ফ্রিডম বাংলা নিউজ

মঙ্গলবার, নভেম্বর ৫, ২০২৪ |

EN

পুতিনের ‘বিশ্ব সেরা’ পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র সারমাত পাল্টে দিতে পারে শক্তির ভারসাম্য?

বিশ্ব বাংলা ডেস্ক | আপডেট: শুক্রবার, এপ্রিল ২২, ২০২২

পুতিনের ‘বিশ্ব সেরা’ পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র সারমাত পাল্টে দিতে পারে শক্তির ভারসাম্য?

ছবি: বিবিসি

রাশিয়া বুধবার সারমাত নামের পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই ক্ষেপণাস্ত্রকে বিশ্বের সবচেয়ে সেরা হিসেবে অভিহিত করেছেন। ওই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর পুতিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, রাশিয়াকে যারা হুমকি দেয় এখন থেকে সেই শত্রুদের দ্বিতীয়বার চিন্তা করতে হবে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটির সফল পরীক্ষার পর ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, সারমাত বিশ্বের যেকোনো ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পরাস্ত করতে সক্ষম।

পুতিনের ভাষায়, এই ক্ষেপণাস্ত্রের সমকক্ষ আর একটিও এখন পৃথিবীতে নেই এবং সামনের বহু বছরেও তা হবে না। এই ক্ষেপণাস্ত্র আসলেই একটি অদ্বিতীয় অস্ত্র। এটা রাশিয়ার যুদ্ধের সক্ষমতা অনেক শক্তিশালী করবে। যারা ক্ষিপ্তভাবে উগ্র ও আগ্রাসী কথাবার্তা বলে রাশিয়াকে হুমকি দেবার চেষ্টা করছে তাদের এখন থেকে দ্বিতীয়বার চিন্তা করতে হবে।

অনেক বছর ধরে চলছিল ক্ষেপণাস্ত্রটি তৈরির কাজ। বেশ কয়েকবার এর উৎক্ষেপণ পেছানোর পর ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার দুই মাসের প্রাক্কালে এটির সফল পরীক্ষা চালানো হলো।

সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণের মাধ্যমে রাশিয়া পেশি শক্তি প্রদর্শনের উপযুক্ত সময় বেছে নিয়েছে । অনেক বছর চেষ্টার পর ক্ষেপণাস্ত্রটির উৎক্ষেপণ রাশিয়ার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে জানিয়েছে, দেশটির উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত প্লেসেত্স্ক মহাকাশ বন্দর থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি পরীক্ষার জন্য উৎক্ষেপণ করা হয় ২০ এপ্রিল বিকেলে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি উৎক্ষেপণের পর আকাশে থাকা অবস্থায় পুরো সময় তার যেসব বৈশিষ্ট্য থাকার কথা সেই অনুযায়ী কাজ করেছে। ছয় হাজার কিলোমিটার দুরে কামচাটকা উপদ্বীপে গিয়ে সফলভাবে টার্গেটে আঘাত হেনেছে ক্ষেপণাস্ত্রটি।

ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণের বিভিন্ন দিক থেকে তোলা ভিডিও প্রকাশ করেছে রাশিয়া। 

বিবিসি নিউজে প্রকাশিত এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বিকট শব্দ করে মাটির নিচ থেকে বের হয়ে আসছে ক্ষেপণাস্ত্রটি। তীব্র বেগে আগুন ও ধোঁয়া বের হয়ে আসছে ক্ষেপণাস্ত্রটির নিচের অংশ থেকে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি চলার পথ পরিবর্তন করে তার লক্ষ্যে আঘাত করতে পারে। এটা উৎক্ষেপণ করতে যে যানটি সাহায্য করে সেটা শব্দের চেয়ে বেশি গতিতে চলে। এর ওয়ারহেডগুলো আলাদা আলাদা লক্ষে আঘাত হানতে পারে। এতে যে কটি ওয়ারহেড রয়েছে, যে গতিতে এটি যাত্রা করে তাতে সারমাত বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ক্ষেপণাস্ত্র। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দূরত্বে আঘাত হানতে সক্ষম। রাশিয়ার মিসাইল রেজিমেন্টকে নতুন এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সমৃদ্ধ করার কাজ চলমান।

বার্তা সংস্থা তাস এই ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্পর্কে বিস্তারিত প্রকাশ করেছে। প্রাচীন কালে রাশিয়া, ইউক্রেন এবং কাজাখস্তান অঞ্চলে বাস করা সারমাতিয়ান নামে একটি যাযাবর গোত্রের নামে এটির নামকরণ করা হয়েছে। ২০০০ সালে এই ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণের কাজ শুরু হয়। 

দফায় দফায় এর নকশা ও কৌশলও পরিবর্তন করা হয়। এটা তৈরির খরচও বেড়েছে অনেকবার। ২০১৪ সালে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন সারমাত দক্ষিণ থেকে উত্তর মেরু উড়ে যেতে সক্ষম।