ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, অক্টোবর ১৯, ২০২৪ |

EN

আজ এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় ঝালকাঠি

জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: বুধবার, ডিসেম্বর ৮, ২০২১

আজ এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় ঝালকাঠি

আজ ডিসেম্বর ঝালকাঠি ঝালকাঠি মুক্ত দিবস। একাত্তরের এই দিনে দখিনের জেলা ঝালকাঠি হানাদার মুক্ত হয়।

এদিন ভোর রাতে ঝালকাঠিতে থাকা পাকিস্তানি সেনারা নদী পথে পালিয়ে যায়। দুপুরে তাদের দোষর  রাজাকার বাহিনী অস্ত্রসহ শহরের তরুণ মুক্তিযোদ্ধা সাধারণ মানুষের কাছে আত্মসমর্পণ করে। সন্ধ্যায় বিনা বাঁধায় ঝালকাঠি থানা দখলে নেয় মুক্তিযোদ্ধারা। এরপর চুরান্ত ভাবে মুক্ত হয় ঝালকাঠি। গভীর রাত পর্যন্ত জয় বাংলার স্লোগানে মুখোরিত হয় ঝালকাঠির আকাশ বাতাস।

প্রত্যক্ষদর্শী মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ডিসেম্বর রাতে শহরে এক পাকি দোষর রাজাকার কার্ফু ঘোষণা করে। ডিসেম্বর ভোরে রাস্তায় যাকে দেখা যাবে তাকে গুলি করে হত্যা করা হবেবলে।

কিন্তু ভোর হওয়ার আগেই ঝালকাঠিতে থাকা পাকবাহিনী নৌ যোগে শহর ছেড়ে পালিয়ে যায়।

সে সময়কার তরুণ মুক্তিযোদ্ধা বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত ঝালকাঠির সরকারি মহিলা শিক্ষক আনোয়ার হোসেন পান্না জানান, কুখ্যাত বারেক রাজাকার ৩৬ সদস্যের রাজাকার বাহিনী নিয়ে শহরের কাঠপট্টি এলাকায় তার নেতৃত্বে তরুণ মুক্তিযোদ্ধা স্থানীয়দের কাছে আত্মসমর্পণ করে। পাকবাহিনী শহর ছেড়ে যাওয়ার পর রাজাকারা পালাতে শুরু করেছিল। এসময় তরুণ মুক্তিযোদ্ধারা জয় বাংলার স্লোগান দিয়ে রাজাকারদের ঘিরে ফেললে রাজাকারা নিজেদের রাইফেল ফেলে আত্মসমর্পন করে। পরে রাজাকারদের শহরের পশ্চিম ঝালকাঠি নিয়ে গেলে স্থানীয় জনতার গণধোলাইয়ে কুখ্যাত রাজাকার বারেক নিহত হয়।

একই দিন সকালে নলছিটি থানার তৎকালীন পুলিশ কর্মকর্তারা নলছিটির মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দার আলী মিয়ার কাছে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পন করে। ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা থানা ঘেরাও করে রাখে। নলছিটি থানা পুলিশ প্রাথমিক পর্যায় প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও চারিদিক থেকে অবরুদ্ধ অবস্থা দেখে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়।ফলে ডিসেম্বর নলছিটি বন্দরও হানাদার মুক্ত হয়।

এদিকে ডিসেম্বর সকাল থেকেই ঝালকাঠি শহরের চারপাশে অপেক্ষমান মুক্তিযোদ্ধারা দলে দলে ঢুকতে শুরু করেন। সন্ধ্যায় ঝালকাঠি থানা অবরুদ্ধ করে মুক্তিযোদ্ধারা। তৎকালীন পুলিশের সিআই শাহ আলম ঝালকাঠির দায়িত্বপ্রাপ্ত মুক্তিবাহিনীর কমান্ডার সেলিম শাওনেওয়াজের কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে অস্ত্র সমর্পন করেন।

ঝালকাঠির তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সেলিম শাহনাজের কাছে ঝালকাঠি থানা পুলিশ অস্ত্রসহ অত্মসমর্পনের করলে চুরান্ত ভাবে মুক্ত হয় জেলা।

হানাদার মুক্তির খবর শহরবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে আনন্দ উল্লাস আর জয় বাংলার স্লোগানে রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার মানুষ।