ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বুধবার, জুলাই ৩, ২০২৪ |

EN

সৌদি আরবে হামলার পরিকল্পনার খবর ভিত্তিহীন, দাবি ইরানের

বিশ্ব বাংলা ডেস্ক | আপডেট: বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ৩, ২০২২

সৌদি আরবে হামলার পরিকল্পনার খবর ভিত্তিহীন, দাবি ইরানের

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গত মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, ইরান শিগগিরই সৌদি আরবের বিভিন্ন লক্ষ্যে হামলা চালাতে পারে। আর এমন গোয়েন্দা তথ্য সৌদি আরবই যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছে।

তবে ইরান এই খবরকে ভিত্তিহীন এবং উস্কানিমূলক বলে দাবি করেছে। ইরান বলেছে, তাদের বিরুদ্ধে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের অংশ হিসেবে এ ধরনের প্রচারণা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানয়ানি বলেন, সুনির্দিষ্ট কিছু পশ্চিমা ও ইহুদিবাদী গণমাধ্যম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের বিরুদ্ধে বিষবাষ্প ছড়ানোর অশুভ উদ্দেশ্যে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। আর এসব করা হচ্ছে এমন একটি সময়ে যখন প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের সুসম্পর্ক ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে।

এক বিবৃতিতে কানয়ানি আরো বলেন, ইরান পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে তার প্রতিটি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার নীতি গ্রহণ করেছে এবং এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতিকে মাণদণ্ড ধরা হয়েছে।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরো বলেন, তার দেশ মনে করে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে এ অঞ্চলের দেশগুলোই এখানকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম। এ অঞ্চলের নিরাপত্তার স্বার্থেই ইরান প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল মঙ্গলবার খবর দিয়েছিল যে, ইরান অচিরেই সৌদি আরবের কিছু লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাবে- সম্প্রতি এমন গোয়েন্দা তথ্য ওয়াশিংটনকে সরবরাহ করেছে রিয়াদ। সৌদি কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, ইরান সৌদি আরবে ও ইরাকি শহর এরবিলে হামলা করতে চায়। এরবিলে মার্কিন সেনাদের অবস্থান আছে।

ইরানের একজন সেনা কমান্ডার তার দেশে গোলযোগ উস্কে দেয়ার জন্য আমেরিকা, ইহুদিবাদী ইসরাইল ও সৌদি আরবকে দায়ী করে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করার পর মার্কিন দৈনিকটি ওই খবর দেয়।

ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসির প্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি সম্প্রতি ইরানে গোলযোগ উস্কে দেয়ার কাজে সৌদি সরকারের অর্থে পরিচালিত ফার্সি ভাষার টিভি চ্যানেলগুলোর বিরুদ্ধে সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেছিলেন, তাদেরকে এজন্য মূল্য দিতে হবে।

চলিত বছর বেশ কয়েকটি ঘটনার পর এরবিলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। মার্চে ইরাকি শহরটিতে ডজন খানেক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল দেশটি আর সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকে আরও ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে তারা।

সর্বশেষ হামলাগুলো এরবিলের কাছে তৎপর কুর্দি ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে’ লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে বলে তেহরান দাবি করেছে।

ইরানে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা সরকারবিরোধী বিক্ষোভের জন্য তেহরান বিদেশি শক্তিগুলোকে দায়ী করেছে, বিশেষভাবে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও সৌদি আরবকে।

২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন, ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে, এতে সৌদি আরবেরও সমর্থন ছিল। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানবিরোধী একটি নতুন চক্র গড়ে উঠেছে।

তবে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় উত্তেজনা কমাতে গত বছর তেহরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা শুরু করেছিল রিয়াদ।

সৌদি আরব ২০১৯ সালে তাদের তেল ক্ষেত্রগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছিল, তবে ইরান অভিযোগ অস্বীকার করে।

কয়েক দশক ধরেই নেতৃস্থানীয় সুন্নি শক্তি সৌদি আরব ও শিয়া শক্তি ইরান পরস্পরের শত্রু হয়ে আছে। তারা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে লড়াইরত বিভিন্ন মিত্রকে সমর্থন দেওয়ার মাধ্যমে এক ছায়া যুদ্ধে জড়িয়ে আছে।