কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। ফলে তিস্তার বাম তীরের লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।
রোববার (১২ জুন) দুপুর ১২টার দিকে দেশের বৃহত্তম সেচপ্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ব্যারেজ ও নদী তীরবর্তী মানুষ জানান, গত সপ্তাহ থেকে থেমে থেমে ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে গত মাসের শুকনো মরুময় তিস্তার পানিতে ফুলে ফেঁপে উঠেছে। ফিরে পেয়েছে তিস্তা তার আপন সৌন্দর্য। নৌকা আর মাঝি মাল্লাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। জেলেরাও প্রায় ফিরে পেয়েছে তিস্তার পানি আর মাছ।
পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে লালমনিরহাট জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অতিরিক্ত পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের সবগুলো জলকপাট খুলে দিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ। ভারতের গজলডোবায় তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় উজানের ঢেউ বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে পানি বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ভারী বৃষ্টির কারণে জেলার ছোট ছোট নদী ও খাল ভরেছে পানিতে। চারদিকে শুধু পানি আর পানি।
নদীপাড়ের মানুষজন জানায়, পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা জানান, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এ পয়েন্টে তিস্তার পানি এখনও বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে বৃষ্টির কারণে এ সময় পানি প্রবাহ কমা- বাড়ার মধ্যেই থাকবে।