ছাত্রদের হয়রানি করা বন্ধ করে কলেজ বৈদ্যপাড়া সংলগ্ন পকেট গেট ও অশ্বিনী কুমার দত্ত ডিগ্রি হলের পিছনের গেট খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে আজ ৬ জুন ব্রজমোহন কলেজ জুড়ে পোষ্টারিং করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বিএম কলেজ ইউনিট।
একই দাবিতে গত ০৩ জুন ২০২২ শুক্রবার প্রেস বিবৃতি দিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, সরকারি ব্রজমোহন কলেজ শাখা।
সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজুর রহমান রাকিব ও সদস্য বিজন সিকদার এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন যে সরকারি ব্রজমোহন কলেজের পিছনে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত ডিগ্রি হল গেট ও বৈদ্যপাড়া সংলগ্ন শিক্ষক কোয়ার্টারের গেটসহ ২টি পকেট গেট দীর্ঘদিন ধরে হাজার হাজার শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক-কর্মচারীরা ব্যবহার করে আসছে। কিন্তু হঠাৎ করেই গত ২৮ মে নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে কলেজ প্রশাসন এই পকেট গেট ২টি দেয়াল তুলে বন্ধ করে দেয়। বৈদ্যপাড়া, গোরস্তান রোড, কলেজ রো, কলেজ এভিনিউ, কাজিপাড়া এলাকায় অবস্থানরত শিক্ষক শিক্ষার্থীরা এই গেটদ্বয় থেকে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, কলেজের ২৮ সহস্রাধিক শিক্ষার্থীদের বিপরীতে হলে সিট আছে মাত্র ১৬৩০ টি যা খুবই নগন্য। ৯৪ শতাংশ শিক্ষার্থীদের মেসে থাকতে হয়। তাদের মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরাও বৈদ্যপাড়া, গোরস্তান রোড, কলেজ রো, কলেজ এভিনিউ, কাজিপাড়া এলাকায় থাকেন। কিন্তু হঠাৎ করে এই গেট ২টিতে দেয়াল তুলে দেয়ায় ভুক্তভোগীদের ১.৫ থেকে ২ কি.মি. ঘুরে কলেজে আসতে হচ্ছে। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সময়, শ্রম এবং অর্থ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, হলের শিক্ষার্থীরা খুব সহজেই স্বল্পমূল্যে হলের পিছন থেকে খাবার সংগ্রহ করতে পারতেন। আবার হলের পেছনে যে সহস্রাধিক শিক্ষর্থীরা মেসে থাকেন তারা খুব সহজেই কলেজে প্রবেশ করতে পারতেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের এসকল বিষয় তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের এই হীন সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগের কবলে ফেলেছে। এখানে কলেজ প্রশাসন অজুহাত হিসেবে বহিরাগতদের কথা বলেছেন । নেতৃবৃন্দ বলেন বহিরাগতদের অপ্রীতিকর কর্মকাণ্ড ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের আশ্রয় প্রশ্রয়েই ঘটে যা এই গেট ২টি বন্ধ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর নিপীড়ন চালালেই সমাধান হবে না। ক্যাম্পাসে মাদক বা সন্ত্রাসজাতীয় অপ্রীতিকর ঘটনা বন্ধ করতে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিশ্চিত করা দরকার।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারি ব্রজমোহন কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত একটি বিভাগীয় খ্যাতিনামা কলেজ। একটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যা সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকায় চলে। সেই প্রতিষ্ঠানে সবার প্রবেশাধিকার রয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের সাধারণ মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে। অনেক খ্যাতিনামা মানুষ, অনেক কীর্তিমানদের বিদ্যাপিঠ এই কলেজ। এখানে সাধারণ মানুষ পরিদর্শন করবে, নতুন নতুন জ্ঞান অর্জন করবে এটা স্বাভাবিক। ক্যাম্পাসে অবস্থানরত সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কলেজ প্রশাসনের।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়। কলেজে পুকুরের সৌন্দর্য নষ্ট করে মাছ চাষ, পকেট গেট বন্ধ করে ডাইনিং ব্যবসার মধ্যে দিয়ে প্রশাসনের ব্যবসায়িক মানসিকতা প্রকাশ পেয়েছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, খাবারের মান এবং মূল্য ঠিক থাকলে শিক্ষার্থীরা এমনিতেই ডাইনিংয়ে খাবে। এজন্য কলেজ প্রশাসন গেট বন্ধ করে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষদের বিপাকে ফেলতে পারে না। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ এর তীব্র নিন্দা জানান এবং অবিলম্বে গেট ২টি খুলে দেয়ার আহবান জানান।