ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, অক্টোবর ২০, ২০২৪ |

EN

ঘুষগ্রহণের দায়ে বরিশাল সিভিল সার্জন অফিসের প্রধান সহকারীকে স্ট্যান্ড রিলিজ

আল মামুন, বরিশাল প্রতিনিধি | আপডেট: রবিবার, জানুয়ারী ১৬, ২০২২

ঘুষগ্রহণের দায়ে বরিশাল সিভিল সার্জন অফিসের প্রধান সহকারীকে স্ট্যান্ড রিলিজ
অবশেষে কলঙ্কমুক্ত হলো বরিশাল সিভিল সার্জন অফিস। করোনায় আক্রান্ত স্বাস্থ্য সহকারীর মৃত্যুর পর তার পেনশন মঞ্জুরীর জন্য ফাইল আটকিয়ে পরিবারের কাছ থেকে বিশ হাজার টাকা ঘুষ আদায়ের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় প্রধান সহকারী মো. সিরাজুল ইসলামকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।

আগামীকাল সোমবার (১৭ জানুয়ারি) তার নতুন কর্মস্থল সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসের প্রধান সহকারী পদে যোগদান না করলে মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারী) হতে বরিশাল সিভিল সার্জন অফিস থেকে সরাসরি অব্যহতি হবেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলাম। 

গত ১২ জানুয়ারি স্ট্যান্ড রিলিজের এই আদেশ তিনি ইস্যু করেন বলে নিশ্চিত করেছেন সদ্য যোগদান করা বরিশাল সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মহামারি করোনায় আক্রান্ত হয়ে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার স্বাস্থ্য সহকারী মো. নূরে আলম সিদ্দিকী মৃত্যুবরন করেন। মৃত্যুর পর তার পেনশন মঞ্জুরীর জন্য পরিবারের কাছ থেকে বিশ হাজার টাকা ঘুষ আদায় করেন সিভিল সার্জন অফিসের প্রধান সহকারী সিরাজুল ইসলাম। 

নূরে আলম সিদ্দিকীর পরিবারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ দেয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দাখিলকৃত অভিযোগের বিষয়ে মতামতের জন্য সিরাজুল ইসলামকে পরপর তিনটি চিঠি প্রেরণ করলেও তিনি তার কোন জবাব কিংবা উপস্থিত হননি।
উল্টো তিনি অফিসে বসে বেপরোয়া ঘুষ আদায়সহ একাধীক অনৈতিক কর্মকান্ড অব্যহত রাখেন। সিভিল সার্জন অফিসের অধীনস্থ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাছ থেকে ফাইল আটকিয়ে টাকা আদায় এবং না দিলে অশোভনীয় আচরনের প্রেক্ষিতে সদ্য বিদায় হওয়া সিভিল সার্জনের সুপারিশে গত গত ১২ জানুয়ারি তাকে জরুরি ভিত্তিতে সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়।

এ বিষয়ে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাকে যেখানে দায়িত্ব দেবেন সেখানেই দায়িত্ব পালন করব। ফাইল আটকিয়ে ঘুষ আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য না করে ফোনের লাইন কেটে দেন। পরবর্তীতে একাধীকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা, মারিয়া হাসান জানান, প্রধান সহকারী সিরাজুল ইসলামের স্ট্যান্ড রিলিজের চিঠি পেয়েছি। তবে আমি এখানে সদ্য যোগদান করায় এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবোনা।

উল্লেখ্য এর আগে সিরাজুল ইসলাম ঢাকার মহাখালি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কর্মরত থাকাবস্থায় ঘুষ ও দুর্ণীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন একাধীকবার তলব করেন। পরে দুদকের কাছ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে বরিশাল সিভিল সার্জন অফিসে বদলি হন। তার আগে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত থাকাবস্থায় এক নারী কর্মীর সাথে অনৈতিক কর্মকান্ড করতে গিয়ে নিজ অফিস কক্ষে তালাবদ্ধ হন। তারও আগে ২০১৬ সালে ঝালকাঠী সদর হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় তার অনিয়ম, দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে হাসপাতালের ৬৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী শাস্তিমূলক বদলীর জন্য একযোগে লিখিত অভিযোগ দিলে সেখান থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ দেওয়া হয়।