ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪ |

EN

পরীমনি কতটা ভয়ঙ্কর অপরাধী?

বিনোদন ডেস্ক | আপডেট: রবিবার, আগস্ট ২২, ২০২১

পরীমনি কতটা ভয়ঙ্কর অপরাধী?

গ্রেপ্তারের ১৮ দিন অতিবাহিত হলো কিন্তু এখন পর্যন্ত জামিন হয়নি পরীমনির। শুরুতে বলা হয়েছিল তার বিরুদ্ধে অন্তহীন অভিযোগের কথা। কিন্তু এখন এক মাদক মামলা নিয়েই তাকে তিনবার রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারপর সিআইডির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরীমনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। কি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন সেটিও এখন পর্যন্ত খোলাসা করা হয়নি সিআইডির পক্ষ থেকে। তাহলে পরীমনির পরিণতি কী হবে? পরীমনিকে যেভাবে মাদকের মামলায় তিনবার রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো তাতে মনে হচ্ছে এই যে, পরীমনি একজন ভয়ঙ্কর অপরাধী। হতে পারে পরীমনি হয়তো বাংলাদেশের মাদক মাদক ব্যবসার মূল নেটওয়ার্কের অন্যতম মাফিয়া ডন, হতে পারে পরীমনি বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, হতে পারে পরীমনি এমন কিছু করছেন যা রাষ্ট্র এবং সরকারের জন্য ক্ষতিকর। আসলে কি বিষয়গুলো তাই নাকি পরীমনি স্রেফ প্রতিহিংসার শিকার বা পরীমনিকে গ্রেপ্তার করার পর এখন একটা কিছু দেখিয়ে এই গ্রেপ্তারটাকে জায়েজ করার চেষ্টা চলছে। এই প্রশ্নগুলো এখন বিভিন্ন মহল থেকে উঠছে।

পরীমনিকে নিয়ে দৃশ্যপটও এখন পাল্টে গেছে। প্রথম দিকে যখন পরীমনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তখন জনমত ছিলো পরীমনির বিরুদ্ধে। সকলেই পরীমনির বাড়াবাড়ি নিয়ে মুখর ছিলো। বিশেষ করে বোট ক্লাবের ঘটনার পর যখন নাসির ইউ আহমেদ গ্রেপ্তার হন তার পরপরই অল কমিউনিটি ক্লাবে পরীমনির ভাংচুরের দৃশ্য, বোট ক্লাবে পরীমনির চিৎকার-চেঁচামেচি এবং পরীমনির বাসায় বারের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর পরীমনির বিরুদ্ধে একটা জনমত গঠিত হয়েছিল। এরপর ৪ আগস্ট যখন পরীমনিকে গ্রেপ্তার করা হয় তখন সাধারণ মানুষের মতামত ছিলো পরীমনির বিরুদ্ধে। অনেকেই এই গ্রেপ্তারকে স্বাগত জানিয়েছিল, অনেকে বলেছিল যে একজন শোবিজের তারকার এরকম উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন উচিত না। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে ততই পরিস্থিতি পাল্টে যাচ্ছে। যারা একসময় পরীমনির সমালোচনায় মুখর ছিলেন তারাই এখন পরীমনির পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন। বিশেষ করে গত কয়েকদিনে পরীমনির পক্ষে একদিকে যেমন নাগরিক সমাজ সোচ্চার হয়েছে অন্যদিকে শিল্পীরাও গতকাল মানববন্ধন করেছে। আমরা জানি যে, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। এই সমস্ত মানববন্ধন প্রতিবাদ আসলে কোন সমাধান নয়। কিন্তু মৌলিক যে প্রশ্নটি বারবার সামনে চলে আসে তা হলো, পরীমনির অপরাধটা কি? কেন তাকে এভাবে শাস্তি পেতে হচ্ছে, বারবার তাকে রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে।

আমরা এরকম বহু উদাহরণ দিতে পারি যেখানে মাদক মামলায় তাৎক্ষনিক ভাবে জামিন পাওয়া যায়। এটি একটি জামিনযোগ্য অপরাধ। আর তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত অন্যকোন মামলাও নাই। তাছাড়া পরীমনিকে নিয়ে যে ঘটনাটা ঘটানো হচ্ছে তা কখনোই সরকারের পক্ষে যাচ্ছে না। তাহলে কারা এটি করছে, কাদের ইঙ্গিতে এই বিষয়টিকে ইলাস্টিকের মতো টেনে টেনে লম্বা করা হচ্ছে। যারা করছে তারা কি সরকারের শুভাকাঙ্ক্ষী? পরীমনির ঘটনার মাধ্যমে একদিকে যেমন নারীর অবমাননা ঘটেছে, তেমনি একটি বার্তা খুব সুস্পষ্টভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, তা হলো যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা চাইলে সব কিছুই করতে পারে। আমরা মনে করি যে পরীমনি যদি অন্য কোন অপরাধ করে সেই অপরাধেরও বিচার করা যেতে পারে। কিন্তু পরীমনি যেহেতু একজন পরিচিত মুখ। তাকে এভাবে অযথা গ্রেপ্তার করা অর্থহীন। বরং তাকে জামিন দিয়ে তার বিরুদ্ধে যত অভিযোগ সবগুলো তদন্ত করা এবং নিরপেক্ষ বিচারে যদি পরীমনি দোষী হয় তাহলে তকে বিচারের আওতায় আনাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু এভাবে বারবার রিমান্ডে আনা আবার জেলে পাঠানোর যে নাটক সাজানো হচ্ছে তাতে পরীমনির ক্ষতি হবে সামান্যই, আইন-বিচার এবং সামগ্রিক ব্যবস্থার উপর মানুষের এক ধরনের অনাস্থা তৈরি হতে পারে। সেটি সকলের জন্যই খারাপ দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে।