ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, জুলাই ২৭, ২০২৪ |

EN

প্রশাসনের নজর এড়িয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন চলছেই

শিশির খাঁন, সদরপুর-চরভদ্রাসন প্রতিনিধি | আপডেট: বুধবার, এপ্রিল ১২, ২০২৩

প্রশাসনের নজর এড়িয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন চলছেই
প্রশাসনের নজর এড়িয়ে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন। উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন আকোটের চর, চর বিষ্ণুপুর ও কৃষ্ণপুরে ২৪ টি ড্রেজার মেশিন বসানো হলেও চোখে পড়ছে না প্রশাসনের। এগুলো পদ্মার চরে, পদ্মার সংযোগ খালে, সরকারি খাল ও ভুবনেশ্বর নদীতে বসানো হয়েছে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার চর বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর ব্রিজের নিচ দিয়ে চলে গেছে শ্যামপুর খাল। এ খালের ব্রিজের প্রায় ৩০০ গজ দূরে রয়েছে এক ইউপি সদস্যের ড্রেজার। তার নাম শহিদুল ইসলাম(শহিদ)। তার একটু দূরেই দেখা যায় জুলহাসের ড্রেজার। এছাড়া ইউনিয়নের জরিপের ডাঙ্গি এলাকায় রয়েছে দুইটি ড্রেজার মেশিন। তার একটি জরিপের ডাঙ্গি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন ফসলি ক্ষেতের মধ্যে রয়েছে। কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ভুবনেশ্বর নদের রয়েছে দুটি ড্রেজার। একটি হলো খেজুর তলাতে। তবে অন্যটি দরী কৃষ্ণপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে বালু সরবরাহ চলেছে ইউএনওর নির্দেশে। সরকার তার প্রয়োজনে জনগণের অসুবিধা না করে ড্রেজার দিয়ে বালু কাটতে পারে।



কিন্ত প্রশাসন বলছে, ড্রেজারগুলো রাতের আধারে বালু কাটে, দিনের বেলায় গিয়ে তাদের পাওয়া যায়না, তাহলে আমরা কী করবো? আমাদের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এছাড়া আকোটেরচর বাজারের পিয়াজখালী এলাকায় একটি ও এর খানিকটা দূরেই রয়েছে আর একটি ড্রেজার। কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ইউসুফ ব্যাপারীর পুকুরে রয়েছে একটি ড্রেজার। কৃষ্ণপুর থেকে নতুন বাজারে যাওয়ার রাস্তাসংলগ্ন পুকুর এটি। 

এদিকে আকোটের চর বাজারে কাছে পদ্মার একটি সংযোগ খাল বয়ে গেছে। সেই খালে দেখা যায় পর পর তিনটি ড্রেজার মেশিন বসানো হয়েছে। আকোটের চর বাজারে ঠিক পেছনেই রয়েছে কাজলের ড্রেজার। ওই খালেই রয়েছে আরও গণেশের একটি ড্রেজার।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে ড্রেজার ব্যবসায়। প্রায় ৩ মাস ধরে চলছে ড্রেজার। কয়েকদিন পর পর এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরানো হয় ড্রেজার। কেউ কিছু বলে না।

চর বিষ্ণুপুর ইউনয়িনের এক ইউপি সদস্য নাম প্রকাশে না করার শর্তে বলেন, সবার সামনে দিয়েই তারা এই খাল থেকে বালু কাটে। প্রায় ৩ মাস ধরে বালু কাটছে। সবাই দেখে, কিন্তু প্রশাসন দেখে না, তাহলে কি প্রশাসন অন্ধ? আমি একজন ইউপি সদস্য হিসেবে আমি বিষয়টি জানতে চাই।

ড্রেজার মালিক ইউপি সদস্য শহিদ বলেন, শ্যামপুর খালে আমার ড্রেজার চলতো, এখন বন্ধ আছে। তবে পাশের জুলহাস মিয়ার ড্রেজার চলছে।



এদিকে ড্রেজার মালিক গণেশ ও কাজলের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক সাংবাদিক বলেন, প্রশাসন উপজেলার সব সাংবাদিককে ড্রেজারসহ সব অনিয়মের বিরুদ্ধে নিউজ না করতে জানুয়ারি মাসে একটি বিশেষ খাম দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকি। অনেক সময় কাউকে পাই না। আমরা দিনের বেলা অভিযান পরিচালনা করলে রাতে তারা ড্রেজার মেশিন চালায়। আপনাদের ম্যানেজ করেই ড্রেজার মালিকেরা ব্যবসায় পরিচালনা করছেন, এমন প্রশ্নে ইউএনও বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। কয়েকদিন আগেও তিনজন ড্রেজার মালিককে ১০ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছি। এমন অভিযোগ যারা দিয়েছে তাদের আমাদের মুখোমুখি করতে বলেন। কেউ হয়তো আপনাকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছে।