দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কোরবানির জন্য প্রস্তুত “দিনাজপুরের রাজা” নামের ১২০০ কেজি (৩০ মন) ওজনের ফ্রিজিয়ান জাতের একটি ষাড় গরু। লম্বায় ১২ ফিট এবং উচ্চতায় ৬ফিট সাদা কালো মিশ্রিত রঙে গরুটির মূল্য নির্ধারণ করেছেন ১২ লাখ টাকা।
ফুলবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের মধ্যমপাড়া গ্রামের মো. আজগর আলীর ছেলে শিক্ষক মো. গোলাম মোস্তফা বাড়ীতেই বিভিন্ন জাতের ১৫/১৬টি গড়ে তুলেছেন শখের গরুর খামার। এই খামারেই সাড়ে ৪ বছর পূর্বে ফ্রিজিয়ান জাতের গাভি থেকে জন্ম নেওয়া ফ্রিজিয়ান জাতের ষাড়টিকে রাজার মতই লালন পালন করেছেন বলে নাম রেখেছেন “দিনাজপুরের রাজা”।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ২ হাজার ৩২৫টি গরুর খামার রয়েছে। এরমধ্যে নিবন্ধনকৃত খামার ২৩টি। মোট কোরবানির উপযুক্ত প্রাণী রয়েছে ১৯ হাজার ৮০৫টি। এরমধ্যে ১১ হাজার ৩৮৬টি গরু কোরবানির উপযুক্ত হিসেবে রয়েছে। একইসাথে কোরবানির উপযুক্ত ছাগল ভেড়া অন্যান্য প্রাণী রয়েছে ৮ হাজার ৪১৯টি।
দিনাজপুরের রাজা’র মালিক গোলাম মোস্তফা জানান, গরুটিকে দীর্ঘদিন থেকে দেখা শুনা করেন, দুইজন লোক। তার খাবারের তালিকায় আছে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ কেজি ভেজানো ছোলা, গমের ভুসি, মিষ্টি কুমড়া এবং সবুজ কাঁচা ঘাস, ফ্যানের বাতাস ছাড়া থাকতে পারেনা ফ্রিজিয়ান জাতের এই ষাঁড়। বিদ্যুৎ না থাকলেও গরুটির জন্য বিকল্প ব্যবস্থাও করা হয়েছে। প্রতিদিন তিনবার করে গোসল করাতে হয়। গোসলের পর আবার শুকনা কাপড় দিয়ে শরীরের পানি মুছে ফেলতে হয় যাতে ঠান্ডা না লেগে যায়। মাত্র সাড়ে ৪ বছরেই তিনি গরুটিকে এই পর্যায়ে এনেছেন। তিনি আরও বলেন, গরুটির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ লাখ টাকা। গ্রাহক পেলে এবারেই গরুটি বিক্রি করে দিবেন। গরুটির খাবারের জন্য প্রতিদিন প্রায় এক হাজার টাকা ব্যয় হয়। এই নিয়ে আমার এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। গোলাম মোস্তফা জেলার বিভিন্ন খামার ঘুরে দাবি করেন দিনাজপুর জেলায় তার গরুটিই সবচেয়ে বড়। তিনি বলেন, গরুটি হাটে আনা নেওয়া করা কষ্টো সাধ্য বিষয় তাই চলতি বছরের ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে গরুটি ক্রয় করতে চান।
গোলাম মোস্তফার ছোট ভাই মোস্তাফিজুর বলেন, আমার ভাই অনেক সৌখিন মানুষ। নিজের সন্তানের মতো করে গরুটি লালন-পালন করেছেন। গরুটি আমাদের কাছে খুবই আপন হয়ে গেছে। ওকে বিক্রি করলে খুব কষ্ট লাগবে। কিন্তু বিক্রি তো করতেই হবে। সে ক্ষেত্রে যদি ভালো দাম পাই তা হলে কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে।
তিনি বলেন, এই গরুটিকে গোসল করাতে গিয়ে কষ্ট হয়নি। তার স্বভাব একেবারে শান্ত। তাকে বিক্রি করলেও বড় কষ্ট লাগবে। কিন্তু সারা জীবনত রাখা যাবেনা বিক্রি করতেই হবে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, গোলাম মোস্তফার মত অনেকেই এবছর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরন করে কোরবানাীর জন্য গরু প্রস্তুত করেছে।
এবছর গরু হৃষ্ট-পুষ্ট করণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৭৫ জন খামারীকে ৩টি ব্যাচে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এবং প্রাণী সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে খামরীদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। একইসাথে উপজেলা কোরবানির পশু ক্রয় বিক্রয়ের জন্য গরুরহাট ফুলবাড়ী, দিনাজপুর নামের একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক চালু রয়েছে। এখানে বিক্রেতারা তাদের কোরবানির পুশুর ছবিসহ বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে পশু বিক্রয় করতে পারবেন।