রাজশাহীর পবায় ‘আমান কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেড’ নামের একটি হিমাগারে রাখা বেশিরভাগ আলু পচে গেছে। এতে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি কৃষকদের।
তবে হিমাগার কর্তৃপক্ষ বলছে, এখানে ১ লাখ ৯৬ হাজার বস্তা আলু আছে। যেসব আলু পচেছে সেগুলো আলাদা করা হচ্ছে। পরবর্তীতে পচে যাওয়া আলু পরিমাপ করে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুধবার (২০ এপ্রিল) সকালে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গুদামঘর থেকে আলুর বস্তা বের করে স্টোরেজের ভেতরেই বাতাস দেওয়া হচ্ছিল। তখনই কৃষকেরা আলু পচে যাওয়ার কথা জানতে পারেন। আলুতে পচন ধরার খবর ছড়িয়ে পড়লে হিমাগারের সামনে জড়ো থাকেন কৃষকরা। ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন তারা। হিমাগার কর্তৃপক্ষ ১০ দিনের মধ্যে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিলে শান্ত হন কৃষকরা।
কৃষকদের ভাষ্য, বস্তায় একটা আলু পচে যাওয়া মানেই সবগুলো নষ্ট হওয়া। এগুলো আর খাওয়ার উপযোগী থাকে না। এছাড়া ওই কোল্ড স্টোরেজের অধিকাংশ আলুই নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো আর খাওয়ার কিংবা বেচার মতো অবস্থাতে নেই।
কৃষকদের অভিযোগ, যে বস্তা খোলা হচ্ছে, সেই বস্তা থেকেই বের হচ্ছে পচা আলু। হিমাগারের গ্যাস মেশিন খারাপ থাকার পরও আলু লোড করা হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে দুর্বল মেশিন ঠিকমতো গুদাম ঠান্ডা রাখতে পারেনি। এ কারণেই আমাদের আলু পচে গেছে। এগুলো আর বাজারে বিক্রি সম্ভব নয়।
আলু ব্যবসায়ী কামরুল হাসান বলেন, ‘আমি মার্চের দিকে সাত হাজার বস্তা আলু রেখেছিলাম। এখন জানলাম আমার সব আলু পচে গেছে। ক্ষতিপূরণ না দিলে আমি পথে বসে যাবো।’
রাজশাহীর মহানগরের রানা সরদার নামের এক সবজি ব্যবসায়ী বলেন, ‘গত বছর আমি এই কোল্ড স্টোরেজে আলু রেখেছিলাম। বাজারে আলু বিক্রির পর ক্রেতারা অভিযোগ দিতে থাকেন। তাই এবার সব আলু আমান কোল্ড স্টোরেজে না রেখে অন্য হিমাগারে রেখেছি। শুধু একটা ট্রলি ভুল করে আমানে ঢুকে পড়েছিল। সেখানে ৫৭ বস্তা আলু ছিল। ওই ৫৭ বস্তার সবই পচে গেছে।’
এ বিষয়ে হিমাগারের ব্যবস্থাপক ফারুক হোসেন বলেন, ‘আলু নানা কারণেই পচতে পারে। আলুর মান খারাপ হলেও পচে যায়। তবে কেন পচেছে তা জানি না।’
চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মালিকের এটা এক দিনের ব্যবসা না। কীভাবে কী করা যায় তা তিনি ভালো বুঝবেন। কৃষকদের তিনি কথা দিয়েছেন। নিশ্চয় এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে বসে সমস্যা সমাধান করবেন।’