ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, অক্টোবর ১৮, ২০২৪ |

EN

অপমৃত্যুর লাশ হস্তান্তরে মির্জাগঞ্জে ওসির ২০ হাজার টাকা ঘুস দাবি

জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: সোমবার, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১

অপমৃত্যুর লাশ হস্তান্তরে মির্জাগঞ্জে ওসির ২০ হাজার টাকা ঘুস দাবি
পটুয়াখালী মির্জাগঞ্জ থানার ওসি মো. মহিবুল্লাহর বিরুদ্ধে অপমৃত্যুকে খুন বলে লাশ হস্তান্তরে স্বজনদের কাছে ২০ হাজার টাকা ঘুস দাবির অভিযোগ উঠেছে। একইসঙ্গে স্বজনদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে ওই থানার এসআই সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদেরও দেখে নেওয়ার হুমকিসহ মামলা দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে বলেছেন এসআই সাইফুল।

জানা গেছে, শনিবার বিকাল সাড়ে চারটায় বরগুনা বেতাগীর হোসনাবাদে মুদি ব্যবসায়ী আবুল বাশার (৪২) আমড়া পাড়তে গিয়ে গাছ থেকে পাকা সড়কে পড়ে গুরুতর আহত হন। স্বজনরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিকটস্থ মির্জাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শুরু হয় লাশ হস্তান্তরে স্বজনদের সঙ্গে পুলিশের টালবাহানা। ফোনে চলে দুই থানার ওসির কথোপকথন। একপর্যায়ে বেতাগী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন মির্জাগঞ্জ থানার ওসিকে জানান, তিনি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে তদন্তে নিশ্চিত হয়েছেন এটি অপমৃত্যু। মির্জাগঞ্জ ওসি চাইলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করতে পারেন। কিন্তু ওসি মহিবুল্লাহ বিষয়টি এড়িয়ে স্বজনদের বলেন, লাশ হস্তান্তরে আইনি জটিলতা আছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে উপস্থিত হন সংবাদকর্মীরা। স্বজনরা জানান, লাশ নিতে হলে ২০ হাজার টাকা দিতে হবে এমনটাই বলেছেন ওসি মহিবুল্লাহ। এর পরপরই ওসি আবার স্বজনদের থানায় ডাকেন ও বলেন, লাশের মাথার আঘাত দেখে মনে হচ্ছে এটি খুন, অপমৃত্যু নয়। এজন্য লাশ ময়নাতদন্তে পাঠাতেই হবে। আমি ডিআইজি স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনিও বিষয়টি জানেন।

নিহত বাশারের দুই স্ত্রী নাজমা ও হাওয়া বেগম ওসিকে বলেন, আমরা টাকা দিতে পারব না বলে লাশ মর্গে নেবেন কেন? একটা দুর্ঘটনাকে আপনারা খুন বলতে পারেন না। স্বামীর লাশ কাটাছেঁড়া করতে দেব না। এই বলে তারা কাঁদতে স্বজনদের নিয়ে চলে আসেন হাসপাতালে। কিছুক্ষণ পরে এসআই সাইফুল লাশ ময়নাতদন্তে নেওয়ার জন্য টানাহ্যাঁচড়া শুরু করেন। স্ত্রীরা বাধা দিলে তাদের মারধর করেন সাইফুল। এ সময় শতাধিক স্বজন এগিয়ে এলে লাশ মেঝেতে ফেলে দিয়ে তিনি শুরু করেন এলোপাতাড়ি মারধর। আটক করেন ৩ স্বজনকে।

নিহতের ছোটভাই শাহাদাৎ বলেন, মির্জাগঞ্জ থানার ওসি আমাদের বেতাগী থানায় যেতে বলেন। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন। চলে আসি বাড়ি। বেতাগী থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, মির্জাগঞ্জ থানায় যান। আমরা বলে দিয়েছি, গেলেই লাশ দিয়ে দেবে। ওসি মহিবুল্লাহ তখন বলেন, বেতাগী থানার পুলিশ লাগবে লাশ হস্তান্তরে। পুনরায় যাই বেতাগী থানায়। পুলিশ এলে তাদের মধ্যে কথাবার্তা হওয়ার পর তারাও চলে যায়। আমাদের আবার ডাকা হয় মির্জাগঞ্জ থানায়। পরে বলে, লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়া নিতে হলে ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। টাকা দিতে না চাইলেই বলে, এটি অপমৃত্যু না। এটি পরিকল্পিত খুন। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পাবেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে রাত ২টায় কয়েকটি সাদা কাগজে আমাদের স্বাক্ষর রেখে লাশ হস্তান্তর করেন। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।

বেতাগী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, আমরা জানানোর পরও কেন মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশ লাশ হস্তান্তরে গড়িমসি করেছে, কী আইনি জটিলতা ছিল এ ব্যাপারে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই।

