ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, অক্টোবর ১৮, ২০২৪ |

EN

দণ্ডিত দুই নারী সাংবাদিক কারামুক্ত

মাহসা আমিনির মৃত্যুর খবর প্রচার


বিশ্ব বাংলা ডেস্ক | আপডেট: মঙ্গলবার, জানুয়ারী ১৬, ২০২৪

দণ্ডিত দুই নারী সাংবাদিক কারামুক্ত

মুক্তিপ্রাপ্ত দুই সাংবাদিক নিলুফার হামেদি ও এলাহেহ মোহাম্মাদী ছবি: এএফপি

কারাগারে পুলিশ হেফাজতে ইরানের কুর্দি নারী মাহসা আমিনির মৃত্যুর সংবাদ প্রচার করে এক বছরেরও বেশি সাজা ভোগের পর মুক্তি পেয়েছেন দুই নারী সাংবাদিক। 

ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, সাংবাদিক নিলুফার হামেদি (৩১) ও এলাহেহ মোহাম্মাদীকে (৩৬) জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  

বিবিসির এক প্রতিবেদনে খবরটি প্রচার করা হয়।

প্রতিবেদনে দুই নারী সাংবাদিক নিজেদের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। আপিলের বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তারা জামিনে মুক্ত থাকবেন।

সঠিকভাবে হিজাব না পরায় মাহসা আমিনিকে কারাগারে ধরে নিয়ে গিয়েছিল ইরানের নৈতিকতা পুলিশ। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে পোশাকের কঠোর বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের অভিযোগে পুলিশি হেফাজতে বন্দি অবস্থায় গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তার মৃত্যুতে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে ইরানে। বেশ কয়েকটি দেশেও পুলিশি হেফাজতে তার মৃত্যুর ব্যাপারে রাস্তায় নেমে আসেন বহু বিক্ষোভকারী।

পূর্বের শারীরিক অসুস্থতার কারণে মাহসা আমিনির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে ইরান কর্তৃপক্ষ। 

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, নৈতিক পুলিশের নির্যাতনে মারা গেছেন সেই কুর্দি নারী।

ইরানের সংস্কারপন্থি পত্রিকা শার্ঘের হয়ে কাজ করা নিলুফার হামেদিই প্রথম মাহসা আমিনির মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেন। 

আমিনির মৃত্যুর খবর পেয়ে তার বাবা ও দাদি যখন পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলেন, তখন সেই ছবি ধারণ করেন নিলুফার। 

পরে সামাজিক প্ল্যাটফর্মে এই ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে তিনি লেখেন- ‘শোকের কালো পোশাক আমাদের জাতীয় পতাকায় পরিণত হয়েছে।’

আরেকটি সংস্কারবাদী পত্রিকা হাম-মিহানের হয়ে কাজ করেন এলাহেহ মোহাম্মদী। মাহসা আমিনির নিজ শহর সাক্কেজে তার দাফনের বর্ণনা দিয়ে এলাহেহ লিখেছিলেন, কিভাবে সেখানে শত শত শোকার্তরা ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ বলে চিৎকার করছিল।

মাহসা আমিনির দাফনের পরেই শুরু হয় প্রথম বিক্ষোভ। এই অস্থিরতা দ্রুত দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। নারীদের স্বাধীনতার দাবি থেকে এই বিক্ষোভ চলে যায় সরকার উৎখাতের আন্দোলনে। 

নারীদের মাথায় স্কার্ফ চাপিয়ে দেওয়া এবং তেহরানের মুসলিম ধর্মগুরুর নেতৃত্বাধীন সরকারের অবসান চেয়ে গড়ে উঠেছিল এ আন্দোলন।

শত শত আন্দোলনকারীকে হত্যা এবং কয়েক ডজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে এ বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী।

বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পরপরই দুই নারী সাংবাদিককে গ্রেফতার করে ইরান কর্তৃপক্ষ। তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে যোগসাজশ এবং জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগও আনা হয়। নিলুফার হামেদি ও এলাহেহ মোহাম্মাদীর যথাক্রমে ১৩ ও ১২ বছর করে কারাদণ্ড হয়।

সামাজিক প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায়, জামিনে মুক্তির পর পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের সঙ্গে আলিঙ্গন করছেন এই দুই সাংবাদিক।