কামরুল ইসলাম মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। প্রকৌশল বিদ্যায় পড়াশোনার পাশাপাশি রপ্ত করেছেন বাঁশি বাজানো। শিখেছেন বাঁশি তৈরির কলাকৌশল। তাঁর তৈরি বাঁশি দেশের সীমানা পেরিয়ে ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিক্রি হচ্ছে। তিনি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বাঁশি বাজানো শেখার জন্য টিউটোরিয়াল ভিডিও বানিয়ে পোস্ট করেন। কামরুল ইসলাম পিরোজপুর পৌরসভার দক্ষিণ নামাজপুর মহল্লার বাসিন্দা।
টিউটোরিয়াল দেখে অনেকে অনলাইনে কামরুলের বাঁশি বাজানো শেখেন। কেউ আবার বাঁশি কেনার জন্য অডার করেন। কুরিয়ার করে দেশ ও দেশের বাহিরে পাঠানো হয়। বাঁশি বিক্রি করে আর শিখিয়ে কামরুল বাড়িতে বসে আয় করছেন মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা।
২০১২ সালে খুলনায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সময় স্থানীয় বাউল শিক্ষা নিকেতনে ভর্তি হন। ওই সময় ওস্তাদ নিখিল কৃষ্ণ মজুমদারের বাঁশির সুর শুনে মুগ্ধ হন। এরপর নিখিল কৃষ্ণ মজুমদারের কাছে বাঁশি বাজানো শেখা শুরু করেন। নিখিল কৃষ্ণ মজুমদার বাঁশি বাজানো শেখার পাশাপাশি বাঁশি বানানোর পদ্ধতি শেখান কামরুলকে।
কামরুল ইসলাম বলেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষে করে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংএ স্নাতক শেষ করেছেন। মূলত বাঁশি বাজানো ও বানানো তাঁর নেশা। এখন চাকরির জন্য চেষ্টা করছেন। তবে চাকরির পাশাপাশি বাঁশি বাজানো ও তৈরির কাজ চালিয়ে যাবার ইচ্ছে আছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তিনি বাঁশি বিক্রির অডার পান। এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইরাক, কাতার ও বেলজিয়ামসহ ১২টি দেশে বাঙালিদের কাছে বাঁশি বিক্রি করেছেন। ২০১৫ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্টেজ এ বাঁশি বাজাচ্ছেন। রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমীরর নন্দন মঞ্চে দুইবার অনুষ্ঠানে বাঁশি বাজিয়েছেন। সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছ থেকে পেয়েছেন সনদ।
কামরুল আরো বলেন,কুমিল্লার হোমনা থেকে বাঁশি তৈরির বাঁশ সংগ্রহ করি। এরপর অনেকদিন ধরে বাঁসগুলো সিজনিং করে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাঁশি তৈরির জন্য প্রস্তুত করেন। এরপর বাঁশি তৈরির টিউনিং, বাঁশির পলিশিং এবং সুতা বাঁধার কাজ করে থাকে। একটি বাঁশি তৈরির জন্য অনেক সময় দিতে হয়। ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা দামের বাঁশি বিক্রি করে থাকেন। বাঁশি বিক্রি ও বাঁশি বাজানো শিখিয়ে আমার মাসে ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার পর্যন্ত আয় হচ্ছে।
কামরুল ইসলামের ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করা টিউটোরিয়াল ভিডিও দেখে বাঁশি বাজানো শিখছেন অনেকে। তবে কামরুল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এস্নাতক পাস করেছে। তাই পেশা হিসেবে ইঞ্জিনিয়ারিংকে বেছে নিতে চান তিনি। পাশাপাশি বাঁশি নিয়েও কাজ করার ইচ্ছে আছে তার।