ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, অক্টোবর ২০, ২০২৪ |

EN

আমনের ক্ষতি পোষাতে বোরো চাষে ঝুকেছে কৃষক

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: রবিবার, জানুয়ারী ৩০, ২০২২

আমনের ক্ষতি পোষাতে বোরো চাষে ঝুকেছে কৃষক
ঘড়ির কাটা শুক্রবার সকাল ৮ টা ছুঁই ছুঁই। চারদিকে বইছে শীতের হীমেল হাওয়া। শীতের হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের জদুর বিলে বোরো চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন মহারাজপুর  গ্রামের কৃষক আমিনুর রহমান। কনকনে ঠান্ডায় জমি প্রস্তুতির সময় এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় আমিনুর রহমানের। 

এ সময় তিনি বলেন,গত আমন মৌসুমে চার বিঘা জমিতে ধান চাষ করে ছিলাম। কিন্তু গত ভাদ্র মাসের টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে জদুর বিল সহ কয়রা উপজেলার প্রায় সবগুলো বিল ডুবে যায়। সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। কয়েক দিনের মধ্য অন্য বিলের পানি নেমে গেলেও জলাবদ্ধতায় ডুবে থাকে জদুর বিল। এই অবস্হায় কেটে যায় প্রায় এক মাস। পানি নেমে যাওয়ারপর কিছু ধানগাছ বেঁছে ছিল। তাতেও ঠিকমতো ধান হয়নি।একারণে বোরো চাষ করছেন তিনি। 

আমিনু রহমান আরও বলেন,আমনের ক্ষতি পোষাতে ও পরিবারের খোরাকি মেটাতে দুই বিঘা জমিতে এবার বরো চাষ করছেন তিনি। একই এলাকার কৃষক কামরুল ইসলাম বলেন,আমন মৌসুমে দুই বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম।দুই বিঘায় ধান পেয়েছি সাত মন।এই ধান দিয়ে আমার পরিবারের তিনমাসও চলবে না।তাই বাধ্য হয়ে প্রথমবারের মতো বরো চাষ করছি। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো ধান চাষাবাদ মৌসুমে কয়রা উপজেলায় ৪ হাজার ২৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ২ শত ২৬ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ২ হাজার ৮ শত হেক্টর জমিতে উচ্ছফলনশীল ( উফশী ) বীজ আবাদ করা হবে। এ দিকে কৃষকদের বোরো ধানের আবাদ করার জন্য উৎসাহিত করতে সরকারী ভাবে ১ হাজার ৫ শত কৃষককে ২ কেজি করে হাইব্রিড বীজ ও ৫ শত কৃষককে ৫ কেজি করে উচ্ছফলনশীল ( উফশ ) বীজ দেয়া হয়েছে। মদিনাবাদ গ্রামের কৃষক বাবর আলী হাওলাদার বলেন, প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে আমন ধান ভালো না হওয়ায় এবার ১৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপন শুরু করেছি। আশাকরি এক সপ্তাহের মধ্যে ধান রোপন শেষ করতে পারবো। 

উপসহকারী কৃষি অফিসার আবদুল হামিদ বলেন,আমার ব্লকে ২২০ থেকে ২৩০ হেক্টর জমিতে বরো চাষ হচ্ছে। এখানে উচ্ছফলনশীল (উফশী) বীজ আবাদ বেশী হচ্ছে। সেচের পানি ব্যবস্থা করা গেলে মহারাজপুর ইউনিয়নে আরো অনেক জমিতে চাষ করা যেতো। কৃষকদের চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 

উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে ২ বার কৃষকের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে অন্য এলাকা থেকে নিম্ন মানের বয়স্ক চারা আমদানি করার কারণে আমন ধান ভালো না হওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে। তার পরেও আমন মৌসুমে কৃষকরা ভাল ফলন পেয়েছে বলে জানায়। যাদের একটু ক্ষতি হয়েছে  সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বোরো ধান চাষে উৎসাহিত করতে সরকারী ভাবে কৃষকদের বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে।