ফ্রিডম বাংলা নিউজ

মঙ্গলবার, নভেম্বর ৫, ২০২৪ |

EN

দুই ট্রাক লোহার হদিস পাচ্ছেন না পুলিশ !

পাবনা প্রতিনিধি | আপডেট: মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২

দুই ট্রাক লোহার হদিস পাচ্ছেন না পুলিশ !
গত ১৪ সেপ্টেম্বর রূপপুর থেকে লোহা বোঝাই ৬টি ট্রাক নারায়নগঞ্জের পাগলার উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে দুই ট্রাক লোহা পাবনার মধ্যে ছিনতাই হয়। এখনও ওই দুই ট্রাক লোহা উদ্ধার বা জড়িত কারো হদিস বের করতে পারেনি পুলিশ।

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশপাশে দীর্ঘদিন ধরে লোহা চোর সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে। মাঝেমধ্যেই ট্রাক ভর্তি লোহা চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। ইতোমধ্যে ১০/১২ টি লোহার ট্রাক ছিনতাই হলেও এখনও উদ্ধার হয়নি একটাও। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান মেসার্স নিরব অ্যালুমনিয়াম স্টোরের পক্ষে তার প্রতিনিধি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কোলাপাড়া গ্রামের আব্দুল হামিদ কোম্পানির পক্ষে  ঈশ্বরদী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, মেসার্স নিরব অ্যালুমনিয়াম স্টোরের নামে গত ১৩ সেপ্টেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান নিকিমট অটোমস্ট্রয়-জেএসসি'র কাছ থেকে ৩৫০ মেট্টিক টন লৌহ স্ক্যাপ ক্রয় করেন। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে তার প্রতিনিধি আব্দুল হামিদ গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে ৬টি ট্রাকযোগে ৭৪ টন ৩১০ কেজি লৌহ স্ক্যাপ লোড করে ডেলিভারি নেন। 

রাত দশটার দিকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বের হয়ে স্থানীয় এনআরবিসি ব্যাংকের সামনে এসে গাড়ীগুলো বাঁধার জন্য দাঁড় করানো হয়। কিছু সময় পরেই অজ্ঞাতনামা কিছু লোকজন এসে চালককে মারধর করে চালকসহ ৬টি ট্রাক ছিনতাই করে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে।

অভিযোগে তিনি বলেন, অনেক খোঁজখবর করে পরেরদিন ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল আটটার দিকে পাবনা সদরের গাছপাড়া পেট্টোল পাম্পের সামনে মালামাল ভর্তি ৪টি ট্রাকের সন্ধান পাওয়া যায়। কিন্তু আরও দুটি ট্রাকের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। ছিনতাই হওয়া ওই ট্রাক দু'টির চালক হলেন, আলতাব হোসেন (ট্রাক নং ঢাকা মেট্টো-ট-১৮-৪২৫১) ও কাওছার আলী (ট্রাক নং ঢাকা মেট্টো-ট ১৫-৫৫৫৬)।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর প্রতিনিধি আব্দুল হামিদ কালের কন্ঠকে বলেন, পাবনা সদরের গাছপাড়া পেট্টোল পাম্পের কাছে থাকা ছিনতাইকৃত মালামাল ভর্তি ৪টি ট্রাক পাবনা সদর থানা পুলিশ ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতার তৎপরতায় উদ্ধার করা হয়। তবে এখনও মালভর্তি দুই ট্রাকের সন্ধান বের করতে পারেনি ঈশ্বরদী থানা পুলিশ।

তার অভিযোগ, এর আগেও রূপপুর প্রকল্পের আশপাশে বেশ কয়েকটি লোহা ভর্তি ট্রাক ছিনতাই বা গায়েব হয়ে গেলেও সেগুলো উদ্ধার হয়নি। এই লোহা চোর সিন্ডিকেটের কারণে সাধারণ ব্যবসায়ীরা নিরাপদে ব্যবসা করতে পারছেন না। ওই সিন্ডিকেট চক্রের সাথে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে, ওইদিন ঘটনাস্থলে থাকা পাবনা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিয়াউর রহমান (বর্তমানে ইনচার্জ, দুবলিয়া পুলিশ ক্যাম্প) কালের কন্ঠকে বলেন, ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে আমরা খবর পেয়েছিলাম অবৈধভাবে লোহা ভর্তি ট্রাক আটক সদরের গাছপাড়ায় করা হয়েছে। সেখানে গিয়ে গাড়ির সকল কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে দেখি মালগুলো বৈধ। পরে মালামালসহ ট্রাকগুলো তাদের বুঝিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া দুই ট্রাক গায়েব বা ছিনতাই হওয়ার বিষয়টি জানা নেই।

এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে কালের কন্ঠকে বলেন, চালকদের মোবাইল নাম্বার বন্ধ থাকায় তাদের শনাক্ত করতে একটু সময় লাগছে।

মাঝে মধ্যেই লৌহ স্ক্যাপ চুরির ঘটনা ঘটছে এমন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রূপপুর প্রকল্প ঘিরে দেশী-বিদেশী নানা প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এর মধ্যেই কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটছে। তবে সদ্য ছিনতাই হওয়া দু'টি ট্রাকের অনুসন্ধানের পর দেখা যাক কারা কিভাবে এ ঘটনা সাথে জড়িত, সেটা উন্মোচন করা যায় কিনা। এ ধরণের ঘটনার পূনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে পুলিশ সচেষ্ট বলে দাবী এই পুলিশ কর্মকর্তার।