ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, জুলাই ২৭, ২০২৪ |

EN

জরিনার ছলনায় পথে বসল তৌহিদ

নরসিংদী প্রতিনিধি | আপডেট: রবিবার, মার্চ ১২, ২০২৩

জরিনার ছলনায় পথে বসল তৌহিদ
কিছু কিছু কষ্ট আছে যা বলার ভাষা থাকে না। তারপরেও আপনাদের কাছে বলতে ইচ্ছে করছে অনেক, কেন জানি আপনাদেরকে খুব বিশ্বাস হচ্ছে। আমি আজ থেকে ১২ বছর আগে দেশের মায়া-মমতা ছেড়ে পাড়ি জমায় সূদুর প্রবাসে।

শুনুন তাহলে আমার জীবনের সর্বস্ব হারানোর কাহিনি-

আমি তৌহিদ। নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলায় বাড়ি। দীর্ঘদিন মধ্য পাচ্যের দেশ দুবাই তে অবস্থান করেছিলাম। দুবাইতে থাকাকালীন জরিনা( ৪৫) নামে এক মহিলার সাথে পরিচয় হয়। দীর্ঘদিন কথাবার্তার এক পর্যায়ে জরিনাকে বিয়ে করি। বিয়ের কিছুদিন ভালোই চলছিলো।

ভালোবাসে বিয়ে করা জরিনাকে এক পর্যায়ে ভিসা দিয়ে দুবাই নিয়ে যায়। কিছুদিন যাবার পর আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার করে দেয় জরিনাকে। ব্যবসা বাড়ানোর জন্য দুবাইতে জরিনার নামে একটা লাইসেন্স করে দেয় নাম ছিল zarina Akhter building cleaning services। লাইসেন্স করে দিবার পরই জানতে পারি জরিনার আসল পরিচয়। একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে তার অতীতের সকল কুকর্ম, যা আমার সম্পূর্ণ অজানা ছিলো।

আমার সাথে পরিচয় হবার পূর্বেই জরিনা দুবাই এসেছিলো গার্মেন্টসের ভিসায়। তখন দুবাইতে অবস্থানরত নারায়ণগঞ্জের এক গার্মেন্টস ব্যাবসায়ী আনোয়ার কে বিয়ে করে। বিয়ের পর আনোয়ারের সব কিছু হাতিয়ে নিয়ে তাকে মিথ্যা মামলায় জেলে ডুকিয়ে দেয়। আনোয়ার দুবাই জেল খেটে সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরে আসে জরিনার প্রতারণায়। শুধু আনোয়ার কে নিঃস্ব করেই থেমে থাকে নি জরিনা। প্রতারণার নতুন ফাঁদ তৈরি করে দুবাই বসবাসরত চট্টগ্রামের ইরফানের সাথে। ছনলার মাধ্যমে ইরফানের কাছ থেকেও হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের টাকা। এক পর্যায়ে জরিনার প্রতারণা বুঝতে পেরে ইরফান আস্তে আস্তে সরে আসে জরিনার কাছ থেকে। জরিনা যে একটা প্রতারক তা আমি জানতাম না, আর যখন জানতে পারি তখন আমি একেবারে নিঃস্ব।

জরিনাকে বিশ্বাস করে আমার সারাজীবনের সকল আয় তার মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় ইনভেস্ট করি। ঢাকার কামরাঙ্গীচরে ৪ টা ৫ তলা বাড়ি, জরিনার ভাইকে ব্যবসা করার জন্য নগদ টাকা, দশ ভরির মতো স্বর্ণাঅলংকার সহ প্রায় ৬ কোটি টাকার সম্পত্তি জরিনা বিভিন্ন ভাবে আমার কাছ থেকে নিজের নামে করে নেই। এতো কিছুর পরও আমি জরিনাকে নিয়েই সংসার করছিলাম। বিপত্তি টা সৃষ্টি হয় বছর দেড়েক আগে, ডাক্তারি পরিক্ষার মাধ্যমে জানতে পারি জরিনা সন্তান জন্মদানে অক্ষম। দাম্পত্য জীবনে অসুখী জরিনা নানাভাবে আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে আমি জরিনাকে নিয়ে এক সাথে দুবাই চলে যাবার জন্য ২৭/০১/২৩ ইং তারিখে এয়ার এরাবিয়া বিমানের টিকেট বুকিং দিলে বাগড়া দেয় জরিনা। সে আমার দুবাই ফেরত যাবার জন্য বুকিংকৃত বিমান টিকেট, নগদ অর্থসহ যাবতীয় মালামাল ও কাগজপত্র তার নিজস্ব হেফাজতে নিয়ে যায় এবং মিথ্যা যৌতুক মামলা দায়ের করে আমার বিরুদ্ধে। ফলে জরিনার করা মিথ্যা মামলায় দুবাই ফেরত যাবার পরিবর্তে আমার জায়গা হয় কেরানীগঞ্জ কারাগারে।

সব কিছু হারিয়ে আজ আমি অসহায়, পাগলপারা। এই দুয়ার থেকে ঐ দুয়ারে ঘুরছি শুধু তার বিচারের দাবিতে।

আমার জীবনের সকল উপার্জন প্রতারণার মাধ্যমে জরিনা নিজের নামে নিয়ে গেছে, আমার দুবাই যাবার ভিসার আর ২০ দিন বাকি, আমার পাসপোর্ট, ভিসা, ড্রাইভিং লাইসেন্স সহ যাবতীয় কাগজ পত্র তার কাছে, আমি এইগুলো ফেরত চায়। আপনারে আমাকে বাঁচান। উপরের কথা গুলো এই প্রতিবেদককে বলছিলেন অসহায় প্রবাসী তৌহিদ।

এই ব্যাপারে জরিনার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার সাড়া মেলে নি। আর জরিনার ভাই কে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তৌহিদকে আমার বোন ভিসা দিয়ে দুবাই নিয়ে গেছে এবং সে যেই অভিযোগ গুলো করেছে এসব যদি তার কাছে প্রমাণ থাকে তাহলে সে আদালতে প্রমান করুক। এখন এটা আদালতের বিষয়। আর আমার বোন জরিনা বর্তমানে দুবাই তে অবস্থান করছেন বলে ফোন কেটে দেন।