ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, অক্টোবর ১৯, ২০২৪ |

EN

ডাবের পানির সাথে বিষ মিশিয়ে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর ফাঁসির আদেশ

আল মামুন, বরিশাল প্রতিনিধি | আপডেট: সোমবার, ডিসেম্বর ১৩, ২০২১

ডাবের পানির সাথে বিষ মিশিয়ে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর ফাঁসির আদেশ
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ৩ লাখ টাকা যৌতুক না পেয়ে ডাবের পানির সাথে বিষ খাইয়ে স্ত্রী আয়শা আক্তারকে হত্যার দায়ে স্বামী সাইদুল ইসলাম মৃধাকে ১ লাখ টাকা জরিমানাসহ মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। 

রবিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আসামি সাইদুলের উপস্থিতিতে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ এই রায় ঘোষণা করেন। এই রায়ে খুশি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

দন্ডপ্রাপ্ত সাইদুল ইসলাম মৃধা (৩০) বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল গ্রামের আলতাফ মৃধার ছেলে। নিহত আয়শা আক্তার গোপালগঞ্জের বাগবাড়ি গ্রামের ফজলু কাজীর মেয়ে। 

ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি এ্যাডভোকেট মাহমুদা আক্তার মনি জানান, আসামি সাইদুল তার স্ত্রীর কাছে ৩ লাখ টাকা দাবি করে। দাবিকৃত যৌতুক না দেয়ায় বিভিন্ন সময় স্ত্রী আয়শা আক্তারকে নির্যাতন করে সে। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালের ৩ অক্টোবর বেলা ১২টার দিকে আসামি তার নিজ ঘরে স্ত্রীকে ডাবের পানি খাওয়ায়। মুহুর্তেই আয়শা মাথা ঘুরে পড়ে যায়। অসুস্থ অবস্থায় তাকে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ওইদিন দিবাগত রাত ৩টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

এই ঘটনায় মৃতের বাবা ফজলু কাজী বাদী হয়ে আয়শার স্বামী, শ্বশুর-শ্বাশুড়িসহ ৫ জনকে আসামি করে ৫ অক্টোবর আগৈলঝাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশি তদন্তে ৩ আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে শুধুমাত্র সাইদুল ও তার মা বিলকিস বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে এই মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। পরে অভিযোগ গঠনের সময় বিলকিস বেগমকে অব্যাহতি দেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। বিচারকার্য চলাকালে ২০ জন সাক্ষ্য গ্রহণে ৩ লাখ টাকা যৌতুক না পেয়ে ডাবের পানির সাথে বিষ খাইয়ে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ প্রমানিত হলে একমাত্র আসামি ও নিহতের স্বামী সাইদুল ইসলাম মৃধাকে ১ লাখ টাকা জরিমানাসহ মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। রায় ঘোষণার পর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সাইদুল কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ।

ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি এ্যাডভোকেট ফয়জুল হক ফয়েজ বলেন, এই রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যৌতুকের জন্য ভবিষ্যতে আর যাতে কেউ স্ত্রী হত্যা না করে তাদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মনে করেন তিনি।