অভিযোগের ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ থানার ওসি মহিবুল্লাহ জানান, আটক ৩ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। টাকা দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, চা খেতে আসুন। ফোনে আর কী বলব! রাত তো ঘুমের সময় ভাই।অপমৃত্যুর লাশ হস্তান্তরে মির্জাগঞ্জে ওসির ২০ হাজার টাকা ঘুস দাবি
 
পটুয়াখালী মির্জাগঞ্জ থানার ওসি মো. মহিবুল্লাহর বিরুদ্ধে অপমৃত্যুকে খুন বলে লাশ হস্তান্তরে স্বজনদের কাছে ২০ হাজার টাকা ঘুস দাবির অভিযোগ উঠেছে। একইসঙ্গে স্বজনদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে ওই থানার এসআই সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদেরও দেখে নেওয়ার হুমকিসহ মামলা দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে বলেছেন এসআই সাইফুল।

জানা গেছে, শনিবার বিকাল সাড়ে চারটায় বরগুনা বেতাগীর হোসনাবাদে মুদি ব্যবসায়ী আবুল বাশার (৪২) আমড়া পাড়তে গিয়ে গাছ থেকে পাকাসড়কে পড়ে গুরুতর আহত হন। স্বজনরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিকটস্থ মির্জাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শুরু হয় লাশ হস্তান্তরে স্বজনদের সঙ্গে পুলিশের টালবাহানা। ফোনে চলে দুই থানার ওসির কথোপকথন। একপর্যায়ে বেতাগী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন মির্জাগঞ্জ থানার ওসিকে জানান, তিনি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে তদন্তে নিশ্চিত হয়েছেন এটি অপমৃত্যু। মির্জাগঞ্জ ওসি চাইলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করতে পারেন। কিন্তু ওসি মহিবুল্লাহ বিষয়টি এড়িয়ে স্বজনদের বলেন, লাশ হস্তান্তরে আইনি জটিলতা আছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে উপস্থিত হন সংবাদকর্মীরা। স্বজনরা জানান, লাশ নিতে হলে ২০ হাজার টাকা দিতে হবে এমনটাই বলেছেন ওসি মহিবুল্লাহ। এর পরপরই ওসি আবার স্বজনদের থানায় ডাকেন ও বলেন, লাশের মাথার আঘাত দেখে মনে হচ্ছে এটি খুন, অপমৃত্যু নয়। এজন্য লাশ ময়নাতদন্তে পাঠাতেই হবে। আমি ডিআইজি স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনিও বিষয়টি জানেন।

নিহত বাশারের দুই স্ত্রী নাজমা ও হাওয়া বেগম ওসিকে বলেন, আমরা টাকা দিতে পারব না বলে লাশ মর্গে নেবেন কেন? একটা দুর্ঘটনাকে আপনারা খুন বলতে পারেন না। স্বামীর লাশ কাটাছেঁড়া করতে দেব না। এই বলে তারা কাঁদতে স্বজনদের নিয়ে চলে আসেন হাসপাতালে। কিছুক্ষণ পরে এসআই সাইফুল লাশ ময়নাতদন্তে নেওয়ার জন্য টানাহ্যাঁচড়া শুরু করেন। স্ত্রীরা বাধা দিলে তাদের মারধর করেন সাইফুল। এ সময় শতাধিক স্বজন এগিয়ে এলে লাশ মেঝেতে ফেলে দিয়ে তিনি শুরু করেন এলোপাতাড়ি মারধর। আটক করেন ৩ স্বজনকে।

নিহতের ছোটভাই শাহাদাৎ বলেন, মির্জাগঞ্জ থানার ওসি আমাদের বেতাগী থানায় যেতে বলেন। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন। চলে আসি বাড়ি। বেতাগী থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, মির্জাগঞ্জ থানায় যান। আমরা বলে দিয়েছি, গেলেই লাশ দিয়ে দেবে। ওসি মহিবুল্লাহ তখন বলেন, বেতাগী থানার পুলিশ লাগবে লাশ হস্তান্তরে। পুনরায় যাই বেতাগী থানায়। পুলিশ এলে তাদের মধ্যে কথাবার্তা হওয়ার পর তারাও চলে যায়। আমাদের আবার ডাকা হয় মির্জাগঞ্জ থানায়। পরে বলে, লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়া নিতে হলে ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। টাকা দিতে না চাইলেই বলে, এটি অপমৃত্যু না। এটি পরিকল্পিত খুন। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পাবেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে রাত ২টায় কয়েকটি সাদা কাগজে আমাদের স্বাক্ষর রেখে লাশ হস্তান্তর করেন। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।

বেতাগী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, আমরা জানানোর পরও কেন মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশ লাশ হস্তান্তরে গড়িমসি করেছে, কী আইনি জটিলতা ছিল এ ব্যাপারে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই।

অভিযোগের ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ থানার ওসি মহিবুল্লাহ জানান, আটক ৩ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। টাকা দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, চা খেতে আসুন। ফোনে আর কী বলব! রাত তো ঘুমের সময় ভাই।