জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে নিয়ে কটুক্তি সংবলিত একটি ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে বহিষ্কারের দাবীতে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এসময় বিক্ষোভ কারীরা বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘন্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এর ফলে মহাসড়কের দু’পাশে শত শত গাড়ী আটকা পড়ে এবং কয়েক হাজার যাত্রী চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে। আজ বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে টঙ্গীর কলেজ গেইট, চেরাগআলী, স্টেশন রোড, বাটা গেইট এলাকায় এই বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করা হয়।

এসময় বিক্ষোভকারীরা মেয়রের বহিষ্কাররে দাবীতে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দেন সাবেক কাউন্সিলর মো: সেলিম মিয়া ও ৫২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল আলীম মোল্লাসহ নেতাকর্মীরা।

এসময় তারা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে নিয়ে কটুক্তিকারী ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে মন্তব্যকারী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বহিষ্কাররে দাবী জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের একটি ভিডিও বক্তব্য পোস্ট করা হয়। ৪ মিনিট ৪ সেকেন্ডের এ ভিডিওর শুরুতে দেখা যায় মেয়র জাহাঙ্গীর আলম চেয়ারে বসে আছেন। পাশ থেকে তা গোপনে ধারণ করা হয়েছে। কয়েক সেকেন্ড পরে ভিডিওতে জাহাঙ্গীরের ছবি দেখা যায়নি। শুধু কথা শোনা যায়। সেখানে মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত ৩০ লাখ শহীদ, প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এড. আজমত উল্লা খান বিষয়ে কিছু খোলামেলা কথা বলতো শোনা যায়।

ঐ ভিডিওতে মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে আরো বলতে শোনা যায়, ‘ভাওয়ালের রাজার ৩৫ হাজার একর সম্পত্তি ছিল। আমি রাসেল সাহেবকে এ কারণেই ফেলছি। আমি চাইছি সে ভুল করুক। পলিসি ডায়ালগে সে ভুল করুক। আজমত উল্লাহ আমাকে মারার জন্য লোক ভাড়া করেছে। এখন সে আমার কর্মী হয়েছে’ ইত্যাদি।

এ ব্যাপারে এক ভিডিও বার্তায় মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ফেসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে আমার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এবং আমার নাম সেখানে জড়িয়ে বিভিন্ন মিথ্যা ও বানোয়াট কথা তারা ছেড়েছে।

এখানে মাননীয় মন্ত্রী, আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার নাম ধারণ করে আমাকে কিভাবে ছোট করা যায় বা হেয় করা যায়, সেই অপকৌশল হিসেবে আমার প্রতিপক্ষরা আমার বিভিন্ন কথা এডিট করে এবং নকল করে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করে। আমি অত্যন্ত দু:খের সাথে বলছি যারা এধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত, যারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনা, দেশ তথা গাজীপুরের সকল উন্নয়ন কাজে সহযোগিতা করেছে সেই মুহুর্তে সরকারকে, আমাকে এবং আওয়ামীলীগকে এবং আমাদের নেতৃত্বকে বিভিন্ন অপজিশন পার্টির কাছে প্রশ্নের সম্মুখীন করার জন্য বিভিন্ন অপকৌশল তৈরি করেছে। আমি তার তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি বলেন, আমার অস্তিত্ব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়, তার নাম শুনে ও ছবি দেখে এবং তাকে অনুসরণ করে ছাত্রজীবন থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগে ও তার পর বাংলাদেশ আওয়ামীলীগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাজীপুর সিটির মেয়র হিসেবে নির্বাচন করার জন্য আমাকে দোয়া দিয়েছেন। গাজীপুরের সকল মানুষের এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সকলের সহযোগিতায় আমি মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে এই শহর করার জন্য সহযোগিতা করেছেন।

সেই জন্য উন্নয়ন যেন ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার জন্য একটি অপমহল ও বিরোধীদলের উস্কানির পাঁয়তারার মধ্যে পড়ে আমাদের শহর এবং আমাদের আওয়ামীলীগকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য আমার অস্তিত্ব আমার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যাচার করছে। সেই জন্য আমি আবারো তীব্র নিন্দা জানাই।

যারা যারা এই অন্যায় কাজ করছে বিজ্ঞ আইনজীবীদের সহযোগিতা নিয়ে আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। যারা মিথ্যা ও অপপ্রচারে লিপ্ত আছেন আমি তাদেরকে অনুরোধ করবো এসব মিথ্যা অপপ্রচার ডিলেট করে দিন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আমাদের স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ সকলের সহযোগিতায় একটি সুন্দর শহর গড়ে তুলি। আসুন আমরা কাজ করি, এখন কাজের সময়। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করতে চাই।