জায়গা সংকটের কারণে বেনাপোল বন্দর থেকে রপ্তানি পণ্য বোঝাই ট্রাক ভারতে প্রবেশ করতে পারছে না। এতে বন্দর এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট।
শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বেনাপোল বন্দর এলাকায় দেখা যায়, ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় শত শত রপ্তানি পণ্য বোঝাই ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। বন্দরে এসব ট্রাক রাখার কোনো টার্মিনাল নেই। তাই বন্দরের হাইওয়ে সড়ক এবং বাইপাস সড়কসহ সব সড়কে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ যানজট। মানুষ চলাচলের রাস্তা পর্যন্ত নেই। ছোট ছোট যানবাহন ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে দাঁড়িয়ে থাকছে। গরমে কষ্ট পাচ্ছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা।
ভারতগামী যাত্রী সুকুমার দেবনাথ জানান, বেনাপোল বাজার থেকে চেকপোস্ট মাত্র পাঁচ মিনিটের রাস্তা। অথচ এই রাস্তার যানজট পেরিয়ে আসতে সময় লেগেছে প্রায় দেড় ঘণ্টা।
স্থানীয় চাকুরজীবী শাহাজান আলী বলেন, দীর্ঘ দেড় বছর পর শিক্ষার্থীদের স্কুল খুলছে। কিন্তু রাস্তায় যানজটের যে ভয়াবহ অবস্থা তাতে বাচ্চারা সঠিক সময়ে স্কুলে যেতে পারবে না।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বন্দরে ইচ্ছা করেই স্থান সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। ভারত প্রতিদিন এ বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে ৪০০ থেকে ৫০০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি করলেও বাংলাদেশি পণ্য নেওয়ার ক্ষেত্রে তারা বরাবরই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। গত চার দিনে রপ্তানি পণ্য নিয়ে অন্তত ৯০০টি ট্রাক বেনাপোল বন্দরে অপেক্ষা করছে ভারতে প্রবেশের জন্য। ভারত প্রতিদিন মাত্র ১৫০ ট্রাক রপ্তানি পণ্য গ্রহণ করছে। অন্যদিকে ভারত প্রতিদিন এই বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে ৪০০ থেকে ৫০০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি করছে।
বেনাপোল ট্রাক-লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহীন জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে সয়াবিনের ভুষি সেই সঙ্গে পাট ও পাটজাত দ্রব্য এবং গার্মেন্টস ঝুট ভারতে রপ্তানি হচ্ছে। প্রতিদিন এসব পণ্য নিয়ে ২৫০-৩০০ ট্রাক বেনাপোল বন্দরে আসছে। এ কারণে বন্দর এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, প্রতিদিন রপ্তানি পণ্য বোঝাই প্রায় ৩০০টি ট্রাক ভারতে প্রবেশের জন্য বেনাপোল আসলও ভারত বন্দরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে মাত্র ১৫০টি ট্রাক।
বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. আজিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য ভারতীয় বন্দর ব্যবহারকারীরা আগামী সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুদেশের কাস্টমস, বন্দর, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রান্সপোর্ট নেতাদের সমন্বয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করবেন। যত দ্রুত সম্ভব এ সমস্যার সমাধান করা হবে।
তিনি আরও জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর কয়েক গুণ বেশি পণ্য রপ্তানি হচ্ছে ভারতে।