মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় কৃষক লীগ নেতা মানিক সরদার (৪৫) খুনের ঘটনায় আলীনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান মিলন সরদারের বাড়িসহ ১২টি ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা। এসময় হামলা ও লুটপাট করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার রাতে ওই নেতার জানাজা শেষে উপজেলার আলিনগর ইউনিয়নের কালিনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে বিকালে কৃষক লীগ নেতা মানিক সরদারকে দাফন করা হয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কৃষক লীগ নেতা মানিক সরদারের জানাজা শেষে রাতে তার সমর্থকরা দল বেঁধে আলীনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান মিলন সরদারের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িসহ ১২টি ঘরে পেট্রল ঢেলে আগুন দেয়া হয়।
কৃষক লীগ নেতা মানিক সরদারের লাশ ময়না তদন্ত শেষে মঙ্গলবার বিকালে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। দাফন শেষে তার কর্মী সমর্থকরা আলিনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মিলন সরদারের বসতঘরে লুটপাট শেষে বিকাল সাড়ে ৬টার দিকে আগুন ধরিয়ে দেয়।
পরে তার সমর্থিত পাশের ১১টি বসতঘর ও একটি ইটভাটায় পেট্রল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। খবর পেয়ে মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ও বরিশালের গৌরনদী ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ৪ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে সোমবার রাত ৯টার দিকে আলিনগর ইউনিয়নের কালিনগর এলাকার পালরদী নদীর পাড় থেকে মানিক সরদারের লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত মানিক সরদার একই এলাকার আলমগীর সরদারের ছেলে। তিনি কালকিনি উপজেলা কৃষক লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও মৎস্যজীবী লীগের সহসভাপতি ছিলেন।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, মানিক সরদার হত্যাকাণ্ডের ঘটনার জেরে ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যানের বসতঘরসহ বেশকয়েকটি ঘর ও ইটভাটায় আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ লোকজন। তারা মনে করছেন, মানিককে সাবেক চেয়ারম্যান মিলন সরদারের লোকজন হত্যা করেছে। কিন্তু আইন হাতে তুলে নেয়া কারও ঠিক হয়নি। দুটি ঘটনার এখনও কাউকে আটক করা সম্ভব না হলেও অভিযান চলছে।
মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক নুর মোহাম্মদ শিকদার বলেন, আগুনে খবর পেয়ে মাদারীপুর ও গৌরনদী ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ৪ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনে। একাধিক স্থানে আগুনের ঘটনা থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয়। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দ্বিতীয় ধাপে কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাহিদ পারভেজের সমর্থক ছিলেন নিহত মানিক সরদার। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন ওই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান সরদার। রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে হাফিজুর রহমানের সঙ্গে মানিকের বিরোধ ছিল।
নিহত মানিক সরদারের স্ত্রী সীমা খানম বলেন, আমার স্বামীকে ওই মিলন সরদারই (হাফিজুর রহমান) হত্যা করেছে। তার নির্দেশ ছাড়া আমার স্বামীকে কেউ মারতে পারে না। আমার স্বামীকে যারা মেরেছে আমি তাদের বিচার চাই।
এদিকে ঘটনার পর থেকে হাফিজুর রহমানকে এলাকায় দেখা যায়নি। তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে তার প্রতিবেশী কয়েকজন বলেন, হাফিজুর রহমান ঢাকায় আছেন। তার পরিবারের লোকজন ঘরছাড়া।
সুত্র: যুগান্তর
নিজস্ব প্রতিবেদক |
আপডেট:
বুধবার, ফেব্রুয়ারী ৯, ২০২২ 
