করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত ১১ দফা বিধিনিষেধ মানার বালাই নেই ভেদরগঞ্জে ও সখিপুরে। বৃহস্পতিবার থেকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন হওয়ার কথা থাকলেও এদিন থেকেই এর কার্যকারিতা ও জনসচেনতা কোথাও দেখা যায়নি। বেশিরভাগ মানুষের মুখে দেখা যায়নি মাস্ক। স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রশাসন তৎপর রয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়নে জেলা প্রশসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের পাশাপাশি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শুর থেকেই মাঠে রয়েছে বলে জানা গেছে।
মাস্ক পড়ার প্রবণতা কিছুটা বাড়লেও এখনও বেশির ভাগ লোকেরই মুখে মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে না। আবার অনেকের মুখে নয় থুতনিতে রয়েছে মাস্ক। মাস্ক ব্যতীত অন্যান্য স্বাস্থ্য বিধি মানতেও রয়েছে মতো পার্থক্য।
কিন্তু এ পরার্মশকে উড়িয়ে দিয়ে যে যার তম করে মাস্ক ব্যবহার না করে চলাফেরা করছে। মাঝে মধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেও মাস্ক ব্যবহারে সচেতন করতে পারছেন না জনগণকে।
রোববার (৩০ জানুয়ারী) উপজেলার রামভদ্রপুর সেনের বাজার, সখিপুর বাজার , বাংলা বাজার, আরশিনগর, বালার বাজার, কার্তিকপুর বাজার, সাজনপুর বাজার, মোল্লার হাট বাজার এলাকা ঘুরে মাস্ক ব্যবহারে অনীহা এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা দেখা গেছে।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, মাস্ক ব্যবহারে অনীহার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি স্বল্প শিক্ষিত ও শ্রমিক শ্রেণির মানুষের মধ্যে। এরা কোনো নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা করছে না। রিকশাচালক, ভ্যানচালক, সিএনজিচালকদের কারো কারো মুখে মাস্ক থাকলেও থুতনির নিচে রয়েছে। মাস্ক ব্যবহারেই এদের অনীহা আর স্বাস্থ্যবিধির অন্যান্য নিয়ম মানবেন কী করে!
জানতে চাইলে ভেদরগঞ্জের একজন সিএনজি চালক সোহেল হোসেন বলেন, ‘আমাদের করোনা হবে না। সরকার বলেছে মাস্ক পড়তে, তাই সাথে রাখি। আমাদের মাস্ক পরিধান করলেই আর না করলেই কি? আমরা দিন আনি দিন খাই। পেটের দায়ে বের হতে হয়।’
মোল্লার হাট বাজারের মোড়ে দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিল এক ব্যবসায়ীর সাথে। তার থুতনিতে ছিল মাস্ক। জানতে চাইতেই মাস্ক মুখে দিয়ে বলেন, ‘আমি সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলব না। এদের কারণেই আজ ব্যবসা বন্ধ হয়েছে। তাদের লেখালেখির কারণে সরকার সব বন্ধ করে দিয়েছে। করোনা তো বড় লোকদের রোগ। এটা শ্রমিক বা নিম্ন শ্রেণির মানুষের জন্য নয়।’
সখিপুর এলাকার চায়ের দোকানি রনি সরদার বলেন, করি চায়ের দোকান, এমনিতেই সব সময় থাকি আগুনের পাড়ে আবার প্রচুর গরম তাই মাস্ক পড়ি না তবে দোকানে মাস্ক ঝুলানো আছে। কোনো সময় ম্যাজিস্ট্রেট স্যার আসলে তখন মাস্ক পড়ি।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত হবে আরও কঠোর হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করা।’ বলে মনে করেন এলাকার সুলীল সমাজের লোকজন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড. হাসান ইবনে আমিন বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি না মানলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। যারা টিকা নিয়েছে আর যারা নেননি প্রত্যেকের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত। মাস্ক ব্যবহার করা, ২০ সেকেন্ডে ধরে কিছু সময় পরপর হাত ধোয়া এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজ ব্যবহার করা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো স্বতঃস্ফুর্তভাবে কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। টিকা যারা নেন নি দ্রুত তাদের টিকা নেয়ার আহব্বান জানাই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর আল নাসিফ বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে আমরা প্রতিনিয়ত মানুষকে সচেতন করতে মাঠে কাজ করছি, কিন্তু সাধারণ মানুষ মাস্ক ব্যবহারের সুফলের বিষয়টা হয়তো বুঝতে পারছে না। মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানাও করছি তবুও মানুষ সচেতন হচ্ছে না। এ রোগ থেকে বাঁচতে প্রথমে নিজেকে সচেতন হতে হবে। তবেই না এ করোনা ভাইরাস থেকে আমরা সুস্থ থাকতে পারবো।