ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪ |

EN

পোস্টার প্রকাশ, জুনে মুক্তি

বিনোদন ডেস্ক | আপডেট: শনিবার, এপ্রিল ২, ২০২২

পোস্টার প্রকাশ, জুনে মুক্তি
‘হাওয়া’ সিনেমার শুটিং শেষ হয়েছে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে। পরের বছর মুক্তির কথা থাকলেও করোনার কারণে আটকে যায়। পরে ছবির পরিচালক জানিয়েছিলেন, ২০২২ সালে মুক্তি পেতে পারে ছবিটি। কিন্তু মাঝের অনেক দিন দর্শকের কাছে ছবিটির নতুন কোনো খবর ছিল না। শুক্রবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হলো ছবিটির অফিশিয়াল পোস্টার।

পোস্টার প্রকাশ প্রসঙ্গে ছবির পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন জানান, ছবির এটি প্রথম অফিশিয়াল পোস্টার। বলেন, ‘অনেক আগে ছবির শুটিং শেষ হয়েছে। কোভিডের কারণে আমরা পিছিয়ে গেছি। দর্শকেরা ছবির হালনাগাদ তথ্য জানেন না। এ কারণে দর্শকের জন্য প্রথম পোস্টার প্রকাশ করলাম।’
তবে পোস্টারটি ঢাকাই সিনেমার গতানুগতিক পোস্টারের মধ্যে পড়ে না। এটি পেইন্টিংয়ে করা। পরিচালক বলেন, ‘একটু ভিন্নভাবে করার চেষ্টা করেছি। ছবিটির মুক্তির আগে আগে আরও পোস্টার লুক আসবে। ছবির নয়জন শিল্পীর নয়টি আলাদা করে এভাবে পোস্টার প্রকাশ করার ইচ্ছা আছে। ঈদুল ফিতরের পরপরই ছবির ট্রেলার প্রকাশ করব। তবে ছবির কোনো টিজার রাখছি না।’

প্রেক্ষাগৃহে কবে মুক্তি পাবে ছবিটি? জানতে চাইলে পরিচালক বলেন, ‘ছবির পোস্টপ্রোডাকশনের কাজ প্রায় শেষ। ১০-১২ দিনের মধ্যেই সেন্সরে জমা দিতে পারব ছবিটি। সেন্সরে উঠতে হয়তো আরও সপ্তাহখানেক লাগতে পারে। সব মিলে আশা করছি ঈদুল আজহার পরপরই জুন মাসে মুক্তি দিতে পারব ছবিটি। কারণ, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে গেছে। কিছুটা সিনেমা দেখার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।’

গভীর সমুদ্রে গন্তব্যহীন একটি মাছ ধরা ট্রলারে আটকে পড়া আটজন মাঝি–মাল্লা এবং এক রহস্যময় বেদেনিকে ঘিরে ‘হাওয়া’ ছবির গল্প। পরিচালক জানান, যেহেতু গল্পে গভীর সমুদ্র দেখানো হয়েছে, তাই গভীর সমুদ্রে গিয়েই শুটিং করা হয়েছে ছবিটির। বলেন, ‘সাধারণত সমুদ্রের তীরবর্তী বা সমুদ্রের ভেতর অতি অল্প দূরে সিনেমার শুটিং করতে দেখা যায়। গভীর সমুদ্রের শুটিং সেট ফেলে করা হয়। কিন্তু আমরা গল্প ধরে গভীর সমুদ্রে গিয়েই শুটিং করেছি এই ছবির। সমুদ্রের গভীরে গিয়ে এভাবে ঝুঁকি নিয়ে এর আগে বাংলাদেশ-ভারতের কোনো ছবির শুটিং হয়েছে কি না, জানা নেই আমার।’
তিনি আরও বলেন, ‘সমুদ্রে যে দ্বীপে আমরা ছিলাম, সেই দ্বীপ থেকে আরও দুই-আড়াই ঘণ্টার পানি পথ পাড়ি দিয়ে গভীরে সমুদ্রের লোকেশনে শুটিং করেছি। যেখানে শুটিংয়ে সমুদ্রের নীল পানি দরকার ছিল। গল্প অনুযায়ী আমরা অর্গানিকভাবেই শুটিং করেছি।’

সমুদ্রে শুটিং শেষ করে আসতে প্রায় ৪৫ দিন লেগেছে। তার মধ্যে শুটিংই হয়েছে প্রায় ৩৫ দিন। অন্য রকম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে পুরো টিমকে, জানান সুমন। তিনি বলেন, ‘সমুদ্রের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে শুটিং শুরু করার বেশ কিছুদিন আগেই আমরা সমুদ্রে পৌঁছে গিয়েছিলাম। তা ছাড়া শুটিং শুরুর প্রায় দুই মাস আগে থেকে ট্রলার চালানো, সাঁতারসহ গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার নানা কৌশল অনুশীলন করতে হয়েছে চরিত্রগুলোকে। গভীর সমুদ্রে ঝড়, রোদ-বৃষ্টিতে টানা শুটিংয়ে শিল্পীদের কেউ কেউ অসুস্থও হয়ে পড়েছিলেন।’

পরিচালক জানান, শুটিংয়ের সময় ঝড় ‘বুলবুল’-এর কবলে পড়েছিলেন তাঁরা। বলেন, ‘দুপুরে ঝড় শুরু হয়। আমরা তখন সমুদ্রে। পরে স্থানীয় মানুষ ও কোস্টগার্ড মিলে রাতে আমাদের উদ্ধার করে। এরপর টানা ছয় দিন আমরা আর সমুদ্রে শুটিং করতে পারিনি।’ ছবিতে ট্রলারের ‘চালক’–এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন শরীফুল রাজ। শুটিংয়ে তাঁর ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা বলেন এভাবে, ‘আমার কষ্টটা বেশি হয়েছে। কারণ, অভ্যাস না থাকলে নদীতেও ট্রলার চালানো কঠিন। আর এটা ছিল সমুদ্র। কখনো কখনো উত্তাল ঢেউয়ের মধ্যে শুটিংয়ে ট্রলার চালাতে হয়েছে আমাকে। শুটিং করতে করতে অনেকটাই ট্রমায় ঢুকে গিয়েছিলাম। শেষ করে ঢাকায় ফিরেও অনেক দিন ঘোর কাটেনি আমার।’

ছবির কাহিনি ও সংলাপ লিখেছেন পরিচালক নিজেই। চিত্রনাট্য লিখেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান ও জাহিন ফারুক আমিন। এতে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরীফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, সোহেল মণ্ডল, নাসির উদ্দিন খান প্রমুখ। পোস্টারটির ডিজাইন করেছেন সব্যসাচী মিস্ত্রি।