মাদারীপুর প্রতিনিধি | আপডেট: বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২৫, ২০২১
সন্ধ্যা
ঘনিয়ে এলেই হালকা কুয়াশা
পড়তে শুরু করে প্রকৃতিতে।
সেই সঙ্গে জ্বলে ওঠে সেতুর বাতিও।
সেতুর পাশে কিছুটা খোলা
জায়গাতেই দাঁড়িয়ে বা বসে সময়
কাটাতে দেখা যায় নানা
বয়সীদের। বাদামের খোসা ছাড়ানো বা
চটপটি-ফুচকার প্লেট হাতে ঘাসের ওপর
বসে বা সেতুর রেলিংয়ে
হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে গল্প
করছেন অনেকেই। তবে সেতুর পাশে
এভাবে দাঁড়িয়ে বা বসে গল্প
করার সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা
রয়েছে বলে জানান যানবাহনের
চালকেরা।
জানতে
চাইলে আড্ডারত ব্যক্তিরা জানান, স্রেফ সময় কাটাতে এখানে
আসা। গরমের সময় নদীর হিমেল
হাওয়া শরীর ও মনকে
প্রফুল্ল রাখলেও শীতের হিমেল হাওয়া কাঁপুনি দেয়। তাই সন্ধ্যার
পর বেশিক্ষণ আর থাকা হয়
না।
সরেজমিনে
দেখা গেছে, শিবচর উপজেলার ভাঙ্গা-যাত্রাবাড়ী এক্সপ্রেসওয়ের আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর
নির্মিত দ্বিতীয় সেতুটিতে সন্ধ্যার পরে যেন সৌন্দর্যের
দ্যুতি ছড়ায়। ঝকঝকে সড়ক এসে মিলেছে
সেতুতে। সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে এলেই জ্বলে
উঠে সেতুর বাতি। এ প্রান্ত থেকে
ও প্রান্ত পর্যন্ত পুরো সেতু হয়ে
উঠে ঝলমলে। এই দৃশ্য দেখতে
সন্ধ্যার পর অনেককেই দেখা
যায় সেতুর পাশের খোলা জায়গায় বসে
আড্ডা দিতে। কেউবা হেঁটে যায় সেতুর পাশ
দিয়ে। সড়ক, সেতু ও
নদীর এই সৌন্দর্য দেখে
মুগ্ধ স্থানীয়রা এবং এই রুটে
যাতায়াতকারী যাত্রীরা।
সংশ্লিষ্ট
সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার
যাত্রাবাড়ী থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা
পর্যন্ত দীর্ঘ এই সড়কে শিবচরের
পাঁচ্চর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত
রয়েছে ২০ কিলোমিটার পথ।
এই বিশ কিলোমিটার পথেই
আড়িয়াল খাঁ নদের মধ্যে
আগেই একটি সেতু ছিল।
২০০৫ সালের দিকে সেতুটির উদ্বোধন
করা হয়েছিল। নামকরণ করা হয়েছিল হাজী
শরিয়তউল্লাহ সেতু। বর্তমানে এই সড়কটি চার
লেনে উন্নীতকরণের ফলে আরেকটি সেতু
নির্মাণ করা হয়েছে। এই
সেতুটির দুটি অংশ রয়েছে।
দুটি অংশে যানবাহন ভিন্নভাবে
যাওয়া-আসা করছে। সন্ধ্যার
পর সড়কবাতি জ্বলে উঠলে পুরো সেতু
ও সড়ক এক মোহনীয়
সৌন্দর্য ধারণ করে।
মো:
রাহাত নামের এক যুবক বলেন,
‘সন্ধ্যার পর মাঝে মধ্যেই
আসি এখানে। কিছু সময় থেকে
চলে যাই। ভালোই লাগে।
অনেকেই আসে। এখানে লোকজনের
আগমনের কারণে অস্থায়ী দোকানও আছে। চটপটি-ফুচকা
বিক্রি হয়। বাদাম, ঝালমুড়ি
বিক্রি করেন অনেকেই।
তবে
এভাবে সেতুর পাশে বসে বা
দাঁড়িয়ে গল্প করে সময়
কাটানোতে ঝুঁকি রয়েছে বলে জানান চালকেরা।
যে কোনো সময় এতে
দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। ব্যস্ততম
সড়কে সন্ধ্যার পর মানুষকে আরও
সতর্ক হয়ে চলাচল করা
উচিত বলেও মনে করেন
সড়কে চলাচলরত বিভিন্ন পরিবহনের চালকেরা। এ ছাড়া সেতুর
পাশে, ওপরে দাঁড়িয়ে অনেকেই
ছবি তোলেন। এতে যে কোনো
সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
শিবচর
হাইওয়ে থানার ওসি গাজী শাখাওয়াত
হোসেন বলেন, বর্তমানে ফেরি চলাচল সীমিত
থাকায় এই সড়কে গাড়ির
চাপ খুব কম। আমাদের
দুটি টিম সার্বক্ষণিক টহল
দিচ্ছে। আর সেতু ও
এক্সপ্রেসওয়ে দৃষ্টিনন্দন হওয়ায় এই স্থান মানুষের
কাছে অবকাশ যাপনের জন্য জনপ্রিয় হয়ে
উঠেছে। তবে কাগজপত্র ও
হেলমেটবিহীন যত্রতত্র মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর আমরা কড়াকড়ি
করছি। এতে গত দুই
মাসে শিবচর হাইওয়েতে তেমন কোনো দুর্ঘটনা
নেই। একটা শৃঙ্খলার মধ্যে
আসছে।