ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

অবস্থান পাল্টে চীনে ঝুঁকছে বিএনপি

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: শনিবার, আগস্ট ২৮, ২০২১

অবস্থান পাল্টে চীনে ঝুঁকছে বিএনপি

বিএনপি তার পররাষ্ট্রনীতি কৌশল বদলে ফেলেছে। কিছুদিন আগেও বিএনপি চেয়েছিল যে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে, পশ্চিমা দেশগুলোর আস্থাভাজন হতে। বিশেষ করে ২০১৭ সাল থেকে বিএনপির মধ্যে একটা ভারতমুখী কূটনীতি দৃশ্যমান ছিলো। ভারতের মন গলাতে বিএনপি নেতারা ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু গত তিন মাসে বিএনপির এই অবস্থান পাল্টে গেছে। বিএনপির নেতারা এখন চীনে ঝুঁকেছে। বিএনপির অনেক নেতাই চীনের সঙ্গে গভীর এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য বিভিন্ন রকম উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসে যোগাযোগ করেছেন। এছাড়াও চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বিএনপি নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছে।

 

বিএনপির পুরো পররাষ্ট্রনীতি কৌশল দেখে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এবং সেখান থেকেই তিনি চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছেন বলে ঢাকায় বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন। এর মূল কারণ হলো সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব বৃদ্ধি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য যিনি আন্তর্জাতিক বিষয় দেখাশোনা করেন তিনি জনপ্রিয় অনলাইন সংবাদ মাধ্যম বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছেন যে, বাংলাদেশে আগামী এক দেড় বছরের মধ্যে ভারতের প্রভাব ক্ষুণ্ণ হবে। তিনি বলেন যে, গত এক যুগে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব ছিলো চূড়ান্ত। ভারত যেটা বলতো সেটি হতো।

 

তার মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সম্পর্ক এবং কূটনৈতিক বিষয়টি পুরোপুরি ভারতের উপর ছেড়ে দিয়েছিল। বিএনপির স্থায়ী কমিটির ওই সদস্য উদাহরণ দিয়ে বলেন যে, ভারত যদি সমর্থন না দিতো তাহলে ২০১৪ সালের নির্বাচন করা এবং নির্বাচন করে বছর টিকে থাকা আওয়ামী লীগের জন্য অসম্ভব ছিলো। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের নির্বাচন বিএনপি-জামায়াতসহ অধিকাংশ দল বর্জন করে। কিন্তু তারপরও ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং ওই নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগ সরকার পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় ছিলো। বিএনপির অন্য একজন নেতা বলছেন যে, এবার সেটি সম্ভব হবে না। আর সেটি যেন সম্ভব না হয় সেজন্যই বিএনপি এখন চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক করার উদ্যোগ গ্রহণ করছে।

 

বিএনপি` আরেকজন স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন যে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমরা যাইনি। আওয়ামী লীগ একতরফা ভোটারবিহীন নির্বাচন করে ক্ষমতায় এসেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমরা বিনা শর্তে আত্মসমর্পণ করেছি। সেখানে রাতের ভোটে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু আগামী নির্বাচনে দুটির একটিও হবে না বলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মনে করেন। তার মতে, যে ভারত এবার যদি একতরফা নির্বাচনকে সার্টিফিকেট দেয় সেটা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না এবং আন্তর্জাতিক মহলেও তা গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। তার মধ্যে ওই নির্বাচনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আওয়ামী লীগ ভুল বুঝিয়েছিল। তারা বলেছিল যে, নির্বাচন সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। নির্বাচনের পরপরই তারা আরেকটি নির্বাচন দেবে কিন্তু বাস্তবে সেটি তারা করেনি। আর তখন ভারতের যে প্রভাব বাংলাদেশের রাজনীতিতে ছিলো সেই প্রভাব এখন নেই। কাজেই আওয়ামী লীগ যদি মনে করে যে বিএনপিকে বাদ দিয়ে আগামী নির্বাচন করবে সেটি সম্ভব নয়। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এটাও মনে করছেন যে, আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে এভাবে নিয়ে আসা হবে না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি সহ বিএনপির দাবি না মেটানো হলে বিএনপি আগামী আর কোনো নির্বাচনেই অংশগ্রহণ করবে না। এর ফলে আওয়ামী লীগের জন্য গ্রহণযোগ্য নির্বাচন একটি চ্যালেঞ্জ হবে বলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মনে করেন। আর বিএনপির এই নির্বাচন ইস্যুতে যেন চীন নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকে সেটি বিএনপির এখন কৌশল এবং এই কারণে চীনের সঙ্গে একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করছে বিএনপির নেতারা।

সৌজণ্যে: বাংলাইনসাইডার