খন্দকার মোশতাক আহমদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক রহমত উল্লাহকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
বুধবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সভায় উপস্থিত এক সিন্ডিকেট সদস্য।
এর আগে গত ১৭ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় মুজিবনগর সরকারের অন্যান্য নেতার পাশাপাশি মোশতাকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বক্তব্য দেন রহমত উল্লাহ। এ নিয়ে ব্যাপক সামালোচনা শুরু হয়।
এদিকে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনায় অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
বুধবার (২০ এপ্রিল) সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এ বিবৃতিতে বলা হয়, ১৭ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনায় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ মুজিবনগর সরকারের অন্যান্য নেতার পাশাপাশি খুনি মোশতাকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে যে বক্তব্য দিয়েছেন সে বিষয়ে শিক্ষক সমিতি কার্যকর পরিষদ ১৯ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় এক জরুরি সভায় মিলিত হয়ে এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানায় এবং এই বক্তব্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে। অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহর এ বক্তব্য তার ব্যক্তিগত, শিক্ষক সমিতির নয়।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতি অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহর কাছে ব্যাখ্যা দাবি করে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার বক্তব্যে মুজিবনগর মন্ত্রী পরিষদের সব সদস্যের নামের সঙ্গে মোশতাকের নামও উল্লেখ করে মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিপরিষদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। একই বক্তব্যে তিনি খন্দকার মোশতাকের প্রতি তার ব্যক্তিগত ঘৃণা এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলেও সভায় অবহিত করেন। তিনি মোশতাকের নাম উল্লেখ করায় সমিতির সভায় দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
সমিতির অবস্থান স্পষ্ট করে এতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি মনে করে, জাতির ইতিহাসের চরম বিশ্বাসঘাতক, কুলাঙ্গার ও ষড়যন্ত্রকারী মোশতাকের নামে শ্রদ্ধা নিবেদনের বিষয়টি অগ্রহণযোগ্য ও অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই ব্যক্তি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবার এবং জাতীয় চার নেতার খুনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী সব অপকর্মের সঙ্গেও সম্পৃক্ত। সুতরাং, ঘৃণা প্রকাশ ব্যতীত অন্য কোনোভাবে তার নাম উচ্চারণ করার কোনো অবকাশ নেই বলে শিক্ষক সমিতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।