ফ্রিডম বাংলা নিউজ

মঙ্গলবার, নভেম্বর ৫, ২০২৪ |

EN

জনসভায় প্রধানমন্ত্রীকে বরণে প্রস্তুত রংপুর

রংপুর ব্যুরো | আপডেট: বুধবার, আগস্ট ২, ২০২৩

জনসভায় প্রধানমন্ত্রীকে বরণে প্রস্তুত রংপুর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন ঘিরে রংপুর মহানগরী নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। তাকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত রংপুর।  বেলা ৩টায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠে বিভাগীয় জনসভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর এ জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে বলে আয়োজকরা বলছেন। ১০ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে বলে তাদের প্রত্যাশা। এদিকে জনসভায় নেতাকর্মীদের আসা-যাওয়া নির্বিঘ্নে করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুতি নিয়েছেন। নগরীতে এক হাজারের বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। প্রবেশপথগুলোয় সন্দেহভাজন যানবাহন ও ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হচ্ছে। ২১টি পয়েন্টে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

পীরগঞ্জের লালদীঘির বধূ শেখ হাসিনাকে বরণ করে নিতে রংপুরবাসীর আয়োজনে বিন্দুমাত্র কমতি নেই। প্রায় এক যুগ পর তিনি রংপুর আসছেন। তার আগমনে উজ্জীবিত আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী। নেতাকর্মীদের মধ্যে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা লীগসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো দফায় দফায় বর্ধিত সভা করছে। মিছিলে মিছিলে নগরী মুখরিত হচ্ছে। চলছে বর্ণিল-বর্ণাঢ্য প্রচারণা। বাদ্যযন্ত্র ও গানের তালে নেচে-গেয়ে মাইকিং চলছে। জনসভাস্থল ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়, জিলা স্কুল মোড়, ডাকঘর মোড়, সুরভি উদ্যান মোড়, পুলিশ লাইন্স মোড়, সিটি বাজারসহ বিভিন্ন পয়েন্টে মাইক লাগানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে পুরো নগরী পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে। নগরীর বিদ্যুতিক পিলার, ল্যাম্প পোস্ট, দেওয়াল, গাছ-কোথাও ফাঁকা নেই। রাস্তাঘাট, রোড ডিভাইডার ধুয়ে-মুছে চকচকা করা হয়েছে। মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনায় নৌকার আদলে সভামঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। পাশে মিডিয়া, মুক্তিযোদ্ধা ও অতিথি কর্নার। জনসভা উপলক্ষ্যে প্রতিদিনই রংপুরে কেন্দ্রীয় নেতারা আসছেন। শেষ মুহূর্তে মাঠ পরিদর্শনসহ বিভিন্ন প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন তারা। জনসভাস্থলে এসএসএফসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা কাজ করছেন। তারা সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছেন। 

রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও স্বেচ্ছাসেবক উপকমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। পাড়া-মহল্লায় উঠান বৈঠক থেকে শুরু করে সভা-সমাবেশ করা হয়েছে। গ্রামগঞ্জে, শহরে-বন্দরে মিছিল হয়েছে। বিভাগজুড়ে ব্যাপক গণসংযোগ চালানো হয়েছে। মানুষ এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঘিরে উচ্ছ্বসিত। তারা জনসভায় যোগ দিতে অপেক্ষা করছে।

রংপুর মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর রংপুর সফর এবং এ জনসভা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। পুরো রংপুর বিভাগ এখন জয় বাংলা জয়ধ্বনিতে উদ্বেলিত। রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রোজী রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা রংপুরের পুত্রবধূ শেখ হাসিনার আগমনে আমরা খুব আনন্দিত, উদ্বেলিত। রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক একেএম ছায়াদত হোসেন বকুল বলেন, ১১ বছর পর আমরা তাকে বরণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। জিলা স্কুল মাঠের এ জনসভা রংপুরের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে রংপুরসহ পুরো বিভাগে উৎসবের আমেজ চলছে। শুধু জিলা স্কুল মাঠ নয়, গোটা শহরে মানুষ উপচে পড়বে। গোটা শহর জনসমুদ্রে পরিণত হবে।

প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে পুরো নগরীকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নগরীর ২১টি পয়েন্টে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করেছে মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। শহরে এক হাজারের বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। প্রবেশপথ ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়েছে। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, জনসভাকে ঘিরে সব ধরনের নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে সাদা পোশাকেও থাকবে। জনসভাস্থল ছাড়াও পথে পথে চেকপোস্ট থাকবে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথ ও মোড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা থাকবে। উঁচু ভবনের ছাদ এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর প্রতি ফ্লোরে প্রশিক্ষিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা থাকবে।

মাঠে থাকবে জাতীয় পার্টি : রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জনসভা আওয়ামী লীগের হলেও আগত নেতাকর্মীদের পিপাসা মেটাতে পানির বোতল হাতে থাকবে জাতীয় পার্টি। ইতোমধ্যে ২ লাখ ২৫ হাজার আধা লিটার পানির বোতল সরবরাহ করেছে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য, মহানগর কমিটির সভাপতি ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে ফেস্টুন, ব্যানার, তোরণ আর বিলবোর্ড সাঁটিয়েছেন তিনি। জনসভা সফল করতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে সিটি মেয়র মোস্তফা বলেন, প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন পর রংপুর আসছেন। আমরা দলমতনির্বিশেষে তাকে স্বাগত জানাব। এজন্য আমরা সবাই উদ্গ্রীব হয়ে আছি।

সফরসূচি : বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রী রংপুরে আসবেন। তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার রংপুর ক্যান্টনমেন্টের হেলিপ্যাডে অবতরণ করবে। সেখান থেকে সড়কপথে তিনি রংপুর সার্কিট হাউজের উদ্দেশে রওয়ানা হবেন। সার্কিট হাউজে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনি মতবিনিময় করবেন। এরপর রংপুর বিভাগের উন্নয়নে নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন তিনি। ২৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন সরকারপ্রধান। বিকাল ৩টায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠের জনসভায় তিনি ভাষণ দেবেন। বিকালে একইভাবে তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন।