ঢাকা কলেজের তিন ছাত্রের বিরুদ্ধে টাকা না দিয়ে পাঞ্জাবি নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দোকানের সিসি ক্যামেরায় তাদের চিহ্নিত করা গেলেও বিচার পাবেন না ভেবে অভিযোগ জানাতে চান না ব্যবসায়ীরা।
নিউমার্কেটে সংঘর্ষ শেষে গত বুধবার (২০ এপ্রিল) সাইন্স ল্যাব এলাকায় কিছু দোকান খুললে একটি দোকান থেকে ঢাকা কলেজের তিন ছাত্র টাকা না দিয়ে আটটি পাঞ্জাবি নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, দুই দিনের সংঘর্ষের পর বুধবার বিকেলে নিউমার্কেট ও সাইন্স ল্যাব এলাকায় অল্প কিছু দোকান খুলেছিল ব্যবসায়ীরা। থমথমে সেই পরিস্থিতির মধ্যেও সাইন্স ল্যাবের বাইতুল মামুর মসজিদ মার্কেটে একই মালিকের দুটি দোকানে যায় ঢাকা কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় আট জনকে দোকানে ঢুকতে দেখা যায়।
সায়েন্স ল্যাবের রেশম ঘর দোকানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হালিম বলেন, দোকানে আসা ওই ছাত্ররা আটটি পাঞ্জাবি নিয়ে যান, তবে কেউ টাকা দেননি। এ সময় তাদের কাছে টাকা চাইলে তার আসছি বলে চলে যান। কিন্তু পরে টাকা দিতে আর কেউ আসেননি।
এদিকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ছবি ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে তারা সবাই ঢাকা কলেজের ছাত্র। এদের একজন অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র মোহাম্মদ আলী। তিনি থাকেন আখতারুজ্জামান ইলিয়াস হলে।
এ ব্যাপারে একাত্তরের কথা হয় মোহাম্মাদ আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, আগে নেয়া পাঞ্জাবি পাল্টাতে গিয়েছিলেন।
মোহাম্মদ আলী স্বীকার করেন, তার সঙ্গে থাকা একজন একটি পাঞ্জাবি নিয়ে এসেছিল। কিন্তু পরে ফেরত দিয়েছে।
সিসি টিভি ফুটেজে শনাক্ত করা হয় লাল টি-শার্ট পরা শাহরিয়ার হাসনাত জিওন ও হৃদয় নামে দুই যুবককে।
হৃদয়কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি পাঞ্জাবি নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ফেরত দিয়ে দেবেন।
দলবেঁধে ওই দোকানে গিয়েছিলেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মাদ আলীর দাবি, তিনি ওই দোকানে গিয়ে অন্যদের দেখেছেন।
তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এই দলে রফিকুল ইসলাম নামে একজন আছেন। আর হৃদয় নামে আছেন দুই জন। একজনের নাম প্রিতম হৃদয়। অন্যজন মহসিন উদ্দিন হৃদয়।
দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, এমন কিছু ছাত্র আছেন যাদের প্রায় সবাই একই পদ্ধতি অনুসরণ করেন। তারা দোকানে গিয়ে কিছু একটা নিয়ে ১০০ টাকা দিয়ে বলেন বাকিটা পরে দিয়ে যাচ্ছি। থানায় গেলেই যে এর প্রতিকার পাওয়া যাবে ব্যাপারটা এরকম না। সেক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা লোকসান মেনে নিয়েই ব্যবসা করেন।
ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. আব্দুল কুদ্দুস সিকদার বলেন, এমন গুটি কয় শিক্ষার্থীর জন্য পুরো প্রতিষ্ঠানের বদনাম হোক তা আমরা চাই না। যদি এমন অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে প্রশাসনের পদক্ষেপে আমরা কোনো আপত্তি করবো না।
এদিকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দোকান মালিকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ না পেলেও তারা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছেন।