ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, অক্টোবর ১৯, ২০২৪ |

EN

এবার হাওরে হবে উড়ালসড়ক

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: রবিবার, অক্টোবর ২৪, ২০২১

এবার হাওরে হবে উড়ালসড়ক

হাওরবেষ্টিত কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামএ তিন উপজেলাকে যুক্ত করে নির্মাণ করা হয়েছে প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়ক। কিন্তু কিশোরগঞ্জ সদর থেকে এ তিন উপজেলায় যেতে কোনো সড়কব্যবস্থা নেই। ফলে নৌকা বা ছোট ফেরিই একমাত্র ভরসা। তাই কিশোরগঞ্জের নাকভাঙা হয়ে মরিচখালি থেকে মিঠামইন পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দৃষ্টিনন্দন উড়ালসড়ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে যার প্রাথমিক নকশাও চূড়ান্ত হয়েছে।

 

সড়ক যোগাযোগে বরাবরই পিছিয়ে হাওর অঞ্চল। বর্ষায় হাওরে চলার প্রধান মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায় নৌকা। ফলে এই ১৪ কিলোমিটার চার লেনের উড়ালসড়ক হলে প্রায় ৬ লাখ মানুষের যোগাযোগব্যবস্থায় আসবে আমূল পরিবর্তন। বাংলাদেশ সেতু বিভাগ এই সংযোগ প্রকল্পের কাজ করছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগ এবং পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট একত্রে এ প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। বুয়েট এরই মধ্যে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষে প্রাথমিক নকশা চূড়ান্ত করেছে। সেতু বিভাগ প্রাথমিক নকশার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। এখন চলছে বিশদ নকশার পরিকল্পনা।

 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামান বলেন, ‘এ প্রকল্পটি যেহেতু রাষ্ট্রপতির এলাকার। তাই এই উড়ালসড়কের প্রাথমিক নকশাটি আমরা গত সপ্তাহে রাষ্ট্রপতিকে দেখিয়েছি। তিনি সম্মতি দিয়েছেন।

 

২০১২ সালে হাওর নিয়ে মহাপরিকল্পনায় হাত দেয় সরকার। যাতে কিশোরগঞ্জের সঙ্গে দুটি জেলাকে যুক্ত করার কথা বলা আছে। ইটনা থেকে আজমিরীগঞ্জ হয়ে ১৪ কিলোমিটার উড়ালসড়ক যাবে সুনামগঞ্জে। অষ্টগ্রাম থেকে লাখাই ১৮ কিলোমিটার উড়ালসড়ক মিলবে হবিগঞ্জে। কিন্তু কিশোরগঞ্জ সদর থেকে মিঠামইন পর্যন্ত কোনো সংযোগ সড়ক নেই, যা এই হাওর মহাপরিকল্পনার একটা বড় দুর্বল অংশ বলে মনে করেন বুয়েটের বিশেষজ্ঞরা। ফলে কিশোরগঞ্জের সঙ্গে মিঠামইনে যুক্ত করতে ১৪ কিলোমিটার উড়ালসড়ক করা হচ্ছে। বর্তমানে সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলার লোকজন যদি কিশোরগঞ্জে আসতে চায়, তাদের এখন ভৈরব ঘুরে আসতে হয়। তাই এই ১৪ কিলোমিটার উড়ালসড়ক হলে এবং ভবিষ্যতে মিঠামইনের সঙ্গে হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ যুক্ত হলে ৩৫ ভাগ দূরত্ব কমে যাবে।

 

 

পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে দৃষ্টিনন্দন একটি উড়ালসড়কের নকশা করেছে বুয়েট। চূড়ান্ত করা উড়ালসড়কের প্রাথমিক নকশায় দেখা যায়, কিশোরগঞ্জ থেকে শুরুর পথে মরিচখালি বাজারে এবং উড়ালসড়কের শেষ প্রান্তে মিঠামইনে মোট দুটি গোলচত্বর হবে। উড়ালসড়কে পর্যটকদের জন্য সব সুযোগ-সুবিধা রাখা হচ্ছে।

 

এই উড়ালসড়কের নকশার মূল পরিকল্পনাকারী বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘উড়ালসড়কটি সোজা না করে দৃষ্টিনন্দন অর্ধচন্দ্রাকার আকৃতির করা হয়েছে। এতে করে দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে। এটাকে আমি প্রকল্প হিসেবে দেখছি না, একটি গবেষণা হিসেবে নিয়েছি। হাওরের মানুষ যোগাযোগব্যবস্থায় অনেক কষ্ট করে। এটি হলে তাদের জন্য নির্বিঘ্ন যোগাযোগব্যবস্থা তৈরি হবে। এখানে যে অবকাঠামোগুলো তৈরি করা হচ্ছে তা ১০০ বছরের পরিকল্পনা ভেবে করা হচ্ছে। হাওর এলাকার জন্য উড়ালসড়ক সবচেয়ে উপযোগী। এর ফলে হাওরের পানিপ্রবাহ ঠিক থাকবে। কিন্তু হাওরে মাটি ভরাট করে যদি সড়ক করা হয় তাহলে পানির প্রবাহ কমে যাবে।