ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, অক্টোবর ১৮, ২০২৪ |

EN

‘পানি চেয়ে সিনহার চিৎকার, পা দিয়ে গলা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করেন প্রদীপ’

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: শুক্রবার, আগস্ট ২৭, ২০২১

‘পানি চেয়ে সিনহার চিৎকার, পা দিয়ে গলা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করেন প্রদীপ’

বহুল আলোচিত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন তার সফরসঙ্গী প্রত্যক্ষদর্শী শাহেদুল ইসলাম সিফাত। মামলায় কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনি। সময় টেকনাফের বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশপা দিয়ে গলা চেপে ধরে সিনহার মৃত্যু নিশ্চিত করেনবলে উল্লেখ করেন সিফাত।

 

এদিন আদালতকে তিনি বলেন, গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী গুলি করার পর রাস্তায় ঢলে পড়েন সিনহা। তিনি কাতরানো অবস্থায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে লিয়াকতের সঙ্গে আড়ালে গিয়ে কথা বলেন ওসি প্রদীপ। পরে সিনহার একেবারে কাছে গিয়ে আপত্তিকর ভাষায় গালি দেন এবং পা দিয়ে সিনহার শরীর নাড়িয়ে দেখেন তিনি।

 

তখনো জীবিত সিনহাপানি পানিবলে চিৎকার করলে তার বুকে লাথি মারেন ওসি প্রদীপ। এরপর নিজের পা দিয়ে সিনহার গলা চেপে ধরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন তিনি। পরে তার সফরসঙ্গী সিফাতকে তল্লাশি চৌকির ভেতরে নিয়ে মারধর করেন প্রদীপ, বলেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সিফাত।

 

এর আগে মামলার বাদী সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস আদালতে সাক্ষ্য দেন গত সোমবার। তখন ওসি প্রদীপের নির্দেশে লিয়াকতের গুলিতে সিনহা খুন হন বলে উল্লেখ করেন তিনি। ওই হত্যাকাণ্ডকে পূর্বপরিকল্পিত দাবি করে আদালতের কাছে অভিযুক্ত ১৫ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন সিনহার বোন।

 

১৫ সাক্ষীকে সাক্ষের জন্য তলব করা হলেও মামলার বাদী সফরসঙ্গীর সাক্ষ্য জেরার মধ্য দিয়ে বিচারকাজের প্রথম তিন দিন শেষ হয়েছে। বাকি ১৩ জনের সাক্ষ্য নেয়া সম্ভব না হওয়ায় আগামী - সেপ্টেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্যের জন্য সময় নির্ধারণ করেছেন আদালত।

 

তথ্য নিশ্চিত করে কক্সবাজার জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, মামলাটিতে মোট সাক্ষী রয়েছেন ৮৩ জন। মামলার বাদী প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য জেরার সময় কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন প্রদীপ-লিয়াকতসহ ১৫ আসামি।

 

গত ২৭ জুন সিনহা হত্যা মামলার ১৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালত। টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে গাড়ি তল্লাশিকে কেন্দ্র করে বিতণ্ডার এক পর্যায়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা। পরে গত আগস্ট ঘটনায় নিহতের বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

 

মামলায় বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ (পরিদর্শক) লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি করা হয়। এছাড়া টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়। মামলাটি তদন্ত করার জন্য ্যাবকে আদেশ দেন আদালত। প্রধান আসামি লিয়াকত আলী প্রদীপ কুমার দাশসহ পুলিশ সদস্য গত আগস্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

 

মামলার অন্যতম অভিযুক্ত প্রদীপ কুমারের অন্যতম সহযোগী কনস্টেবল সাগর দেব ঘটনার শুরু থেকেই পলাতক ছিলেন। অবশেষে গত ২৪ জুন আত্মসমর্পণ করেন তিনি।