ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, জুলাই ২৭, ২০২৪ |

EN

বাহুবলে কথিত সাংবাদিক পরিচয়কারী নিছফার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি | আপডেট: সোমবার, নভেম্বর ২০, ২০২৩

বাহুবলে কথিত সাংবাদিক পরিচয়কারী নিছফার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
বাহুবলে সাংবাদিক পরিচয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে মোছাঃ নিছফা আক্তার নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। কথিত ওই সাংবাদিক বিভিন্ন পত্রিকার ভুয়া আইডি কার্ড ব্যবহার করে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করেন এমন অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজেকে ' আমাদের মাতৃভূমি’ নামে একটি পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন।

এ ঘটনায় ইতোমধ্যে মোছাঃ জেসমিন আক্তার নামে এক ভুক্তভোগী বাহুবল উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাহুবল উপজেলার  স্নানঘাট ইউনিয়নের স্বস্তিপুর গ্রামের  আব্দুল আহাদের স্ত্রী মোছাঃ জেসমিন আক্তার  তার নতুন বাড়ী নির্মাণ করে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটির জন্য বিদ্যুৎ পেয়ে ছিলনা। বৈদ্যুতিক খুঁটি কিভাবে পাওয়া যায় এই বিষয়ে বিভিন্ন মানুষের সাথে আলোচনার সুবাধে সাংবাদিক পরিচয়কারী নিছপা আক্তার তাকে বলে আমি বিদ্যুতের খুঁটি এনে দিতে পারব তবে টাকা লাগবে। সে তাকে বিশ্বাস করেছিল না। তাকে বিশ্বাস না করাতে সে বড় সাংবাদিক পরিচয় দেয়। তার সাংবাদিকতার কয়েকটি কার্ডও মোছাঃ জেসমিন আক্তারকে দেখায়। তবুও জেসমিন আক্তার বিশ্বাস না করাতে সে কয়েকজন লোক নিয়ে জেসমিনের বাড়ীতে মোটরসাইকেল দিয়ে হাজির হয় এবং বলে এরাই হলো পল্লী বিদ্যুতের লোক। খুঁটি পেতে হলে টাকা লাগবে ৩০,০০০/- টাকা। টাকা দিলেই এক সপ্তাহের ভিতরেই তোমার খুঁটি বাড়ীতে চলে আসবে। সাংবাদিক পরিচয়কারী নিছফা আক্তারের কথায় জেসমিন আক্তার সরল মনে নগদ ৩০,০০০/- টাকা স্বাক্ষীগণের সামনে সাংবাদিক পরিচয়কারী নিছফা আক্তারের হাতে দেয়। টাকা নেয়ার পর নিছফা আক্তার ভুক্তভোগী জেসমিনের সাথে আর কোন যোগাযোগ করে না। 

জেসমিন আক্তার যোগাযোগ করতে চাইলেও সে তাকে পাত্তা দেয় না। এভাবে ২ বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী জেসমিন আক্তার বাহুবল পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করলে জানতে পারে যে, খুঁটি পেতে কোন টাকা লাগে না। সাংবাদিক পরিচয়কারী নিছফা আক্তার ভুক্তভোগী জেসমিনের কাছে সরকারি ফি ও বিভিন্ন খরচাদি বলে ৩০,০০০/- টাকা নিয়েছে। 

পরবর্তীতে ভুক্তভোগী জেসমিন আক্তার অপারগ হয়ে সাংবাদিক পরিচয়কারী নিছফা আক্তারের ময় - মুরুব্বীদের বিষয়টি অবগত করেন। মুরুব্বীগণের মাধ্যমে সালিশ বিচারে ভুক্তভোগী জেসমিনের ৩০,০০০/- টাকা দেয়ার দিন ধার্য্য করে দেন। কিন্তু নিছফা আক্তার কোন টাকা দেয় নাই। পরবর্তীতে মুরুব্বীয়ানগণ অপারগ হয়ে ভুক্তভোগী জেসমিনকে আইনের আশ্রয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দেন।

 ভুক্তভোগী জেসমিন আক্তার বলেন, আমি গরিব অসহায় মহিলা। আমার স্বামী দিনমজুরের কাজ করিয়া কোন পরিবারের ভরণপোষণ করেন। বিবাদী আমাকে সরকারি ফি লাগবে বলে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আমার কাছ থেকে। ৩০,০০০/- টাকা আত্মসাৎ করেছে। বিবাদী উশৃঙ্খল, দাঙ্গাবাজ, বেপরোয়া হওয়াতে সালিশ বিচার মানে না। এমতাবস্থায়, সঠিক বিচার পাওয়ার জন্য বাহুবল উপজেলা নিবার্হী অফিসারের দ্বারস্থ হইলাম।

দেশের বহুল প্রচারিত কয়েকটি মিডিয়ার বাহুবলের সিনিয়র সাংবাদিকরা জানান, মোছাঃ নিছফা আক্তার আমাদের ক্লাবের কোন সদস্য না। সাংবাদিকতার মতো একটি মহান পেশাকে তারা কলুষিত করে সাংবাদিকদের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে চাঁদাবাজি করাই এদের কাজ। অভিযোগ পেয়েছি এদের বিরুদ্ধে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এছাড়া বাহুবল উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকতার নামে চাঁদাবাজি এবং নানা ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন ভুয়া কার্ডধারী এই সাংবাদিক। এ ধরনের ভুঁইফোঁড় কথিত সাংবাদিক বিভিন্ন এলাকায় বাসাবাড়ি, মিলকারখানা, বেকারিসহ নানা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার কিংবা ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছে। এছাড়া রাজনৈতিক সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বুম হাতে অথবা আইডি কার্ড ঝুলিয়ে তারা উপস্থিত হয়। নিজেকে সাংবাদিক হিসাবে জাহির করতে তারা নানা অঙ্গভঙ্গি করে। অনুষ্ঠান শেষে রাজনৈতিক নেতা অথবা আয়োজকদের পেছনে ছোটে মৌমাছির ঝাঁকের মতো।  অপকর্মে জড়িতদের দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী-এমন প্রত্যাশা মূলধারার সাংবাদিকদের।

এ ব্যাপারে বাহুবল উপজেলা নিবার্হী অফিসার মহুয়া শারমিন ফাতেমা বলেন, অ়ভিযোগ পেয়েছি নোটিশ করা হয়েছি কিনা আমার সঠিক মনে পরছেনা। কারণ আমরা সিরিয়াল ভাবে অভিযোগ গুলো দেখি।

অভিযোগের বিষয়ে মোছাঃ নিছফা আক্তারের বক্তব্য জানতে তার ব্যক্তিগত মোবাইলে একাধিবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।