ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

ভেস্তে গেল বিএনপির পরিকল্পনা আর জিয়ার কবর ঝড়ে

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: রবিবার, আগস্ট ২৯, ২০২১

ভেস্তে গেল বিএনপির পরিকল্পনা আর জিয়ার কবর ঝড়ে

সেপ্টেম্বর মাস থেকে ধাপে ধাপে আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল বিএনপি। বিএনপির নীতিনির্ধারক সংস্থার স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল যে বৈঠকে লন্ডন থেকে যুক্ত হয়েছিলেন বিএনপি` ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল যে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে বিএনপি আন্দোলন করবে এবং সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করবে। আর লক্ষ্যে বিএনপি সকল রাজনৈতিক দলকে চিঠি দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এছাড়া বিএনপি পাঁচ দফা কর্মসূচি নির্ধারণ করেছিল যে পাঁচ দফা কর্মসূচি দিয়ে ধাপে ধাপে আন্দোলনের কৌশল ঠিক করা হয়েছিল। পাঁচ দফা কর্মসূচির মধ্যে ছিল:

 

. নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনা, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন।

. করোনার ব্যর্থতার জন্য সরকার এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ।

. দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন।

. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবিলম্বে খুলে দেওয়া।

. বিএনপি নেতাদের গুম, খুন, হত্যা বন্ধ করা।

 

কিন্তু এই আন্দোলন নিয়ে এগুতে না এগুতেই বিএনপি নতুন ঝামেলায় পড়লো। জিয়ার কবর ঝড়ে যেন বিএনপির সব পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে বসেছে। গত প্রায় মাস ধরে বিএনপি আওয়ামী লীগের প্রধান টার্গেট হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা প্রতিদিন বিএনপির বিভিন্ন সমালোচনা করছেন এবং এই সমালোচনার মূল্য লক্ষ হলো ১৫ই আগস্ট এবং ২১শে আগস্ট বিএনপির ভূমিকা নিয়ে। এবারই প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ১৫ই আগস্টের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল জিয়াউর রহমান। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এটাও বলা হয়েছে যে, জিয়াউর রহমান আসলে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করেননি বরং তিনি ছিলেন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর।

 

আওয়ামী লীগের তৃতীয় সমালোচনার মূল বিষয় হচ্ছে যে, ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মূল পরিকল্পনা করেছিল তারেক জিয়া। খালেদা জিয়া তারেক জিয়াকে বাঁচানোর জন্য গ্রেনেড হামলা সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত যা ছিল সবকিছু নষ্ট করে দিয়েছিলেন।

 

সম্প্রতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে বলেছেন যে, চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়ার কবর নেই, জিয়ার কবর আসলে কোথাও নেই। ধরনের সমালোচনার ঝাপটায় বিএনপি এলোমেলো এবং বিক্ষিপ্ত হয়ে গেছে। তাদের মূল পরিকল্পনাই ভেস্তে যেতে বসেছে। তাদের এখন প্রধান কাজ হচ্ছে সরকার যে সমস্ত বক্তব্যগুলো দিচ্ছে সেই সমস্ত বক্তব্য খণ্ডন করা। আর এটি করতে যেয়েই বিএনপি হিমশিম খাচ্ছে। ফলে বিএনপি এখন সমালোচনার জবাব দিতে গিয়েই এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে, নতুন কর্মসূচি করবে কি।

 

গত ১২ বছরে এটি প্রথম নয়। যখন বিএনপি একটি ইস্যু নিয়ে আন্দোলনের শুরু করতে যায় তখন অন্য একটি ইস্যু তার কাছে সামনে আসছে এবং বিএনপি অপ্রস্তুত হয়ে যায়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই নিয়ে রাখঢাক করেন নি। আজ তিনি সংবাদ সম্মেলনে সুস্পষ্টভাবে বলেছেন যে, দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নেয়ার জন্যই জিয়ার কবর ইস্যু সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু সেটি যদি হয় তাহলে বিএনপি মূল পরিকল্পনার দিকে এগোয় না কেন। বিএনপির নেতারা বলছেন যে, বিষয়গুলো এত স্পর্শকাতর এবং বিএনপির অস্তিত্বের জন্য জরুরী যে এই বিষয়গুলোকে এড়িয়ে বিএনপির অন্য কিছু করা সম্ভব নয়। এখন আওয়ামী লীগের নেতারা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যে, বিএনপি প্রমাণ করুক যে জিয়ার কবর কোথায় আছে।

 

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা প্রশ্ন করেছেন যে, মৃত্যুর পরে জিয়াউর রহমানের মুখ কেউ দেখেছে কিনা। আর এইসব বিষয়গুলো যদি বিএনপি এড়িয়ে অন্য আন্দোলনের কর্মসূচিতে যায় তাহলে সেটি হবে বিএনপি` জন্য আত্মঘাতী। আবার এটি নিয়ে যদি বিতর্ক শুরু করা হয় তাহলে সেই বিতর্ক এত দীর্ঘমেয়াদি হবে যে এই বিতর্ক নিয়েই বিএনপিকে ব্যস্ত থাকতে হবে। বিএনপি নেতারা নিজেরাই স্বীকার করেছেন, তাদের মধ্যে কথা বলার লোক হাতেগোনা কয়েকজন। এর মধ্যে জিয়ার কবর ইস্যু তাদেরকে বিব্রত করছে। সব মনঃসংযোগ এবং সব কর্মসূচি এই ইস্যুর মধ্যে নিবন্ধিত করার জন্য সরকার বাধ্য করছে। তাহলে কি সরকারের কৌশলের কাছে আবারো হেরে যাচ্ছে বিএনপি?

সৌজন্যে: বাংলাইনসাইডার