ষ্ট্রিট লাইটের বাইরে আর্কিটেকচারাল লাইটও থাকবে। এই আলো জ্বলবে বিশেষ দিনে। এই ঝলকানি শুধু পদ্মা পাড়ের মানুষকেই নয় আকৃষ্ট করবে পর্যটকদেরও।  আর অবকাঠামোর কাজ শেষে  উদ্বোধনের পরই স্থাপন করা হবে এই চোখ ধাঁধানো লাইটিং ব্যবস্থা।

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকৌশলী সাদ্দাম হোসেন জানান, এখানে বজ্রপাতের নিরোধক ব্যবস্থা রয়েছে।  প্রতিটি বাতিতে দুইটি করে ড্রাইভ রয়েছে। দুপাড়ে সংযোগ সেতুসহ ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার দীর্ঘ পুরো সেতু জুড়ে চারশ ১৫টি বাতি জ্বলে ওঠায় এখন আলোর ঝিলিক।