ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, অক্টোবর ২০, ২০২৪ |

EN

দুই স্ত্রীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

ফরিদপুরে কীটনাশক খাইয়ে কৃষককে হত্যা

ফরিদপুরের নগরকান্দায় এক কৃষককে ঘাস মারা কীটনাশক ওষুধ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুর আগে বলে যাওয়া কৃষক হিরু মাতুব্বরের (৫১) কথা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোষ্ট করার পর সেই ভিডিও ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।


নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: মঙ্গলবার, জানুয়ারী ২৫, ২০২২

ফরিদপুরে কীটনাশক খাইয়ে কৃষককে হত্যা

নিহত কৃষক হিরু মাতুব্বর

শনিবার (২২ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত কৃষক হিরু মাতুব্বর উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের রাজকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। হিরু মাতুব্বরের ভাই সোহরাব মাতুব্বর জানান, আমার ভাই হিরু মাতব্বরকে জোরপূর্বক বিষ (ঘাস মারা ওষুধ) খাওয়ানোর কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে কে বা কারা হিরু মাতুব্বরকে বিষ খাইয়ে হত্যা করেছে, এ ব্যাপারে হিরু মাতুব্বরের প্রথম স্ত্রী ও দ্বিতীয় স্ত্রীর বিরুদ্ধে রয়েছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ।

তিনি আরও বলেন, হিরুকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে, এটি জানতে পেরে আমরা তাকে শ্রীরামদিয়া গ্রামে তার দ্বিতীয় স্ত্রী রানু বেগমের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসি। কারণ হিরু দুই মাস আগে শ্রীরামদিয়া গ্রামের জাফর মাতবরের মেয়ে রানু বেগমকে বিয়ে করে সেই বাড়িতে থাকতেন। হিরুর প্রথম স্ত্রী হায়াতুন্নেছা ও তার দুই ছেলে, এক মেয়ে রাজকান্দা গ্রামে আমাদের বাড়িতে থাকেন।

এ বিষয়ে ওই গ্রামের বাসিন্দা আবদুল ছাত্তার মাতুব্বরের ছেলে সামন মাতুব্বর বলেন, রাজকান্দা গ্রামের কৃষক হিরু মাতুব্বরকে শনিবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় তার বাড়ির পাশের বাগানের মধ্যে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পাই। এ সময় হিরু মাত্ব্বুরের ছেলে হোসাইন মাতব্বর সেখানে আসে। তার কাছে (হিরু মাতুব্বর) কি হয়েছে জানতে চায়। 

এ সময় তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী শ্রীরামদিয়া গ্রামের ৫-৬ জন লোক তাকে ঘাস মারা ওষুধ জোর করে খাইয়ে এই বাগানে ফেলে রেখে গেছে। তিনি এ সময় কয়েকজনের নামও বলেন। হিরু মাতুব্বরের এসব কথা এ সময় আমার মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে রাখি। সেই ভিডিও ইতোমধ্যে বিভিন্ন ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা জানান, অসুস্থ হিরু মাতুব্বরকে দ্বিতীয় স্ত্রী রানু বেগম উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি মারা যান। হিরু দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে তার বিরোধ চলছিল।

এ ব্যাপারে কৃষক হিরুর প্রথম স্ত্রী হায়াতুন্নেছা বলেন, আমার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়িতে থাকতেন। আমাদের কোনো খোঁজখবর নিতেন না। সেই বাড়ির লোকজন তাকে বিষ খাইয়ে, আমাদের বাড়ির পাশের বাগানে রেখে যায়। তাই আমরা তাকে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়িতে রেখে আসি।

এ ব্যাপারে কৃষক হিরু মাতুব্বরের দ্বিতীয় স্ত্রী রানু বেগমকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার বাবার বাড়ির লোকজনের দাবি, প্রথম স্ত্রী ও তার পরিবারের লোকজন এই মৃত্যুর জন্য দায়ী। 

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) সুমিনুর রহমান বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। হিরু মাতব্বরের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার মৃত্যু রহস্য উদঘাটনের জোর চেষ্টা চলছে। তবে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি।