ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

নতুন সিইসি নিয়ে দৌড়ঝাঁপ

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: শুক্রবার, আগস্ট ২৭, ২০২১

নতুন সিইসি নিয়ে দৌড়ঝাঁপ

বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনদের মেয়াদ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হয়ে যাচ্ছে। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আগামী মাসে সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে একটি সার্চ কমিটি গঠন করতে পারে। রাষ্ট্রপতি এই সার্চ কমিটি গঠন করে। সার্চ কমিটি একাধিক প্রার্থী যাচাই-বাছাই করে শেষ পর্যন্ত একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রেরণ করেন। এদের মধ্যে থেকে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য কমিশনারদেরকে নিয়োগ প্রদান করেন। তবে সার্চ কমিটি কিংবা সংক্ষিপ্ত তালিকা ইত্যাদির আগেই কয়েকজন আমলার নাম শোনা যাচ্ছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এর জন্য সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে। এদের কেউ কেউ দৌড়ঝাঁপও করছেন বিভিন্ন মহলে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার হওয়ার আকাঙ্ক্ষাও ব্যক্ত করছেন। আবার সরকারও কয়েকজনের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।

 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে গত কয়েকবার আমলাদেরকেই নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় প্রধান বিচারপতি এম. এ. আজিজকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার দেওয়ার ফলে যে বিতর্ক এবং অনাস্থা তৈরি হয়েছিল তারপর থেকে একজন সরকারের সিনিয়র সচিব পদমর্যাদার ব্যক্তিকেই এই পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচন হয়েছিল শামসুল হুদার নেতৃত্বে। এরপর রকিবুদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে। তারপর থেকে আমলারাই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও আরো দুজন আমলা থাকেন নির্বাচন কমিশনে। একজন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থাকেন, আর একজন থাকেন বিচার বিভাগের একজন সাবেক বিচারপতি। এভাবেই নির্বাচন কমিশন সাজানো হচ্ছে। এবার প্রধান নির্বাচন কমিশন কে হবে এ নিয়ে এখন পর্যন্ত সার্চ কমিটি গঠন করা হয়নি। কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিএনপিও প্রধান নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে এখন রাজনৈতিক দলগুলোকে একাট্টা করতে চাইছে। এখন পর্যন্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যাদের নাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন:

 

আবুল কালাম আজাদ: আবুল কালাম আজাদ প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব, এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর অবসরে গেছেন। তিনি এখন সরকারের কোন দায়িত্বে নেই। তার নাম আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে। তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আলোচনায় আছেন। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, যেহেতু তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন সেজন্য তাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিলে তা বিরোধী দলের কাছে কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না।

 

নজিবুর রহমান: নজিবুর রহমান এনবিআর এর চেয়ারম্যান ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে অবসরে গেছেন। তার নামও আলোচনা হচ্ছে এবং তাকে নিয়েও একই আপত্তি। যেহেতু তিনিও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কাজ করেছেন সেজন্য আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। এ জন্য তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এর জন্য তেমন আলোচিত হবেন না।

 

মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া: মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তারপর তিনি বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। এখন তিনি দেশে আছেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব থাকলেও তার একটি নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি রয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তার নাম তার নাম বেশ আলোচনা হচ্ছে।

 

ড. জাফর আহমেদ খান: ড. জাফর আহমেদ খান সদ্য অবসর নিয়েছেন সংসদ সচিব হিসেবে। যেহেতু তিনি সংসদ সচিবালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন সেজন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তার নামও শোনা যাচ্ছে।

 

সিরাজুল ইসলাম: সিরাজুল ইসলাম স্বাস্থ্য সচিব থেকে অবসরে গেছেন। একজন নিরপেক্ষ এবং সৎ কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর সুনাম রয়েছে। তিনিও প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আলোচনায় আছেন।

 

হেদায়েত আল মামুন: হেদায়েত আল মামুন বাণিজ্য সচিব ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি অর্থ সচিবও হয়েছিলেন। একজন ভালো আমলা হিসেবে তাঁর সুনাম রয়েছে। তাকেও অনেকে মনে করছেন যে, তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হওয়ার জন্য একজন যোগ্য প্রার্থী।

 

তবে এখন পর্যন্ত যেহেতু সার্চ কমিটি গঠন করা হয়নি। কাজেই এসব নামগুলো কেবলই চায়ের আড্ডার আলোচনা ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।

সৌজণ্যে: বাংলাইনসাইডার