এবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দারুণ কিছু করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ কতটা মরিয়া, সেটি এরই মধ্যে প্রমাণ হয়েছে। ওয়ানডে সিরিজ তো জেতাই হয়েছে। বাংলাদেশ টেস্টেও যে ভালো করতে চায়, সেটি বোঝা গেল ওয়ানডে দলের সঙ্গেই শুধু টেস্ট দলের খেলোয়াড়দের উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া এবং কেপটাউনে তাঁদের বিশেষ ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা।
ওয়ানডে দলের বাইরে থাকা সাত ক্রিকেটারকে নিয়ে কেপটাউনের গ্যারি কারস্টেনের একাডেমিতে দারুণ সময় কাটিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটিং পরামর্শক জেমি সিডন্স। এ সময়ে বাংলাদেশের পেসারদের দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশনে কীভাবে ভালো করা যায়, সেই পরামর্শ দিয়েছেন প্রোটিয়া কিংবদন্তি কারস্টেন নিজেও।
ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর বাংলাদেশ দল আছে দুই দিনের বিশ্রামে। আগামীকাল অনুশীলন শুরু করবে তারা। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ইতিহাস গড়ে সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ দল টেস্টেও বিশেষ কিছু করে দেখাতে চায়। বাংলাদেশের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর সিডন্সের জন্য নতুন কিছু নয়। ২০০৮ সালে তাঁর অধীনে দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলেছিল বাংলাদেশ। ১৪ বছর আগের সফর আর এই সফরের সঙ্গে নিশ্চিত অনেক পার্থক্য খুঁজে পাচ্ছেন সিডন্স। কেপটাউনে ১০ দিনের অনুশীলন অভিজ্ঞতা নিয়ে সিডন্স আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘কেপটাউনে আমাদের (টেস্ট দলের) অনুশীলন ভালো হয়েছে। আমরা টেস্ট ম্যাচগুলোর জন্য দারুণ প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
অবশ্য যেকোনো সফরকারী দলের জন্যই দক্ষিণ আফ্রিকা সব সময়ই কঠিন প্রতিপক্ষ। গত তিন বছরে তাদের মাঠে এশিয়ার কোনো দেশই টেস্ট সিরিজ জিততে পারেনি। এবার সেই চ্যালেঞ্জ উতরে যাওয়ার সুযোগ বাংলাদেশের সামনে। সিডন্স সেটা জেনেই বললেন, ‘এখানে প্রতিটা ম্যাচই চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে। আমাদের লক্ষ্য সেগুলো প্রতিরোধ করা ও প্রতিপক্ষকে উল্টো চ্যালেঞ্জ জানানো।’
সদ্য ওয়ানডে সিরিজ জয় তো আছেই, বাংলাদেশকে আরও উজ্জীবিত করবে প্রোটিয়াদের টেস্ট দল। আইপিএলে যাওয়ায় থাকছেন না তাদের নিয়মিত দুই ফাস্ট বোলার লুঙ্গি এনগিডি ও কাগিসো রাবাদা। নিয়মিত একাদশের দুই ব্যাটারও থাকছেন না এই সিরিজে। তবু এই দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুর্বল ভাবতে রাজি নন সিডন্স। তিনি বলছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা শক্তিশালী টেস্ট দল। তাদের সিস্টেমের গভীরতাও অনেক, তারা ভয়ংকর হবে। কিন্তু তাদের বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ তারকা চলে যাওয়ায় কিছুটা দুর্বলও থাকবে।’
কেপটাউনের প্রস্তুতি নিয়ে খুশি পেসার আবু জায়েদ চৌধুরী রাহি। টেস্ট সিরিজকে ভালো একটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন এই পেসারও। বলেছেন, ‘ভালো অনুশীলন হয়েছে। আমরা সেখানে মাঝ উইকেটে অনুশীলন করেছি। আশা করি এটা আমাদের কাজে দেবে।’ আর বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক গতকাল ডারবানে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা (ফুরফুরে মেজাজের দল) অবশ্যই আমাদের আত্মবিশ্বাসী করবে। আমি অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর থেকে সংগ্রাম করেছি। ওয়ানডেতে আমরা খুব ভালো দল, টেস্টে (ধারাবাহিক হতে) আমাদের আরেকটু সময় লাগবে। ২-৩ বছর পর আমরা হয়তো টেস্টে একটা ভালো দল হতে পারব।’
কেপটাউনে ১০ দিনের অনুশীলন হয়েছে। ৩১ মার্চ ডারবানে প্রথম টেস্ট শুরুর আগে বাংলাদেশ ঝালিয়ে নিতে সময় পাবে আরও এক সপ্তাহ। আগের তিন সফরে দক্ষিণ আফ্রিকার এই বিখ্যাত ভেন্যুতে খেলার সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ। এবার এখানেই আরেকটি ইতিহাস লিখতে চায় বাংলাদেশ। আর সেটি করতে বাংলাদেশের প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি থাকার কথাও নয়।