ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, অক্টোবর ১৮, ২০২৪ |

EN

দেশব্যাপী জেএমবি`র বোমা হামলা: ১৬ বছরেও বিচার হয়নি ৪১ মামলার

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: মঙ্গলবার, আগস্ট ১৭, ২০২১

দেশব্যাপী জেএমবি`র বোমা হামলা: ১৬ বছরেও বিচার হয়নি ৪১ মামলার

১৬ বছর আগে আজকের এই দিনে মুন্সিগঞ্জ বাদে দেশের ৬৩টি জেলায় একযোগে বোমা বিস্ফোরণ ঘটনা ঘটিয়ে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিয়েছিল জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ- জেএমবি। এই ঘটনায় সারা দেশে ১৫৯টি মামলা হয়েছিল। যার মধ্যে এ পর্যন্ত ১০২টি মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে এবং আসামিদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় পুলিশ ইতিপূর্বে ১৬টি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। কিন্তু এই ১৬ বছরেও আগের সেই ঘটনায় করা মামলাগুলোর মধ্যে এখনো ৪১টির বিচার কাজ শেষ হয়নি।

 

উল্লেখ্য যে, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩টি জেলায় এই বোমা হামলায় দুজন নিহত ও ১০৪ জন আহত হন। অন্যান্য জঙ্গি হামলার তুলনায় ক্ষয়ক্ষতি কম হলেও এই ঘটনায় ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে জেএমবি। এরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জেএমবি বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করলে তারা কয়েকটি জেলায় আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায়। অবশ্য এর মাস ছয়েকের মধ্যে জেএমবির সাংগঠনিক নেটওয়ার্ক অনেকটাই ভেঙে যায় জেএমবি`র প্রতিষ্ঠাতা শায়খ আবদুর রহমান এবং শীর্ষস্থানীয় নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাইসহ তখনকার গুরুত্বপূর্ণ সব নেতাদের গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে।

 

২০১৭ সালে শায়খ আবদুর রহমান, বাংলা ভাইসহ শীর্ষ পাঁচ নেতার ফাঁসির রায় কার্যকর হয়। তবে নিষিদ্ধ এই সংগঠনটি দুর্বল হয়ে পড়লেও বিলুপ্ত হয়নি। এরা আইএস মতাদর্শীদের সঙ্গে মিলে নতুন জঙ্গি সংগঠন করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এটাকে বলেছে নব্য জেএমবি। এরা ২০১৬ সালে হোলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ হামলা চালিয়ে দেশি-বিদেশি নাগরিকদের হত্যাকাণ্ড ঘটায়। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক অভিযানে নব্য জেএমবির বেশির ভাগ নেতাই নিহত বা গ্রেপ্তার হন।

 

পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ১৭ আগস্ট বোমা হামলার ঘটনায় সারা দেশে ১৫৯টি মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১০২টি মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। তাতে ৩৩৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। তাঁদের মধ্যে জেএমবির প্রতিষ্ঠাতা শায়খ আবদুর রহমানসহ প্রতিষ্ঠাকালীন ১৫ জন নেতার ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। এসব মামলায় খালাস পেয়েছেন ৩৫৮ জন। সর্বশেষ চারটি মামলার রায় হয় গত ফেব্রুয়ারিতে। তাতে ১৭ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। খালাস পান একজন। আসামিদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় পুলিশ ইতিপূর্বে ১৬টি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে।

 

এখনো বিচারাধীন আছে ৪১টি মামলা। এর মধ্যে ঢাকার আদালতে রয়েছে পাঁচটি মামলা। বিচার শেষ হতে বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবু সাংবাদিকদের বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেক দিন আদালত বন্ধ ছিল। এখন আদালত খুলছে। তবে সাক্ষীর আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেন না। বারবার সমন দিয়েও কাজ হচ্ছে না। তিনি বলেন, ইতিপূর্বে অবশ্য অনেকের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এখন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্য নিয়ে বিচারকাজ দ্রুত শেষ করা হবে।

 

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ১৭ আগস্টের বোমা হামলার ঘটনায় র‍্যাবপুলিশ এ পর্যন্ত ৯৬১ আসামিকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ১৩৩ জন।