কপ২৭ সম্মেলনের মাঝে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বিক্ষোভ চলছে দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপের দেশ পর্তুগালে। শনিবার (১২ নভেম্বর) দেশটির রাজধানী লিসবনে রাস্তায় নামেন শত শত বিক্ষোভকারী। এসময় আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে পড়ে ভবনের পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান অর্থমন্ত্রী অ্যান্তেনিও কোস্তা ই সিলভা।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় ব্যর্থ তিনি এমন অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। একই সঙ্গে দূষণকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার সখ্যতার অভিযোগ উঠেছে। ফলে আন্দোলনকারীরা দেশটির অর্থমন্ত্রী অ্যান্তেনিও কোস্তা ই সিলভার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন।
জানা গেছে, শনিবার সকাল থেকেই রাস্তায় নামেন শত শত বিক্ষোভকারী। মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণের সময় একটি সরকারি ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। সেখানে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন অর্থমন্ত্রী অ্যান্তেনিও কোস্তা ই সিলভা। এসময় তার পদত্যাগের দাবিতে ভবনটির সামনেই স্লোগান দিতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। পরে ভবনের ভেতর ঢুকে পড়েন অনেকেই। ঘটে ভাঙচুরের ঘটনা।
দেশটির পুলিশ আন্দোলনকারীদের থামাতে ব্যর্থ হয়। পর্তুগিজ সম্প্রচার মাধ্যম আরটিপি জানিয়েছে, এসময় অর্থমন্ত্রী পেছনের দরজা দিয়ে ভবন থেকে পালিয়ে যান।
তবে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি অর্থমন্ত্রী অ্যান্তেনিও কোস্তা ই সিলভা।
পর্তুগালের মানুষ এমন সময় বিক্ষোভ করছে যখন জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে মিশরে দুশোটির মতো দেশের প্রধান, কৌশলী ও প্রতিনিধিরা কপ২৭ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বিশ্বনেতারা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে পরিবেশবাদীরা বলছেন, কপ২৭ সম্মেলন থেকে কোনও সমাধান আসবে না।
পেদ্রো ফ্রাঙ্কো নামে ২৭ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী বলেন, কপ২৭ সম্মেলন জলবায়ু পরিবর্তনের সংকট মোকাবিলার ওপর ভিত্তি করে সাজানো হয়নি কারণ সেখানে আরও বেশি সুশীল সমাজ, জ্বালানি ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা দরকার।
জোয়াও দুয়ার্তে, নামে ২৩ বছর বয়সী আরও এক আন্দোলনকারী বলেন, রাজনৈতিক এজেন্ডার শীর্ষে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুকে রাখার পরিবর্তে বড় কোম্পানিগুলোর ‘আর্থিক স্বার্থের’ পক্ষে থাকার কথা বলছেন নীতিনির্ধাকরা। যতক্ষণ সরকারের ওই কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকবে ততক্ষণ কোনও পরিবর্তন ঘটবে না।
পর্তুগিজের পরিবেশবাদী গ্রুপ কোয়ার্কাসের ভাইস-প্রেসিডেন্ট মার্তা লিয়ান্দ্রো লিসবনে বিক্ষোভে অংশ নিয়ে বলেন, ‘পরিস্থিতি গুরুতর ও জরুরি। এই দশকে আমরা যা কিছু করি বা না করি তা জলবায়ু নিরাপত্তার ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলবে’।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স