ছিলো না এক চিলতে মাথা গোঁজার ঠাঁই, ছিলো না ঘুমানোর ঘর। সেই স্মৃতিকে পেছনে ফেলে আগামী মে মাসে ৪০০টি পরিবার পাচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর।
'মুজিববর্ষে কেউ গৃহ ও ভূমিহীন থাকবে না'- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ঘোষনা বাস্তবায়নে 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার' হিসেবে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে এরই মধ্যে ২ শতাংশ জমির সঙ্গে ঘর পাচ্ছেন সারা দেশের ভূমি ও গৃহহীন মানুষ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের মনকাশাইর গ্রামে ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য দেশের সবচেয়ে বড় আশ্রয়ণ প্রকল্পটি গড়ে উঠছে। কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা এই প্রকল্পে একসঙ্গে তৈরি করা হচ্ছে ৪ শতাধিক দৃষ্টিনন্দন ঘর।
সরেজমিনে মনকাশাইরের সেই প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি ভাবে তৈরি হচ্ছে গৃহহীনদের জন্য ঘর। দিনরাত কাজ করছেন শ্রমিকরা। উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ১২.৩৫ একর সরকারি খাস জমিতে ৪ শতাধিক পরিবারের জন্য ঘরগুলো নির্মিত হচ্ছে। দৃষ্টিনন্দন রঙিন টিনের দুই কামরার সেমিপাকা ঘর, বারান্দা, রান্নাঘর ও শৌচাগার নির্মিত হচ্ছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে দুই লাখ ৫৯ হাজার ৫০০টাকা। আলাদা ৪ হাজার টাকা মালামাল পরিবহন খরচ ধরা হয়েছে। সব ঠিক থাকলে আগামী মে মাসে উদ্বোধন হবে এই প্রকল্প।
জানা গিয়েছে, ৪ শতাধিক ঘরের মধ্যে ১৮০ টি ঘর পাচ্ছে খাড়েরা ইউনিয়ন এর ভূমি ও গৃহহীনরা, এছাড়া বাকি ঘরগুলো পাবে কসবা উপজেলাধীন অন্যান্য ইউনিয়নের ভূমি ও গৃহহীনরা।
এই বিষয়ে কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল আলম বলেন, দেশের সবচেয়ে বৃহৎ এই আশ্রয়ণ প্রকল্পটি অন্যগুলোর চেয়ে ভিন্ন। কারণ এই প্রকল্পে ৪ শতাধিক পরিবারের জন্য থাকছে আলাদা বাজার, স্কুল, খেলার মাঠ, মসজিদ-মন্দির, কবরস্থান ও পুকুর। আশ্রয়ণ প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার পর ঘরের চালগুলো ওপর থেকে জাতীয় পতাকার মতো দেখা যাবে। প্রকল্পটির ঘরগুলো যাদের জমি-ঘর কিছুই নেই তাদের বরাদ্দ দেওয়া হবে। আর এই প্রক্রিয়াটি হবে লটারির মাধ্যমে।
মাসুদুল আলম বলেন, নীলফামারী জেলা থেকে এই প্রকল্পের শ্রমিক নিয়োগ করা হচ্ছে। সাড়ে ৩ শতাধিক শ্রমিক রাত-দিন কাজ করছেন। প্রকল্পের সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নিচ্ছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মাননীয় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি এখানে জনসভা করেছেন। যারা ঘর বরাদ্দ পাচ্ছেন তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রকল্প কার্যালয় থেকে কর্মকর্তারা এসে পরিদর্শন করে গেছেন। জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত আসছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ উল আলম আরও বলেন, বর্তমান বাজারে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে চলেছে। কিন্তু আশার কথা হলো আমরা এই প্রকল্পের সকল মালামাল আগেই একসঙ্গে ক্রয় করেছিলাম, তাই এর প্রভাব এই প্রকল্পে পড়েনি। প্রতিটি নির্মাণ সামগ্রী আমরা গুণগত মান বাছাই করে ক্রয় করেছি। দ্রুতগতিতে কাজ চলায় আগামী মে মাস নাগাদ দেশের বৃহৎ এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ শেষ করে ঘরগুলো গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তর করতে পারবো।