ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪ |

EN

গাজায় অন্তর্বর্তী সরকারের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল

বিশ্ব বাংলা ডেস্ক | আপডেট: রবিবার, অক্টোবর ২২, ২০২৩

গাজায় অন্তর্বর্তী সরকারের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামাসকে বাদ দিয়ে জাতিসংঘ ও আরব দেশ সমর্থিত একটি অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল। দেশ দুটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে শনিবার এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ। দুদিন আগেই অবশ্য ইসরাইলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার ল্যাপিড বলেছিলেন, গাজায় আর হামাস থাকতে পারবে না। হামাস নির্মূল করে ফিলিস্তিন অথরিটির হাতে তুলে দেওয়া হবে গাজার শাসন। এরপরই এ বক্তব্য এলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে।

কর্মকর্তারা বলছেন, আলোচনাটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং মূলত ইসরাইলের সম্ভাব্য স্থল আক্রমণ কতটা সফল হয় তার ওপর নির্ভর করছে এটি। তবে এই পরিকল্পনা কার্যকর করতে হামাসকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে এবং আঞ্চলিক আরব রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন প্রয়োজন হবে, যা আদায় করা এমন পরিস্থিতিতে অনিশ্চিত ও সময়সাপেক্ষ বলে মনে করা হচ্ছে।

আরব দেশগুলোকে এই পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সিআইএর সাবেক এক বিশ্লেষক বলেছেন, ‘আরব রাষ্ট্রগুলো যেভাবে একে অপরের সঙ্গে কাজ করে এবং ঝুঁকি গ্রহণ করে; সেই প্রক্রিয়ায় একটি বড় পরিবর্তন প্রয়োজন হবে। পাশাপাশি ইসরাইলের পক্ষ থেকেও বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে যা এই মুহূর্তে খুব কমই রয়েছে।’

ইসরাইলি কর্মকর্তারা গাজা উপত্যকায় স্থল অভিযান চালানোর কথা বললেও বারবার গাজা দখলের বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছেন। কিন্তু তারা এটাও বলেছেন, ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গোষ্ঠীটির শাসন ‘অগ্রহণযোগ্য’। হামাসের ওই হামলায় ৩ শতাধিত সেনাসহ ইসরাইলের ১৪০০ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন।

অন্যদিকে হামাসের হামলার পর থেকে গোষ্ঠীটির নিয়ন্ত্রণে থাকা গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। এতে এখন পর্র্যন্ত ৪ হাজার ১৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ১৩ হাজার।

বিমান হামলার মধ্যেই গাজায় স্থল অভিযান চালানোর জন্য সীমান্তে বিপুল সেনা ও যুদ্ধ সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে ইসরাইল। তবে ব্লুমবার্গের মতে, মার্কিন কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। 

এর কারণ হামাসকে উৎখাত করার বাইরে কোনো স্পষ্ট উদ্দেশ্য ছাড়াই ইসরাইলের গাজা আক্রমণের ফলে এই সংঘাত একটি আঞ্চলিক যুদ্ধে পরিণত হতে পারে। এক্ষেত্রে তারা মানবিক সংকটের বিষয়টি মাথায় রেখেই ইসরাইলকে সমর্থনে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে।

ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে হামাসের উত্থান ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাতের দল ফাতাহ-এর সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যদিয়ে। ১৯৯০ দশকে একটি আধাসামরিক সংস্থা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয় ফাতাহ।

এরপর দলটি সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলন ছেড়ে দেয় এবং ইসরাইলের সঙ্গে ১৯৬৯ সালের সীমানা অনুযায়ী একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে রাজি হয়।

২০০৪ সালের ১১ নভেম্বর ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যুর পর ফিলিস্তিনে নেতৃত্বে শূন্যতার সৃষ্টি হয়, শক্তিশালী হয়ে ওঠে হামাস। ২০০৬ সালে ফিলিস্তিনে (গাজা ও পশ্চিম তীরে) এক নির্বাচনে জয়ী হয় হামাস। তবে নির্বাচনে বেশি আসন পেয়েও ক্ষমতা পায়নি তারা। উল্টো ফাতাহ ও পশ্চিমারা হামাসকে পশ্চিম তীর থেকে সরিয়ে দেয়।

ফলে দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। যার মধ্যদিয়ে ২০০৭ সালে গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয় হামাস। এরপর থেকে তারাই ভূমধ্যসাগর পাড়ের ছোট্ট ভূখণ্ডটি শাসন করছে।