জাতীয় পার্টিতে (জাপা) আবারও ভাঙনের সুর বাজছে। হঠাৎ করেই মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ দলের দশম কাউন্সিল ডেকেছেন। তবে জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের দাবি, কাউন্সিল ডাকার কোনো এখতিয়ার রওশনের নেই। এদিকে, অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে রওশন এরশাদের পরিবর্তে জিএম কাদেরকে বিরোধী দলীয় প্রধান করার জন্য স্পিকারের কাছে চিঠি দিয়েছে দল।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি তার জীবদ্দশায়ই ভেঙেছে কয়েক দফা। তার মৃত্যুর পরও দলের সেই ভাঙন, দ্বন্দ্ব, মতবিরোধ আর কাদা-ছোড়াছুড়ি থামেনি। এরশাদের মৃত্যু পর বারবার দলের কর্তৃত্ব নিয়ে রওশন-জিএম কাদের দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। তবে বরাবরই দলের শীর্ষ নেতারা তা অস্বীকার করেছেন।
সবশেষ দলের কাউন্সিল ঘোষণা নিয়ে আবারও আলোচনায় এরশাদের জাতীয় পার্টি। মঙ্গলবার দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জাতীয় সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সম্মেলন ডাকার এখতিয়ার রওশনের নেই বলে জানান তিনি। দল থেকে বহিষ্কৃতরা রওশন এরশাদকে দিয়ে জাতীয় পার্টিকে ভাঙার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন দলটির চেয়ারম্যান।
জি এম কাদের বলেন, ‘অসুস্থতার কারণে রওশন এরশাদের শারীরিক অবস্থা এমন হয়েছে যে, তিনি এখন শারীরিক ও মানসিকভাবে অন্যের ওপর নির্ভর হয়ে পড়েছেন। তাই তিনি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না। সেই সুযোগ নিয়ে কিছু মানুষ তাকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছে, যা আমাদের দলের জন্য ক্ষতিকর, সার্বিকভাবে দেশের জন্যও ক্ষতিকর।’
এদিকে, জিএম কাদেরকে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা করতে দলের ২৬ সংসদ সদস্যের মধ্যে ২৩ জনের স্বাক্ষর করা একটি চিঠি স্পিকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। রওশন এরশাদ দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকায় দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতাদের সম্মতিতেই এ চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানান জিএম কাদের।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘কিছু লোকের এজেন্ডা হিসেবে একটা বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলো। এটার তারিখ নির্ধারণ করা হলো আগামী ২৬ নভেম্বর। কিন্তু এটা সম্পূর্ণভাবে আমাদের গঠনতন্ত্র বিরোধী। আমি প্রথমেই সংসদীয় দলের একটা সভা ডাকলাম। আমি কিছু বলিনি। কিন্তু ঘটনাগুলো যখন সবাই শুনলেন, তখন তাদের কাছ থেকেই প্রস্তাব এলো যে, তাকে আর এখন বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে রাখাটা ঠিক হচ্ছে না।’
তিনি আরও জানান, কাউন্সিল ডাকার আগে রওশন এরশাদ দলের কারো সঙ্গেই যোগাযোগ করেননি। আর মেয়াদ শেষ না হওয়ার আগেই কাউন্সিল ঘোষণা করা গঠনতন্ত্রের বাইরে।