ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বুধবার, জুলাই ৩, ২০২৪ |

EN

দিনভর উত্তেজনায় কলকাতার পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: সোমবার, ডিসেম্বর ২০, ২০২১

দিনভর উত্তেজনায় কলকাতার পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত
দিনভর উত্তেজনা, বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ও অভিযোগ-পালটা অভিযোগের মধ্যদিয়ে রোববার কলকাতার পৌর করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় বোমাবাজি ও সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কয়েকজন। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ব্যাপক ভোট লুটের অভিযোগ করেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি ও বামফ্রন্ট। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতেই সব জায়গায় প্রার্থীই দিতে পারে না বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস শান্তিপূর্ণ ভোটকে কালিমা লেপনের চেষ্টা করেছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও কলকাতা পুলিশের মতে, কয়েকটি বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও মোটামুটি ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। বুথ দখলের কোনো ঘটনা ঘটেনি। কোনো বুথেই পুনর্নির্বাচন হবে না বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আগামীকাল সকাল ৮টা থেকে ভোটগণনা শুরু হবে। ফল প্রকাশ হবে ওই দিনই। বিজেপি ও বামফ্রন্টের অভিযোগ ১৪৪ ওয়ার্ডের ৪ হাজার ৯৫৯ বুথের অন্তত ২০ শতাংশে ভোট লুট হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে বিরোধীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এছাড়া সাধারণ মানুষকে ভোট দিতে না দেওয়া, ভুয়া ভোট দেওয়া, বুথের ভেতরে ক্লোজড সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরা অকেজো করে দেওয়া, অঞ্চলে বাইরের ছেলে ঢুকিয়ে ভোট করানো থেকে বোমাবাজি, বিরোধী প্রার্থীদের ওপরে হামলাসহ নানা অরাজকতার অভিযোগ করেছে বিজেপি। 

১৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে উত্তর কলকাতার বড়তলা থানার সামনে সম্মিলিতভাবে বিক্ষোভ করেছে রাজ্যের তিন বিরোধী দল বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস। তিন দলই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে পৃথক ভাবে অশান্তি এবং অনিয়মের অভিযোগ জানিয়েছে। একই ধরনের অভিযোগ বামপন্থিদের। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, তৃণমূল পুলিশ ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের যৌথ প্রয়াসে গণতন্ত্রের প্রহসন হয়েছে। গণতন্ত্রের নামে নোংরা খেলা হয়েছে। 

বড় কোনো সংঘর্ষের ঘটনা না ঘটলেও বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিরোধী প্রার্থী এবং কর্মীদের মারধর, পোলিং এজেন্টকে হেনস্থা, বিরোধীদের বুথ ক্যাম্পে হামলার অভিযোগ উঠেছে। প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও রক্ত ঝরেছে। শিয়ালদহের টাকি স্কুলের সামনে বোমায় গুরুতর আহত হয়েছেন একজন। বেলেঘাটার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডেও শাসক দলের বিরুদ্ধে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। উত্তর কলকাতায় বোমা বিস্ফোরণ ও প্রার্থী মীনাদেবী পুরোহিতকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলেও বিজেপি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে। ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সিআইটি পার্ক পোলিং স্টেশনে ভাঙচুর করা হয়েছে ইভিএম। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী বিজয় ওঝাও আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ। খিদিরপুরে হামলা হয়েছে সিপিএম প্রার্থী ফৈয়াজ আহমেদ খানের ওপর। ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী আশিস মণ্ডল সিরিটির একটি বুথে ঢুকতে গিয়ে নিগ্রহের শিকার হন। ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে মারধর করা হয় কংগ্রেস প্রার্থী সন্তোষ পাঠকের এজেন্টকে। 

মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বিরোধীদের অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে বলেন, শান্তিপূর্ণ ভাবেই ভোট হয়েছে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আশ্বাস’, অশান্তির ভিডিও ফুটেজ থাকলে আনুন। তৃণমূল কেউ, কোথাও, কোনো জড়িত আছে প্রমাণ দিতে পারলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দল ব্যবস্থা নেবে। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় নির্বাচনে সন্ত্রাসের অভিযোগ খারিজ করে বিরোধীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের পালটা অভিযোগ তুলেছেন। নির্বাচনে ১৪৪টি ওয়ার্ডে সর্বমোট ভোটার ৪০ লাখ ৪৮ হাজার। রাজ্য নির্বাচন কমিশন ৬৫ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছে। অর্ধেকের বেশি ওয়ার্ডে ৫০ শতাংশের চেয়ে সামান্য কিছু বেশি ভোট পড়েছে। ১৩৫টির বেশি আসন পাবে বলে দাবি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।