ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, অক্টোবর ১৯, ২০২৪ |

EN

সিলেটে টিকা না দিয়েও মিলছে সনদ

জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: শনিবার, অক্টোবর ৯, ২০২১

সিলেটে টিকা না দিয়েও মিলছে সনদ
সিলেটে টিকা না দিয়েও টাকার বিনিময়ে সনদ বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই সনদ জালিয়াতির সঙ্গে সিটি করপোরেশনের এক কর্মী ও বাইরের একটি দালাল চক্র জড়িত বলে জানা গেছে। এই চক্রের টার্গেট প্রবাসীরা। একেকটি সনদের জন্য নেওয়া হয় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। টিকার সনদ জালিয়াতির অভিযোগে সিসিকের এক কর্মীকে আটকও করেছে পুলিশ। তবে তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ না দেওয়ায় জামিনে ছাড়া পান তিনি। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিলেট সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগে কাজ করা রাহাত হোসেন নামের এক কর্মী এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে বাইরের একটি দালাল চক্রের। তারা মূলত প্রবাসীদের টার্গেট করে ভ্যাকসিন না দিয়েও টিকার সনদ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা নিত। পরে রাহাতের মাধ্যমে সনদ পাওয়ার ব্যবস্থা করত দালালেরা। 

রাহাত হোসেন মাস্টার রোলে নিয়োগের মাধ্যমে সিসিকের স্বাস্থ্য বিভাগে কাজ করেন। সেই সুবাদে তাঁর কাছে টিকার সার্ভারের আইডি ও পাসওয়ার্ড ছিল। 

টাকা নিয়ে সনদ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়ার পর স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা তৎপর হন। তাঁরা জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা করেন। এ সময় রাহাত হোসেনের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য পান। রাহাতের সঙ্গে সিসিকের বাইরের আরও কয়েকজনের জড়িত থাকার বিষয়েও তথ্য পান সিসিকের কর্মকর্তারা। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২ অক্টোবর রাহাত হোসেনকে পুলিশের কাছে দেওয়া হয়। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় উপপরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে টাকা নিয়ে টিকার সনদ দেওয়ার অভিযোগ আসছিল। পরে বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য সিসিক মেয়র ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে বলেছি।' 

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, করোনা টিকার সনদ বিক্রি নিয়ে অভিযোগ আসার পর আমাদের কর্মীরা এর সঙ্গে জড়িত কি না, তা অনুসন্ধান করা হয়। এ সময় টিকার সনদ বিক্রি নিয়ে রাহাতের কিছু ভয়েস রেকর্ড আমরা পাই। যেখানে টাকাপয়সার লেনদেনের কথাবার্তাও ছিল। তবে আমাদের জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছে। রাহাতকে নিয়ে সন্দেহ হলে আমরা তাকে পুলিশে দিই। কিন্তু লিখিত অভিযোগ না করায় আটকের দুই দিন পর জামিনে বেরিয়ে আসে সে।'

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরও বলেন, তার বিরুদ্ধে শতভাগ প্রমাণ আমাদের কাছে ছিল না। কিংবা কাউকে সনদ দেওয়ার প্রমাণও পাওয়া যায়নি, যার কারণে আমরা লিখিত অভিযোগ দিইনি। তবে মেয়র পুলিশ-প্রশাসনকে এ বিষয়ে তদন্তের অনুরোধ করেছেন। এ ঘটনায় রাহাতকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন।'

এ ব্যাপারে মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বি এম আশরাফ উল্লাহ তাহের বলেন, গত ২ অক্টোবর করোনা টিকার সনদ জালিয়াতির অভিযোগে সিসিকের একজনকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়। পুলিশ তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। কিন্তু সিসিক কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তাই তাঁকে এসএমপি অ্যাক্টে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। পরে রাহাত জামিনে বের হন।

উল্লেখ্য, গত ১৩ আগস্ট সিলেট সিটি করপোরেশনের টিকার সার্ভার হ্যাক করে শতাধিক মানুষকে মডার্নার প্রথম ডোজ টিকা নিতে মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ পাঠানো হয়। এমন ম্যাসেজে বিড়ম্বনায় পড়েন টিকাপ্রত্যাশী শতাধিক মানুষ। এ ঘটনায় সিসিকের পক্ষ থেকে কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।