ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, অক্টোবর ১৯, ২০২৪ |

EN

ধর্ষণ মামলার প্রতিশোধ নিতে লঞ্চে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

আল মামুন, বরিশাল প্রতিনিধি | আপডেট: রবিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২১

ধর্ষণ মামলার প্রতিশোধ নিতে লঞ্চে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
ঢাকা-বরিশাল নৌ রুটে চলাচলকারী এমভি কুয়াকাটা-২ লঞ্চের লস্কর কেবিনে স্বামীই হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছে নিহত শারমিনের স্বজনরা।

শুক্রবার রাতে শারমিনের বাবা এনায়েত হোসেন বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় এমন অভিযোগ এনে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এতে একমাত্র আসামি করা হয়েছে শারমিনের স্বামী ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার পশ্চিম গোপালপুর এলাকার বাসিন্দা জলিল হাওলাদারের ছেলে মাসুদ হাওলাদারকে।

নিহতের স্বজনরা লঞ্চের সিসি ক্যামেরা ফুটেজে বৃহস্পতিবার লঞ্চে ওঠার সময়ে শারমিনের সঙ্গে আর লঞ্চ থেকে নামার সময়ে মাসুদ একা নেমে যাওয়ার ঘটনা চিহ্নিত করেছেন। 

কোতয়ালী মডেল থানার ওসি আজিমুল করিম এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

নিহতের বাবা এনায়েত জানান, এক বছর আগে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার পশ্চিম গোপালপুর এলাকার বাসিন্দা জলিল হাওলাদারের ছেলে মাসুদ হাওলাদারের সঙ্গে বিয়ে হয় শারমিনের। এর আগে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিল শারমিন। এই মামলা নিষ্পত্তির জন্য উভয় পরিবারের সম্মতিতে ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর শারমিনকে আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন করে নেওয়া হয়। এরপর বিভিন্ন সময় তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হতো বলে শুনতাম। এমনকি শারমিন ও মাসুদ দুজনে মাঝে মধ্যে আলাদা থাকত।

তিনি বলেন, শারমিন ১২ বছর ধরে ঢাকার তেজগাঁওয়ের কুনিপাড়ায় থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করত। বিয়ের আগে আমাদের সহযোগিতা করলেও বিয়ের পর কোনো খোঁজ-খবর রাখত না। এমনকি তারা যে বরিশালে লঞ্চে করে আসত সেটাও আমাদের জানা ছিল না। বিভিন্ন গণমাধ্যমে লঞ্চে এক নারীর লাশ উদ্ধারের সংবাদ দেখে শারমিনের বিষয়টি নিশ্চিত হই। 

শুক্রবার সন্ধ্যায় এসে লাশ শনাক্ত করি। মাসুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করার ক্ষোভ থেকেই শারমিনকে হত্যা করেছে। আমি তার ফাঁসির দাবি করছি।

শারমিনের চাচাতো ভাই আরিফুর রহমান বলেন, গনমাধ্যমে খবর দেখে নিশ্চিত হই শারমিনের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি। পরে লঞ্চে এসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শারমিনের সঙ্গে স্বামী মাসুদের লঞ্চে প্রবেশ এবং সকালে মাসুদের একা বের হওয়ার দৃশ্য দেখতে পাই। মাসুদই আমার বোনকে হত্যা করেছে।

কোতয়ালী মডেল থানার ওসি আজিমুল করিম বলেন, লাশ উদ্ধারের ঘটনায় শারমিনের বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। নিহতের স্বজনরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে মাসুদকে হত্যাকারী হিসেবে শনাক্ত করেছে। মামলার তদন্ত করবে নৌ পুলিশ। আর আমরাও ছায়া তদন্ত করব।

বরিশাল নৌ সদর থানার ওসি হাসনাত জামান বলেন, আসামিকে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আশা করি অল্প সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো।