নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: শুক্রবার, আগস্ট ২৭, ২০২১
মোটরসাইকেল
বা সমমূল্যের রিফান্ড দাবিতে রাজধানীর গুলশানে ই-কমার্স সাইট
ই-অরেঞ্জ কার্যালয়ের সামনের সড়ক থেকে জাতীয়
প্রেস ক্লাবে গিয়ে আন্দোলন করছেন
ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। শুক্রবার (২৭ আগস্ট) দুপুর
১২টার দিকে কয়েক’শ
গ্রাহক প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ করেন।
তাদের
কয়েকজনের ভাষ্য, ক্রিকেটার মাশরাফির বিজ্ঞাপনে আস্থা রেখে তারা টাকা
বিনিয়োগ করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
কেন এতদিন ই-অরেঞ্জের ব্যাংক
হিসাব তদারকি করেনি, এর জবাব চেয়েছেন
তারা।
জানা
গেছে, গ্রাহকরা আজ সকাল সাড়ে
১০টার দিকে গুলশানে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির অফিসের সামনের সড়কে বিক্ষোভ মিছিল
শুরু করেন। শতাধিক গ্রাহকের বিক্ষোভে গুলশানের ১৩৬/১৩৭ নম্বর
সড়কে যান চলাচল বন্ধ
হয়ে যায়। তারা বিক্ষোভ
মিছিলের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে গুলশানের বিভিন্ন
সড়কে শোডাউনও করেন।
ফাহিম
নামের এক গ্রাহক বলেন,
‘আমাদের প্রত্যেকে লাখ লাখ টাকা
বিনিয়োগ করেছি। এগুলো কীভাবে ফেরত পাব তা
নিশ্চিতভাবে বলা হচ্ছে না।
আমি ই-অরেঞ্জের একজন
ভুক্তভোগী গ্রাহক। ই-অরেঞ্জ ডট
শপ লাখো গ্রাহকের অর্থ
নিয়ে পণ্য না দিয়ে
গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছে।’
এ
বিষয়ে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান
বলেন, ‘আমরা আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে
সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি।’
ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের করা ১ হাজার
১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ
মামলার প্রাথমিক তদন্তে অন্তত ৪৫০ কোটি টাকার
গরমিল পাওয়া গেছে। এ টাকা কোন
খাতে গেছে, তা খতিয়ে দেখছে
গুলশান থানার পুলিশ।
তদন্তে
ই-অরেঞ্জের ২টি ব্যাংক হিসাবকে
গুরুত্ব দিচ্ছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এ বিষয়ে মামলার
প্রধান ৩ আসামি ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর
রহমান ও চিফ অপারেটিং
অফিসার (সিওও) আমানউল্লাহ চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এরই
মধ্যে এ ৩ জনকে
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিন
করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি
দিয়েছে আদালত।
মামলার
তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আগে ব্যাংক
দুটির স্টেটমেন্ট যাচাই করছি। সেগুলো বিশ্লেষণ করে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ
করব।’
তদন্ত
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বর
থেকে চলতি বছরের জুন
পর্যন্ত ই-অরেঞ্জের সিটি
ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে ৬২০
কোটি ৬৭ লাখ ২০
হাজার ৭২৯ টাকা। আর
এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত
ব্র্যাক ব্যাংকে প্রতিষ্ঠানটির আরেকটি হিসাবে জমা পড়ে ৩৯১
কোটি ৬৭ লাখ ৬১
হাজার ৮৭৯ টাকা।
এ
টাকার পুরোটাই গ্রাহকদের বলে মনে করছেন
তদন্তকারীরা। অ্যাকাউন্ট দুটির স্টেটমেন্ট বলছে, জমা হওয়ার টাকা
থেকে উত্তোলন করা ৬৫৮ কোটি
৯১ লাখ টাকা গেছে
৪ টি বাইক বিক্রির
প্রতিষ্ঠানে। এরা ই-অরেঞ্জের
সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ভেন্ডর। বাকি টাকা ই-অরেঞ্জের মালিকসহ নানান ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে
বিভিন্ন সময়ে তোলা হয়েছে।