ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪ |

EN

ডাকাতিয়ার রায়পুর শহর অংশ

কচুরিপানা সরানো শুরু, নেই প্রাণ ফেরানোর উদ্যোগ

জিহাদ হোসেন রাহাত, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি | আপডেট: বৃহস্পতিবার, জুলাই ১১, ২০২৪

কচুরিপানা সরানো শুরু, নেই প্রাণ ফেরানোর উদ্যোগ
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভা অংশে দখল আর দূষণে অবরুদ্ধ হয়ে অনেকটাই অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে একসময়ের পমত্তা ডাকাতিয়া নদী। নদীর বুকে ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, ময়লা-আবর্জনায় পানিদূষণের কারণে হয়েছে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি। সম্প্রতি রায়পুর পৌরসভা এই পরিস্থিতি লাঘব করতে ডাকাতিয়ার কচুরিপানা পরিষ্কার করতে নামে। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানায়, ময়লা-আবর্জনা জমার কারণে নদীর পানি হয়ে পড়েছে দুর্গন্ধযুক্ত। প্লাস্টিকসহ অন্যসব ময়লা সরিয়ে নদীর এই অংশটিকে ব্যবহার উপযোগী করা হবে। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার এ কার্যক্রম চলবে প্রায় এক মাসব্যাপী। পৌরসভার ওয়াপদা ভবন এলাকা থেকে কচুরিপানা পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুরে প্রধান অতিথি হিসেবে কার্যক্রমটির উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন। আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, অতীতে কোনো মেয়র ডাকাতিয়া নদী পরিস্কারের জন্য এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। এই উদ্যোগটি যেন সফল হয়। 

তবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ব্যানারে ডাকাতিয়াকে মরা নদী বলে উল্লেখ করে ডাকাতিয়ার কচুরিপানা পরিষ্কার করার জন্য কাজ চালানো ছাড়া নদীটির প্রাণ ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে যথাযথ কোনো বক্তব্য দেয়নি কর্তৃপক্ষ। প্রাণ ফেরাতে নেয়া হয়নি দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ। পৌরসভার ওয়াপদা অংশের খানিক দুরত্বে ডাকাতিয়ার বুকে একটি বাঁধ রয়েছে। বাঁধটির কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নদীটির পানি প্রবাহ। 

অবশ্য ঐ বাঁধের কারণে পানির প্রবাহ অবরুদ্ধ হয়ে রায়পুর শহর এলাকায় বন্ধ হয়ে গেছে সব ধরনের নৌ-চলাচল। একসময় জেলার রায়পুর শহরের সাথে দেশের প্রধান প্রধান নদী বন্দরগুলোর নৌ যোগাযোগ থাকলেও এখন নেই একেবারেই। রায়পুরের হাজিমারা সুইচ গেইট সংলগ্ন এলাকা, চরবংশী ও গুটি কয়েক এলাকা ছাড়া বাকি সব স্থানেও প্রবাহে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে আছে নদীটি। এতে সুবিধাবঞ্চিত হয়ে বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন এ অঞ্চলের লাখো মানুষ। নদীটি খননের পাশাপাশি পৌর শহরের বাঁধটি ভেঙে স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে দেয়া হলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি নদীকেন্দ্রিক লাখো মানুষের জীবনযাত্রা সহজ হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন এখানকার পরিবেশবাদীরা। 

অভিযান শুরুর দিন বিকেলে ডাকাতিয়া পাড়ের বাসিন্দা মকবুল হোসেন বলেন, কচুরিপানা পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। পরিস্কার করার পাশাপাশি ডাকাতিয়ার বাঁধটি ভেঙে দিলে ভালো হতো। পানি প্রবাহ ঠিক থাকতো। নদীটিও প্রাণ ফিরে পেতো।

রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল জানান, মানুষের ভোগান্তি কমাতে এই  উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। মশার উপদ্রব, ময়লা-আবর্জনা ও প্লাস্টিক দুষণ রোধে আপাতত মাসব্যাপী চলবে এই কার্যক্রম। ৮০'র দশকে গড়ে ওঠা বাঁধটি অপসারণের বিষয়ে বর্তমান স্থানীয় সংসদ সদস্যকে বেশ কয়েকবার বলা হয়েছে প্রয়োজনে আবারো অনুরোধ করবেন বলেও জানান তিনি।

নদী পাড়ের বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে যোগ দেন, রায়পুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যন মামুনুর রশীদ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী জামসেদ কবির, রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ ইয়াছিন ফারুক মজুমদারসহ অনেকে।