গায়েহলুদের অনুষ্ঠানে যাওয়া হবে না বন্ধুদের, তাই ক্যাম্পাসেই বান্ধবীর গায়েহলুদের অনুষ্ঠানে মেতে উঠেন কনের সহপাঠীরা। দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে হয়ে গেল এমনই এক আনন্দময় মুহূর্ত।
নেপালের মেয়ে সৃজানা হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি অনুষদে এ বছর অনার্স সম্পন্ন করেন। গত শুক্রবার ক্যাম্পাসের কৃষি বনায়ন রিসার্চ ফিল্ডের পাশে বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে সৃজানার গায়েহলুদের আয়োজন করেন কৃষি অনুষদের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয়েছিল কনের আইবুড়ো ভাত, কনেকে আলতা দেওয়া এবং সবশেষ গায়েহলুদ দেওয়া।
হাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে শুক্রবার এ হলুদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও পরবর্তীতে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
গায়েহলুদ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কৃষি অনুষদের সহকারী অধ্যাপক সুব্রত কুমার প্রামাণিক, ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স অনুষদের সহকারী অধ্যাপক মাসুমা পারভেজ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নেপালি শিক্ষার্থীরা।
সৃজানার সহপাঠী সিয়াম-উল-হক রাসেল জানান, নেপালে সাধারণত বাঙালিদের মতো গায়েহলুদ হয় না, তাই সৃজানার খুব ইচ্ছা ছিল আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির মতো আমরা যেন ওর গায়েহলুদের আয়োজন করি। ঈদের ছুটিতে আমাদের বান্ধবীর বিয়ে। আমাদের পক্ষে নেপালে সৃজানার বাসায় যাওয়া সম্ভব নয়। তাই প্রিয় বান্ধবীর গায়েহলুদের আয়োজন করেছি নিজেরাই। নুসরাত নওরীন অর্পা, সুমাইয়া বিন্থি, আফসানা মুবাশ্বেরা সূচনাসহ বন্ধু-বান্ধবীরা মিলে এ আয়োজন করেছি।
সৃজানার আরেক বান্ধবী নুসরাত নওরীন অর্পা বলেন, ক্যাম্পাস জীবন শেষে কে কোথায় থাকব সেটা বলা যাচ্ছে না। কারো বিয়েতে যাওয়ার সৌভাগ্য হবে কিনা ঠিক নেই। সৃজানার বাসায় যাওয়া আমাদের পক্ষে আরও সম্ভব নয়। তাই বান্ধবীর গায়েহলুদের দিনটাকে স্মরণীয় করার চেষ্টা করা আরকি। আর সব মিলিয়ে অনেক ভালো লাগছে, যতটুকু আশা করিনি এর চেয়ে ভালো হয়েছে। ক্ষুদ্র পরিসরে আয়োজন হলেও অনেক ভালো একটা দিন কেটেছে।
কনে সৃজানা উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে জানান, নিজেকে খুবই সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে। আমি কখনই ভাবিনি যে আমার বন্ধু-বান্ধবীরা আমার গায়েহলুদের আয়োজন এভাবে করবে। আমাদের নেপালের সংস্কৃতি এমনটা নয়। বাংলাদেশি সংস্কৃতিতে এই গায়েহলুদ আমার জীবনে বিশেষ স্মৃতি হয়ে থাকবে।