রুশ বাহিনীকে দমাতে যুদ্ধের শুরু থেকেই পশ্চিমাদের কাছে বিভিন্ন সহায়তা চেয়ে আসছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। বেশ সহায়তা পেয়েও ছিলেন, কিন্তু যুদ্ধবিমানের জন্য যে অনুরোধ করেছিলেন, তা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।
আলজাজিরা ও বিসিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এক মাস পার হয়েছে। অথচ, শুরু থেকেই পশ্চিমাদের কাছে আধুনিক যুদ্ধবিমান চেয়ে আসছে জেলেনস্কি। কিন্তু এখনও সেই সহায়তা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জেলেনস্কি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করতে এই মুহূর্তে ন্যাটোর এক শতাংশ বিমান ও এক শতাংশ ট্যাংকের প্রয়োজন। এর বেশি চাইবে না। আমরা যুদ্ধ শুরু পর থেকে ৩১ দিন ধরে অপেক্ষা করছি। শুধু মেশিনগান দিয়ে তো আর রুশ বিমান ভূপাতিত করা যায় না।
শুধু তাই নয়, এ সময় ন্যাটোর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ন্যাটো কী করছে? এটা কি রাশিয়া চালাচ্ছে? তারা কার জন্য অপেক্ষা করছে?
উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ২০০৮ সাল থেকে আবেদন করে ইউক্রেন। মূলত, এ নিয়েই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তবে সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহারে চাপ প্রয়োগ করতে যুদ্ধ শুরুর দুই মাস আগ থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রাখে মস্কো। কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে না আসায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। ঠিক তার দুদিন পর ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে।
এ দিকে চলমান এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে ইউক্রেন ছেড়েছেন প্রায় ৩৯ লাখ মানুষ। যুদ্ধে ইউক্রেনের ১৩শ’ সেনা এবং রাশিয়ার ১৬ হাজার ৪০০ সৈন্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। তবে রাশিয়া বলছে, যুদ্ধে তাদের ১ হাজার ৩৫১ সেনা নিহত এবং ইউক্রেনের আড়াই হাজারের বেশি সেনা নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া জাতিসংঘ জানিয়েছে, রুশ অভিযানে ইউক্রেনের এক হাজার ৮০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। সূত্র : আলজাজিরা, বিবিসি