ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, অক্টোবর ২০, ২০২৪ |

EN

এক মাস বন্ধ আলুরবাজার লঞ্চঘাট, যাত্রীও ব্যবসায়ীদের সীমাহীন ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: রবিবার, জানুয়ারী ৯, ২০২২

এক মাস বন্ধ আলুরবাজার লঞ্চঘাট, যাত্রীও ব্যবসায়ীদের সীমাহীন ভোগান্তি
নরসিংহপুর আলুর বাজার লঞ্চ ঘাটের অদূরে পদ্মার শাখা নদীতে ডুবোচর জেগে ঘাট এলাকায় নাব্যতা সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।  চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় পানি না থাকায় লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ড্রেজিং চলছে ধীর গতিতে। এতে শরীয়তপুর-চাঁদপুর, শরীয়তপুর-ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, বরিশালের সাথে নৌরুটে লঞ্চ চলাচল ব্যহত হচ্ছে। বিগ্নিত হচ্ছে শরীয়তপুর-চাঁদপুর ফেরী চলাচল।

৮ জানুয়ারী শনিবার আলুর বাজার ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, নাব্যতা না থাকার কারণে বিগত মাসাধিকাল ধরে লঞ্চঘাটের মুখের নদীতে ড্রেজারের পাইপ ফেলে রাখায় দীর্ঘদিন ধরে ঘাটে লঞ্চ ভীড়তে পারছেনা। ফলে এ অঞ্চলের যাত্রী ও পন্য পরিবহনে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় মোকতার দিদার জানান, প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় হাজার লোক যাতায়াতা করে থাকে এ ঘাট দিয়ে। ড্রেজিং চলায় এ ঘাটে লঞ্চ ভীড়তে না পারায় মালামাল লোড-আনলোডেও সমস্যা হচ্ছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যেও ব্যাঘাত ঘটছে এবং চরম বিপাকে পড়েছে বালারহাট, মোল্যারহাট, সখিপুর ও ডিএমখালি বাজারের ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় বালাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা লোকমান হোসেন বলেন, দীর্ঘ এক মাসের বেশী আলুবাজার ঘাটে লঞ্চ ভীড়ছেনা। এ ঘাটের যাত্রীদের মাঝ নদীতে চরে ট্রলারে করে নিয়ে লঞ্চে তুলে দেয়। ফলে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। শিশু, বয়স্ক ও নারী যাত্রীদের ভোগান্তি সীমাহীন। এ ব্যাপারে ঘাটের লোকজনদের বলে কোন সমাধান হচ্ছেনা। তারা ড্রেজিং এর জন্য সমস্যা হচ্ছে বলে এড়িয়ে যাচ্ছে।

পাশের ফেরী ঘাট ব্যবহারকারী দিদার পরিবহনের চালক মোঃ বাদশা মিয়া বলেন, শীতকালে নদীর পানি কমে যাওয়ার সাথে নাব্যতা সংকটে ঠিকমত ফেরী চলেনা। এ ছাড়া একটি ড্রেজার দিয়ে নদীতে থেমে থেমে ড্রেজিং করায় আমাদের ঘাটটি প্রায়ই বন্ধ থাকে। ফলে প্রায় প্রতিদিনই আমাদের ঘন্টার পর ঘন্টা সময় নষ্ট হয়। 

যশোর থেকে আসা ট্রাক চালক আনোয়ারুল বলেন, নদীর পানি কমে যাওয়া ও নাব্যতা সংকটে এ পথে ফেরী চলাচল বিগ্নিত হচ্ছে। ঘাটের সামনে ড্রেজিং করায় প্রায় দিনই ঘাটে সমস্যা হয়। এতে যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহন ঘন্টার পর ঘন্টা এমকি দিনে পরপর দিন বসে থাকতে হয়।

শরীয়তপুৃর জেলা পুলিশের টিআই মোঃ খোরশেদ বলেন, নাব্যতার জন্য ড্রেজিং করা হচ্ছে। যা দীর্ঘদিন বিলম্বিত হওয়ায় লঞ্চ ঘাটটিতে এখন আর লঞ্চ ভীড়ছে না। অপরদিকে ফেরী পারাপার ও ঘাটে সমস্যা দেখা দেয়ায় এ পথে যাত্রী ও গাড়ী সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বিষয়টি আমি আমাদের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

বিআইডব্লিটি এর প্রকৌশলী (ড্রেজিং) সফিক আহমেদ বলেন, নরসিংহপুর ঘাটের নাব্যতা বজায় রাখার জন্য একটি ড্রেজার প্রায় ৩৫ দিন যাবৎ কাজ করছে। লঞ্চঘাট বন্ধের বিষয়ে আমার জানা নেই।

নরসিংহপুর ফেরী ঘাটের ইজারদার মোঃ জিতু মিয়া বলেন, নাব্যতার জন্য ড্রেজিং চলছে, যা আমাদের জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যাত্রীদের সুবিধার জন্য করাচ্ছেন। তা যাত্রীদের উপকারে না এসে ক্ষতি হচ্ছে। আমাদের লঞ্চ ঘাটটি দীর্ঘদিন বন্ধ। এতে যে সমস্যা হচ্ছে তার সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

বিআইডব্লিউটি এর উপপরিচালক কাউসার আহমেদ বলেন, আমাদের ফেরী ঘাটে ড্রেজিং চলছে। নদীটি সরু হওয়ায় আমরা লঞ্চ চলাচল বন্ধ রেখেছি। ড্রেজিং কতদিন চলবে তা আমি বলতে পারবো না।

এ বিষয়ে ড্রেজিং বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ মিজানুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ওই খানের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী আবু বক্কর এর সাথে কথা বলতে বলেন।

আলুরবাজার ফেরীঘাটের ড্রেজিং কাজের তদারককারী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আমরা প্রতিবছর আলুর বাজার ঘাটের নদী থেকে ৪ লক্ষ ঘনমিটার মাটি অপসারণ করে থাকি। আমরা ৩৫ দিন যাবৎ ড্রেজিং করছি। আর ১০/১২ দিনের মধ্যে আমাদের ড্রেজিং শেষ হলে লঞ্চ চলাচল শুরু করা যাবে।